জীবননগরের সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া সড়কে কাঠ ও ভ্যান ভিড়িয়ে গতিরোধ মুরগি ও মাছবাহী পিকআপ আটকে চালকদেরকে কুপিয়ে লুটপাট
স্টাফ রিপোর্টার: জীবননগরের সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া সড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ভোর রাত ৩টার দিকে জাহাঙ্গীর হোসেনের বন্ধ ইটভাটার সামনে কাঠ ও ভ্যান সড়কে ফেলে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মুখ বাঁধা ৫/৬জনের ডাকাতদল মুরগি ও মাছবাহী পিকআপ গতিরোধ করে পিকআপ গাড়িচালক মনির হোসেন (৩৭) ও মাছবাহী পিকআপের লাইনম্যান ওমর আলীকে (৪০) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নগদ ৪২ হাজার টাকা ও গাড়ির কাগজপত্র লুট করে নিয়েছে। আহত পিকআপ চালক মনির হোসেনকে হাতে ও পেটে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে জখমসহ লাইনম্যান ওমর আলীর দায়ের উল্টো পিট দিয়ে ঘাড়ে, হাতে ও পায়ে আঘাত করে আহত করা হয়েছে। আহত মনির হোসেনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও লাইনম্যান মনির হোসেনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুরগিবাহী পিকআপ চালক মনির হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের সড়াবাড়িয়া গ্রামের জামাত আলীর ছেলে ও মাছবাহী পিকআপের লাইনম্যান ওমর আলী সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা গ্রামের দাউদ মইরার ছেলে। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মুরগি ব্যবসায়ী মিঠুন সরকারের পিকআপ চালক মনির হোসেন পাবনা এলাকা থেকে মুরগি নিয়ে রাত ৩টার দিকে কাশিপুর গ্রামে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া সড়কে জাহাঙ্গীর হোসেনের বন্ধ ইটভাটার নিকট পৌঁছালে ৫/৬জনের ডাকাতদল রাস্তায় কাঠ ও ইটবাহী ভ্যান সড়কে ফেলে পিকআপ গাড়িটি গতিরোধ করে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পিকআপ চালককে দেশীয় ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। ডাকাতদল পিকআপ চালক মনির হোসেনকেকে ধারালো দা দিয়ে হাতে দুটি ও পেটে একটি কোপ মেরে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও তার গাড়ির কাগজপত্র লুট করে নেয়। এ সময় সাতক্ষীরা জেলার কুচুয়া উপজেলার পাটকেলঘাটা গ্রামের পিকআপ চালক মনির হোসেন আন্দুলবাড়িয়া বাজারে সততা ফিসে মাছ দিয়ে ফেরার পথে ডাকাতদলের কবলে পড়েন। গাড়ির গ্লাস না খুলে দেয়ার অপরাধে ডাকাতদল গ্লাস ভেঙে লাইনম্যান ওমর আলীকে দায়ের উল্টো পিট দিয়ে ঘাড়ে, হাতে ও পায়ে আঘাত করে ধরাশায়ী করে। এ সময় মাছবাহী গাড়ির চালক মনির হোসেন মনির নিকট থেকে নগদ সাড়ে ১২ হাজার টাকা ও একটি মোটরগাড়ির কাগজ লুট করে নেয়। দেহাটি গ্রামের আলমসাধু গাড়ির চালক জহুরুল ইসলাম ডাকাতদলের এ তাণ্ডব দেখে কৌশলে পালিয়ে টহল পুলিশকে খবর দেন। টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে ডাকাতদল স্থান ছেড়ে নির্জন মাঠের দিকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত মুরগিবাহী পিকআপ চালক মনির হোসেনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। গতকালই তাকে রাজশাহী হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গুরুতর জখম মনির হোসেনকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার হাত ও পেটের কোপটি গুরুত্বর বলে জানা গেছে। মুরগি ব্যবসায়ী মিঠুন সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডাকাতদল আমার পিকআপ ডাইভার মনির হোসেনকে কুপিয়ে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও গাড়ির কাগজপত্র লুট করে নিয়েছে। তার হাতে ও পেটে কুপিয়ে জখম করায় রাজশাহী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানান। সাতক্ষীরা জেলার কচুয়া উপজেলার পাটকেলঘাটা গ্রামের মাছবাহী পিকআপ চালক মনির হোসেন মনি মাথাভাঙ্গাকে বলেন, আন্দুলবাড়িয়া বাজারে সততা ফিসে মাছ রেখে খালি গাড়ি নিয়ে ফেরার পথে ৫/৬জনের ডাকাতদল কাঠ ও ভ্যানগাড়ি সড়কে ফেলে গতিরোধ করে। গাড়ির গ্লাস না খুলে দেয়ায় ডাকাতদল লাইনম্যান ওমর আলীকে দায়ের উল্টো পিঠ দিয়ে ঘাড়ে, হাতে ও পায়ে আঘাত করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নগদ সাড়ে ১২ হাজার টাকা ও গাড়ির কাগজপত্র লুট করে নেয়। টইল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ডাকাতদল নির্জন মাঠের দিকে পালিয়ে যায়। আহত ওমর আলীকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, ডিবি ওসি ও জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস মাথাভাঙ্গাকে বলেন, রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশী অভিযান চলছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করার বিষয়টি প্রত্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.