জীবননগরে পাট কাটা-ধোয়া শেষে বিক্রি শুরু

পাটের আশাতীত ফলন ও ন্যায্যমূল্যে কৃষকের মুখে হাসি

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার কৃষকরা দীর্ঘদিন পর এ বছর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পাট কাটা-ধোয়া শেষে বিক্রি শুরু করেছেন কৃষকেরা। অনুকুল আবহাওয়ার কারণে এ বছর পাটের ফলনও যথেষ্ট ভালো হয়েছে। বাজারে নতুন পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এবছর এলাকার খাল-বিল ও ডোবায় পর্যাপ্ত পানি থাকায় পাট জাগ (স্থানীয় ভাষায় পচান) দিতেও সমস্যা হয়নি কৃষকদের।

জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলায় এবার ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। উপজেলার কৃষকরা এবার রবি-৪ ও জিআরও-৫২৪ জাতের পাট চাষ করেছেন। প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টন। বর্তমানে পাট কাটা ধোয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন হাট বাজারে পুরোদমে পাট বেঁচা-কেনা চলছে। এ বছর পাটের রঙ ভালো হওয়ায় যে কোনো বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া, হাসাদাহ ও উথলী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পাট নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য। প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩শ’ টাকা থেকে ২ হাজার ৪শ’ টাকা পর্যন্ত। পাটের দাম শুরুতেই ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

উপজেলার দেহাটি গ্রামের পাট চাষি হামিদুর রহমান জানান, গত বছর পাট জাগ দেয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ পানি ছিলো না। এ কারণে পাট জাগ দেয়ার জন্য পুকুর ভাড়া করতে হয়েছিলো। অল্প পানিতে পাট জাগ দেয়ার কারণে পাটের রঙ কালো হয়েছিলো। আবার অনেকে পানির অভাবে পাট শুকিয়ে খড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এবছর খাল-বিলে যথেষ্ট পরিমাণ পানি থাকায় পাট জাগ দিতে সমস্যা হয়নি। এবছর পাটের দ্বিগুন দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

উথলী গ্রামের কৃষক মোমিন হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে ৬ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এছাড়া জ্বালানী হিসেবে পাট খড়ির ব্যপক চাহিদা রয়েছে।

মনোহরপুর গ্রামের কৃষক আকিমুল ইসলাম জানান, এবার পাটের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘায় ১৪-১৬ মণ পর্যন্ত পাট পাওয়া যাচ্ছে। দামও ভালো।

হাসাদাহ বাজারের পাটের আড়তদার লিয়াকত হোসেন বলেন, হাটে পাট আসতে শুরু হয়েছে। দাম গত বছরের তুলনায় বেশ ভালো। দাম এভাবে থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।

জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, উপজেলায় পাট চাষ বাড়ছে। কৃষকরা এবার দাম ভালো পাচ্ছেন। কৃষকদের উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। পাটের মান অনেক ভালো।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More