চুয়াডাঙ্গার গড়াইটুপিতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় পিলু গ্রেফতার

অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন ও রেজুলেশন করে অভিযোগ দায়ের
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার গড়াইটুপি ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজুর বাড়িতে হামলা মামলার প্রধান আসামি আরিফুজ্জামান পিলুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের বাগানপাড়া থেকে তাকে তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত পিলুকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। প্রধান আসামি গ্রেফতার হওয়ায় বাকিরা দিয়েছে গা ঢাকা। অপরদিকে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে পরিষদের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট রেজুলেশন করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার দু’দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাইদুর রহমান ছাবদারের ছেলে গড়াইটুপি ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজুর বাড়ি এবং পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় স্থানীয় সংঘবদ্ধ দুস্কৃতকারীরা। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের ভাই সিদ্দিকুর রহমান নজু রাতেই বাদি হয়ে খাড়াগোদা গ্রামের তোজাম্মেল হক চেনার ছেলে আরিফুজ্জামান পিলু (৩২) ও রাতুল হাসান (৩৫), বিল্লাল হোসেনের ছেলে বিপ্লব হোসেন (২০), আনিচ উদ্দিনের ছেলে মানোয়ার হোসেন (২৫), গোলজার হোসেনের ছেলে রুবেল হোসেন (২৫) ও রবিউল ইসলামের ছেলে মাহাবুলের (২৬) নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে রাতেই দর্শনা থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজলের নির্দেশে তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই শেখ রকিবুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ভোর ৪টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়ায় অভিযান চালান। অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারনামীয় ১নং আসামি আরিফুজ্জামান পিলুকে গ্রেফতার করেন। পিলু গড়াইটুপি ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক বলে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চাঁন জানান। গ্রেফতারকৃত পিলুকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অপরদিকে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে পরিষদের পক্ষে অভিযুুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পিলু ও হাসানের নিকট এলাকার সম্মানিত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় লাঞ্ছিত হচ্ছে। একের পর অপরাধমূলক কর্মকা- করে এলেও তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাদের পিতা একজন সামান্য মুরগি ব্যবসায়ী হলেও তারা দু’ভাই হ্যাকার গ্রুপের সদস্য। তাদের বাবা সাহায্যের জন্য পরিষদের নিকট ধরনা দিলেও ছেলেরা কালো রঙের প্রাইভেটে ঘুরে বেড়ান। গভীর রাতে রঙবেরঙের গাড়ি এসে ভিড় জমায়। কারো সামান্য ফাঁকফোকর খুঁজে বের করে মারপিট ও হুমকি-ধামকি দিয়ে থাকে এবং অর্থ হাতিয়ে নেয়। তাদের এ কর্মকা-র ব্যাপারে প্রশাসনের অনেকেই জানে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার আমার বাড়ি ও পরিষদ কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। আমার সাথে তাদের ব্যাক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই। আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছিলো তারা। তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করে বাকি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার নূরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা মানে মুক্তিযোদ্ধার চেতনার ওপর হামলা। জঘন্যতম এ হামলার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে অভিযুক্তদের গ্রেফতারেরও দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিক সম্মেলনের পূর্বে পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে রেজুলেশন করে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ পেশ করা হয়।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More