জমি দখল পেতে জীবননগরে প্রভাবশালীদের মুখোমুখি দরিদ্র পরিবার

বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগরে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে দরিদ্র পরিবারকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাদী পক্ষ বলছে এ জমি খাস জমি আর বিবাদী পক্ষ বলছে এ জমি তাদের মালিকানা জমি। ফলে জমি তুমি কার এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে এ ঘটেছে।

পুলিশ, স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এটা দীর্ঘদিনের ঘটনা, এটা নিয়ে কয়েক বছর যাবৎ মারামারি হয়েছে আবার বসাবসির মাধ্যমে সমাধানও হয়েছে তবে আজিজুল তা মানতে নারাজ। তিনি ওই জমিই দখল করে থাকতে চান। তার ১৬ শতক জায়গা, বর্তমান যেখানে বাস করে সেখান ১১শতক আর ৫ শতক রাস্তার ওই পাশে। তবে তার দাবি পুরোটাই তার নিজের। কিন্তু জমির প্রকৃত মালিক মৃত জাহার আলীর সন্তানেরা। এটা নিয়ে বছর দেড়েক আগে সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, থানা পুলিশ ও স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে যার যার জমি তার বুঝিয়ে দিলেও আজিজুল তা ছাড়তে নারাজ। গত বৃহস্পতিবার সকালে মৃত জাহের আলীর ছেলেরা তাদের জায়গায় বেড়া দিতে গেলে আজিজুলের স্ত্রী ও মেয়ে নিজেদের ঘর ভাংচুর করে ও জামা কাপড় ছিড়ে নিজেরাই থানা পুলিশ করে বেড়াচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক মো. আজিজুল ইসলামের সাথে একই গ্রামের মৃত জাহার আলী ছেলে সলেমান, মিজানুর রহমান, রেজাউল ও ফজলু সাথে জমি নিয়ে দু পক্ষের বিরোধ চলে আসছিলো। প্রতিপক্ষ পরিবারে লোকজন সরকারি চাকরিজীবী ও প্রভাবশালী হওয়ায় তারা বৃহস্পতিবার আনুমানিক সকাল ৯টার দিকে আজিজুল বাড়ি না থাকায় তার স্ত্রী, মেয়ে ও স্কুলপড়ুয়া নাতনিকে ভয়ভীতি ও মারপিট করে বসতবাড়ী ভিটা থেকে উচ্ছেদ করেছে প্রভাবশালীরা।

ভূমির মালিক দাবিদার ভ্যান চালক আজিজুলের মেয়ে রিনা খাতুন বলেন, বৃটিশ আমল থেকে আমার বাপ দাদার এ জমিতে বাস করে আসছে, এটা সিএস. আরএস রেকর্ড আমাদের নামের পাশের জমিটা খাস সেখানে গর্ত ছিলো আর সেখানেই আমি ঘর করে দীর্ঘদিন যাবৎ আমার স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে থাকি। ২০২০ সালে হটাৎ করে আমার বাড়ি ঘর ভেঙে দেয় তাও আমরা দখল ছাড়িনি।

সলেমান ও তার পরিবারের ৩৬জন আমার মা মেয়ে ও আমাকে ঘরে মধ্যে আটকিয়ে গাছপালা কেটে ঘর বাড়ি ভেঙে সব নিয়ে গেছে। তারা আমাদের উচ্ছেদ করে বেড়া দিয়ে সেখানে ধান রাখার তিনটি গুলা রেখে গেছে। আমার মা ও আমাকে এমনভাবে আঘাত করেছে যে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। তারা আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে পর্যন্ত নির্যাতন করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অভিযুক্ত পরিবার জানান, তারা যে দাবিটা করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাদের জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দিলে সেখানে তারকাঁটা দিয়ে ঘিরে রাখি,কিন্তু তারা তারকাঁটা সরিয়ে দখল করেছিলো। আমরা ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিলে তারা ইউনিয়ন পরিষদকে বলে বিষয়টি সমাধানের জন্য। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ এর আগে সমাধান করে দিয়ে যার কারণে পরবর্তী আমাদের কোর্টে মামলার জন্য আদেশ দেয়। আমরা আমাদের জায়গায় নতুন করে বেড়া দিতে গেলে তারা নিজেরাই নিজেদের কাপড় ছিড়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।

জীবননগর থানার উপ-পরিদর্শক সিদ্ধার্থ ম-ল বলেন, তারা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে জানায় তাদের কে বা কারা আটকিয়ে রেখেছে, তাদেরকে উদ্ধার করতে গেলে আমারা যেটা জানতে পারি তারা নিজেই নিজেদের ঘর ভাঙচুর করে কাপড় ছিড়ে ছিঁড়ে ওনাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। এটা নিয়ে থানা বসে মিমাংসার কথা থাকলেও বাদী পক্ষ থানা আসেনি। এটা অনেক পুরাতন ঘটনা। এটা নিয়ে অনেকবার বসাবসি হয়েছে তবুও আজিজুলের পরিবার মানতে চায় না।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More