জীবননগরে অধিকাংশ অর্থলেনদেকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর : নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক

এমআর বাবু/সালাউদ্দীন কাজল: জীবননগর উপজেলায় অধিকাংশ অর্থলেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এসব অর্থলেনদেনকারী প্রতিষ্ঠাগুলোর ৯৫ ভাগ প্রতিষ্ঠানে নজরদারির জন্য কোনো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি টিভি) নেই। এছাড়া অর্থলেনদেনকারী প্রতিষ্ঠাগুলোর নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত নিরাপত্তা প্রহরীর হাতেও কোনো আগেয়াস্ত্র থাকে না। যার কারণে অর্থলেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানে কোনো অপকর্ম ঘটানোর পর অপরাধীদের শনাক্ত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সম্প্রতি জীবননগর উপজেলার উথলী সোনালী ব্যাংক শাখায় ডাকাতি সংঘটিত হবার পর আইন-খৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে। এসব কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে অর্থলেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার স্বার্থে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলায় ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখাসহ ১২টি ব্যাংকের শাখা, ১১টি এজেন্ট ব্যাংক এবং শতাধিক মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রয়েছে। এর মধ্যে আন্দুলবাড়িয়া বাজারে ১টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখাসহ ৪টি এজেন্ট ব্যাংক, উথলী গ্রামে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখাসহ দুটি এজেন্ট ব্যাংক, রায়পুর বাজারে ১টি এজেন্ট ব্যাংক, হাসাদাহ বাজারে ১টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখাসহ দুটি এজেন্ট ব্যাংক এবং জীবননগর পৌর শহরে ৪টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখাসহ ৩টি এজেন্ট ব্যাংক রয়েছে। এছাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে প্রায় শতাধিক মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রয়েছে। এসব অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। কিন্তু এসব অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তার জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিরাপত্তামূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উপজেলার ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখাসহ মোট ১২টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র দুটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখায় এবং ৪টি বেসরকারি ব্যাংক শাখায় ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসি টিভি) লাগানো আছে। বাকী ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখায় কোনো ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন নেই (নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংকের শাখাগুলোর নাম উল্লেখ করা হলো না)। এসব ব্যাংকের শাখাগুলোতে নিরাপত্তা প্রহরী থাকলেও অধিকাংশ নিরাপত্তা প্রহরীর হাতে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই। এছাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে শতাধিক মোবাইল ব্যাংকিংগুলোতে কোনোরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের এজেন্ট ব্যাংকের এক স্বত্বাধিকারী বলেন, ব্যাংকের এজেন্ট শাখা নেবার সময় কর্তৃপক্ষ ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন লাগানোর জন্য কোনো নির্দেশ দেননি। এ জন্য সিসি টিভি লাগানো হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন লাগানো উচিত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের এক শাখা ব্যবস্থাপক বলেন, কর্তৃপক্ষ  নিরাপত্তার জন্য যদি ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন না লাগায় সেক্ষেত্রে আমার কি করনীয় আছে? তিনি ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশনসহ অস্ত্রধারী নিরাপত্তা প্রহরী দেবার দাবি জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে গ্রাম অঞ্চলের ছোট ছোট দোকানগুলোতেও ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন লাগানো আছে। অথচ যেসব অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন করা হয় সেখানে কেনো যে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন লাগানো হয়নি এবং নিরস্ত্র নিরাপত্তা প্রহরী থাকে সেটা আমার বোধগম্য হয় না।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন বলেন, অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সম্ভব হলে বাসা বাড়িতেও নিরাপত্তার জন্য ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন লাগানো উচিত।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More