চুয়াডাঙ্গায় ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে ছেলুন জোয়ার্দ্দার এমপি

ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতেই গড়ে তোলা হয় এ প্রতিষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার: ‘শিক্ষা বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথার বাস্তবরূপ দিতে ও চুয়াডাঙ্গাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যুবকদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতেই ২০১২ সালে স্থাপন করা হয়েছিলো এ প্রতিষ্ঠানটি। উপরোক্ত মন্তব্য করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও বাঙালির জাতীয় সত্বার সাথে মিশে থাকা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে স্মরণ করতে হলে সবার আগে যেমন চুয়াডাঙ্গার নামটি চলে আসে, তেমনি বাংলাদেশের প্রথম রাজধানীর নামকরণকে আরও স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, চুয়াডাঙ্গা। নানা চড়াই উৎরায় পেরিয়ে দেড় কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে প্রতিষ্ঠাকালীন কিছু উদীয়মান শিক্ষিত যুবকদের সাথে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বরাবর চুয়াডাঙ্গায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের আবেদন করা হয়। ১১৪টি আবেদনের মধ্য থেকে যে ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া হয়; তার মধ্যে অন্যতম হলো ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, চুয়াডাঙ্গা। প্রধানমন্ত্রীর নিকট এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন ও গুরুত্ব সবিনয়ে জানানোর পর ২০১২ সালের ১৪ মার্চ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়া হয়। সেই অবস্থা থেকে এখন পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানে দেড় হাজরের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। বিশ্বব্যিালয়ের আয় ও আমার ব্যক্তিগত তহবিল দিয়ে প্রায় ৫৪ বিঘা জমি ক্রয় করা হয়েছে। এ জমিতেই আজ ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, চুয়াডাঙ্গার স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হলো। আজ ভাবতে খুব ভালো লাগছে। একদিকে এ এলাকার শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণের দ্বার উন্মোচিত হলো, তেমনি শিক্ষা বান্ধব প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে সেটিরও সফল বাস্তবায়ন হলো।
অনুষ্ঠানে অন্যমত বিশেষ অতিথি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার তার যুগোপযোগী প্রাণবন্তু ও শিক্ষনীয় বক্তব্যে বলেন, এ জেলায় যোগদান করার পর জানতাম আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন স্যার একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। কিন্তু তিনি যে একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি সেটিও আজ জানতে পেলাম। রাজনীতির পাশাপাশি এলাকার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণে তিনি যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন; তা যুগযুগ ধরে আলো ছড়াবে। খোলামেলা বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, আমি বর্তমানে পুলিশ হলেও শিক্ষকতা পেশার সাথে আমার জন্ম-জন্মাতরের সক্ষতা রয়েছে। যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমোতি দেন তাহলে মাঝে মাঝে আমি বিনাপারিশ্রমিকে ক্লাস নেবো। তিনি কন্যা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, কোরআন হাদিসের নিদের্শনা অনুযায়ী কন্যা শিশু বোঝা নয় আর্শীবাদ। তাই এদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কন্যা সন্তান জন্ম নিলেই তাদের জন্য দেয়া হচ্ছে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার। পরবর্তীতে ডাটা বেজ করে তাদের জন্মদিনে যাতে তাদের বাড়িতে গিফ্ট পৌঁছিয়ে যায়; সে ব্যবস্থাও করা হবে। আমি এ জেলা থেকে বদলি হলেও এ কাজ অব্যাহত থাকবে। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি একটি পত্রিকার নিউজে দেখে ছিলাম কন্যাসন্তান জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে দেয়া হলো ডিভোর্স লেটার। সেই নিউজ দেখে আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম এ অসম্মানের হাত থেকে মুক্তি দিয়ে নারীদের সম্মান দেখানো ও ইভটিজিং ব্যাধির হাত থেকে কন্যাদের মুক্তি দেয়া যায় কি-না। সেই কনসেভ থেকেই আমার এই উদ্যোগ নেয়া।
উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মো. হযরত আলীর সভাপতিত্বে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার মানবিক ও শিক্ষানুরাগী পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, বিশ্বদ্যিালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. নাহিদ পারভেজ, পরিচালক অর্থ আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন হেলা। উদ্বোধনী আলোচনার শুরুতে অতিথিগণ স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি আরিফ বিল্লাহ ও মুফতি মাসুদউজ্জামান লিটু বিশ্বাস। সার্বিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কৃষি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী মামুনুর রশীদ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More