জীবননগরে মাদরাসা শিক্ষক জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মারকাজুল উলূম বালিহূদা মাদরাসার শিক্ষক জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১ বছরের ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা ও তার ভাই প্রতিবাদ করলে ওই মাদরাসার পরিচালক জুবায়ের খান উল্টো ভুক্তভোগী পরিবারের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা মারকাজুল উলুম বালিহুদা মাদরাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত মাদরাসার আবাসিক শিক্ষক জিল্লুর রহমান (৪২) মাগুরা জেলার শালিকা উপজেলার হাসখালি গ্রামের জলিল মোল্লার ছেলে। তিনি দুই বছর যাবত এ মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন।
এ বিষয়ে বলাৎকারের স্বীকার ওই ছাত্র বলেন, অন্যান্য দিনের মতো গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। পরবর্তীতে অনেক রাত্রে মাদরাসার আবাসিক শিক্ষক জিল্লুর রহমান আমার কাছে এসে প্যান্ট খোলে এবং মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক বলাৎকার করে। এরপর ওই শিক্ষক কাউকে কোনো কিছু বললে আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এরপর আমি পরের দিন বুধবার (২৫ জুন) কৌশলে মাদরাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসি এবং আমার বাবা মা ও ভাইকে বিষয়টি জানায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রের বড় ভাই বলেন, আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ঘটনাটি শোনা মাত্রই আমি ওই মাদরাসার পরিচালক জুবায়ের খানকে মোবাইলফোনে ঘটনাটি খুলে বলি। তিনি আমাকে বিষয়টি বিচারের আশ্বাস দিয়ে চুপ করে বসে থাকেন। ঘটনার তিন দিন পর তার সাথে দেখা করলে তিনি আমাকে বলেন, তার ভাইয়ের বইপত্র ও জামা কাপড় মাদরাসা থেকে নিয়ে যেতে। এ মাদরাসায় তার পড়াশোনার আর সুযোগ নেই। তারপর আমি বাসায় চলে এসে আমার পরিবারের নিকট বিষয়টি জানায়।
এরপর আমার আত্মীয়-স্বজনসহ আমি শুক্রবার (২৭ জুন) ওই মাদরাসায় উপস্থিত হয়। বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এবং পরিচালককের সাথে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। তারপর স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে আমরা বাসায় চলে আসি। পরের দিন শনিবার (২৮ জুন) আমরা জানতে পারি মাদরাসার পরিচালক জুবায়ের খান আমাদের বিরুদ্ধে মাদরাসা ভাঙচুর এবং দুই লাখ টাকা লুটপাটের কথা বলে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। যেটি আমাদের উপর সম্পূর্ণ অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। এছাড়া তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা শীঘ্রই গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে মাদরাসার পরিচালক জুবায়ের খান বলেন, এটি একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সাজানো ঘটনা। আমার মাদরাসার সুনাম নষ্ট করার জন্য কুচক্রীমহল কাজ করছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী মাদরাসার পড়াশোনার চাপ নিতে পারছে না বলেই সে এরকম অভিযোগ করেছে। এছাড়াও ওই শিক্ষার্থী এর আগেও মাদরাসা থেকে কয়েকবার পালিয়ে গিয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক জিল্লুর রহমান জানান, মাদরাসায় ৩০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তারা একসাথে রাত্রে ঘুমায়। আমি যদি এমন কাজ করি তাহলে কেউ না কেউ বিষয়টি শুনতো। তাছাড়া আমি এই মাদরাসায় দুই বছর সুনামের সাথে শিক্ষকতা করছি। আমার উপরে এ ধরনের অভিযোগ কেউ দিতে পারবে না। আমি এ ধরনের অপবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জীবনগর থানার ওসি মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, মাদরাসার পরিচালক জুবায়ের খান বাদী হয়ে মাদরাসা ভাংচুর এবং ২ লাখ টাকা লুটপাটের বিষয় নিয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অপরদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ হতে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এছাড়াও বিষয়টি তদন্তপূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More