চুয়াডাঙ্গায় সারাদিন অসহনীয় ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধ্যারাতে মুষলধারে বৃষ্টি : কুষ্টিয়ায় পৃথক বজ্রপাতে দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে জনজীবনে বেশি। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আদ্রতা ৬৫ শতাংশ। করোনা আতঙ্কের মাঝে গরমে খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তবে রাত সোয়া ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির সময় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অপরদিকে কুষ্টিয়ায় গতকাল বিকেলে বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাতে কুমারখালীর পৃথক দুটি স্থানে দুজন নিহত হয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে জেলার উপর দিয়ে মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। দিনে সূর্যের প্রখরতা বেশি হওয়ায় গরম অনুভূত হচ্ছে। আর বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকায় দিনে ও রাতে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। কয়েক দিন মৃদু থেকে মাঝারি তাপদাহ অব্যাহত থাকবে পারে জেলায়। বৃষ্টি হলে বাতাসের আদ্রতা কমে আসবে। গরমের তীব্রতা থেকে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। সাধারণ মানুষ গরমের কারণে বাইরে কম বের হচ্ছে। তার ওপরে করোনা আতঙ্ক বিরাজ করতে। স্বাভাবিকভাবে চলাচলেও মানুষ একরকম অসহায়। খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কারণ স্বাভাবিক সময়ের মতো কাজ করতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত বেশি হচ্ছে। শরীর ঘেমে যাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল ইসলাম বলেন, তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত গরম কমবে না। মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এরপর মাঝারি তাপদাহ শুরু হতে পারে। এ পূর্বাভাসের মাঝে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে শীতল বাতাস বয়ে যেতে শুরু করে। মেঘ গুড়গুড় করতে থাকে। রাত সোয়া ৮টার দিকে শুরু হয় বৃৃষ্টি। বজ্রসহ বৃষ্টিপাত শুরুর প্রায় সাথে সাথেই জেলা শহরে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তেমন বাতাস ছাড়াই বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতি ফুটে ওঠায় অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করতে থাকেন। বিদ্যুত গ্রাহকদের দুর্ভোগ চরমে পৌছুয়। অবশেষে রাত ১০টার দিকে বিদ্যুত সরবরাহ চালু হয়। গতরাতে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদফতর ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। বৃষ্টির কারণে বেশকিছু স্থানে জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হয়েছে। তবে মাঠের ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। জেলায় মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষগুলো। কয়েক দিন বৃষ্টি না হওয়া আর প্রচন্ড রোদে কষ্ট পাচ্ছেন করোনাকে উপেক্ষা করে শহর, গ্রামে কাজের সন্ধানে বের হওয়া মানুষগুলো। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হওয়ায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। সামান্য স্বস্তি ও একটু শীতল পরিবেশের জন্য ছুটছে গাছের ছায়াতলে। এছাড়াও শরবতের দোকানে রয়েছে ভীড়। বেলা ১২ টায় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তবে বিকেলে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পৃৃথকস্থানে বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সময় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চর সাদিপুর ইউনিয়নের পদ্মার চর এলাকার হামিদুল ম-লের ছেলে রাখাল ফারুক ম-ল (৩০) এবং একই উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সদরপুর সর্দারপাড়ার ময়জুদ্দিন ম-লের ছেলে শফি ম-ল (৪৫)। সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন জানান, গরু চরাতে পদ্মার চরে যায় ফারুক। বেলা তিনটার দিকে আকাশে ঘনকালো মেঘ লাগে এবং বিদ্যুত চমকাতে থাকে। এক পর্যায়ে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এসময় ফারুক বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়া মাঠে ধান আনতে গিয়ে কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সদরপুর সর্দারপাড়ার ময়জুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে শফি মণ্ডল বজ্রপাতে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More