চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ি বাজারে বিসিআইসি দু’জন সার ডিলার : ভোগান্তিতে বেগমপুর ইউনিয়নের কৃষকেরা

স্টাফ রিপোর্টার : সার ডিলার কিংবা ব্যবসায়ী একটি সি-িকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। ফলে তারা অনেকটাই তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সার আমদানি এবং বিক্রি করে থাকেন। তেমনি বেগমপুর ইউনিয়নের নির্ধারিত সারের ডিলার নেহালপুর ইউনিয়নের মধ্যে গড়ে তুলেছেন সার বিক্রির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যার কারণে একই বাজারে গড়ে উঠেছে বিসিআইসি’র দু’টি সার বিক্রয় কেন্দ্র। বেগমপুর ইউনিয়নের নির্ধারিত ডিলারের সার বিক্রির প্রতিষ্ঠানটি ইউনিয়নের মধ্যে না হওয়ায় সময় এবং অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিয়ে সার কিনতে অনিহা রয়েছে কৃষকদের। তাই ইউনিয়নের মধ্যবর্তী কোনো জায়গায় ডিলারের সার বিক্রির ব্যবস্থা রাখার দাবি জানিয়েছে ভুক্তোভোগী চাষিকূল।

অভিযোগে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পূর্ব থেকে বিসিআইসি সার ডিলার নিয়োগ রয়েছে। ২০১৫ সালে বেগমপুর ইউনিয়ন বিভক্ত হয়ে নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের সৃষ্টি হলে নতুন করে নেহালপুর ইউনিয়নে সার ডিলার নিয়োগ দেবার উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগে। নীতিমালা মেনে নেহালপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি’র সার ডিলার নিয়োগ পায় বিবিএস এগ্রো। যার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ইউনিয়নের মধ্যবর্তী হিজলগাড়ি বাজারে অবস্থিত। পূর্ব থেকে বেগমপুর ইউনিয়নের ডিলারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিজলগাড়ি বাজারে অবস্থিত ছিলো। বেগমপুর ইউনিয়ন বিভক্ত প্রায় ৪ বছর অতিবাহিত হলেও বিসিআইসির ডিলার মেসার্স আকবার আলী তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেগমপুর ইউনিয়নে স্থানান্তরিত না করে হিজলগাড়ি বাজারেই রেখে দিয়েছেন। এতে বেগমপুর ইউনিয়নের কৃষকেরা অতিরিক্ত ভাড়া এবং ভোগান্তির কারণে হিজলগাড়ি বাজারে সার কিনতে অনিহা প্রকাশ করছেন। যদিও ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া ও বেগমপুরে দু’টি নন ইউরিয়া বিএডিসি’র সার ডিলার রয়েছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিলাররা তারা তাদের সার কৃষদের কাছে বিক্রির চাইতে গ্রাম অঞ্চলের সাধারণ দোকানদার, সার কীটনাশক ব্যবসায়ী এমনকি মুদি দোকানীদের নিকট পাইকারি বিক্রি করে থাকে। অনুমোদিত সার বিক্রেতারা দোকানে মূল্য তালিকা না টানিয়ে দেদারছে সার বিক্রি করে যাচ্ছে। আবার কৃষকেরা কীটনাশক ও সার বাকিতে কেনার কারণে বাজার যাচাই করার সুযোগ তাদের থাকে না। বেগমপুর, ঝাঝরি, যদুপুর, পারঘাটা, ফুরশেদপুর, হরিশপুর, উজলপুর, আকন্দবাড়িয়া, রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানালেন, এতো দূর-দুরান্ত থেকে অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিয়ে হিজলগাড়ি বাজারে সার আনতে গেলে এতে করে এদিকে যেমন সময় বেশি লাগবে অন্যদিকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবে। সেই লাভের গুড় পিঁপড়ায় খাওয়ার মতো। হাতের কাছে বিভিন্ন দোকানে সার পাচ্ছি দাম একটু বেশি কম হলে কি আর করার। কারণ ডিলাররা কৃষকের কাছে খুচরা বিক্রির চাইতে দোকানীদের কাছে বিক্রি করতে বেশি আগ্রহী। পাইকারী দোকানদাররা ডিলারদের নিকট থেকে কিনে এনেই তো লাভ করে। সেক্ষেত্রে সরকারি নির্ধারিত মূল্য আর থাকে না। বেগমপুর ইউনিয়নের ডিলারের সার বিক্রির দোকানটা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী কোনো জায়গায় হলে ভালো হতো বলে চাষিকূল মনে করছে।

এ ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক জেলা বিএফএ ও বেগমপুর ইউনিয়ন বিসিআইসি সার ডিলার হাজি আকবর আলী বলেন, ইউনিয়ন ভাগ হবার আগে থেকেই বেগমপুর ইউনিয়নের ডিলার হিসেবে হিজলগাড়ি বাজারে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। সেভাবেই চলে আসছে। বর্তমানে সারের কোনো সঙ্কট নেই। তাই যে কেউ যে কোনো দোকান থেকে সার কিনতে পারবে এতে কোনো সমস্যা নেই।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান বলেন, ইউনিয়নে বিক্রয় কেন্দ্র থাকতেই হবে। যখন জানতে চাওয়া হয় তখন ডিলাররা বলেন, আমাদের সার বিক্রির দোকান ইউনিয়নে আছে। ডিলাররা মিটিং-এ নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও এলে তারা তা পালন করতে চাই না। অভিযোগের কারণে অনেক সুপারিশ করে রেজুলেশনও করা হয়ে থাকে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, নীতিমালা না মেনে সার ব্যবসা করার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ ব্যতয় ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বেগমপুরের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে, আর কৃষকেরা যাতে সুবিধামতো ডিলারের নিকট থেকে সার কিনতে পারে তার ব্যবস্থা করা হবে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More