ঝিনাইদহে ডায়রিয়ার প্রকোপ

হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ : চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ শহরের পৌরএলাকায় হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত দুইদিনে জেলা সদর হাসপাতালে দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বুধবার (৩ নভেম্বর) রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬০ জন রোগী। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ১১০জন। তাদের অধিকাংশেরই বাড়ি শহরের হামদহ, কাঞ্চনপুর ও মোল্লাপাড়া এলাকায়। শুক্রবার সকালে সদর হাসপাতালের মেডিসিনি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বেড ও মেঝেতে তিল ধারনের ঠাই নেই। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের বেশিরভাগই নারী ও বয়স্ক।
আলহেরাপাড়া এলাকার জুয়েল নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমাদের পরিবারেরই তিনজন অসুস্থ হয়েছে। পরশু রাতে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখনো সুস্থ হয়নি। কয়দিন থাকা লাগবে তা বলতে পারছি না।
খন্দকারপাড়া এলাকার সোনালী নামের এক রোগী বলেন, হঠাৎ করে আমার মেয়ের পাতলা পায়খানা হয়েছে। তারপর আমার স্বামীর, এরপর আমারও হয়েছে। কিসের জন্য হলো তা বলতে পারছি না। আমরা তো টিউবওয়েলের পানি পান করি। সাপ্লাইয়ের পানি দিয়ে গোসল আর রান্না করি। শুধু আমাদের পরিবারেরই না, বাড়ির আশপাশের লোকজনেরও হয়েছে।
চৈতি নামের এক রোগী বলেন, স্যালাইনগুলো আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ওষুধও আমরা অনেক সময় পাচ্ছি না। রোগী বেশি হওয়ায় নার্সরাও সেবা দিতে পারছে না ঠিকমতো।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যারা আসছেন তাদের বেশিরভাগই বয়স্ক। শিশুরা কম আক্রান্ত হচ্ছে। পৌরসভার একটি এলাকা থেকে রোগী বেশি আসছে। বেশি সংখ্যক রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের জনবল কম। তারপরও চেষ্টা করছি তাদের সেবা দিতে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. জাকির হোসেন বলেন, রোগীরা বেশিরভাগই একটি নির্দিষ্ট এলাকার। এতে ধারণা করছি, কোনো খাবার বা পানির মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। যারা আক্রান্ত হয়নি তাদের প্রতি আমাদের পরামর্শ, তারা যেনো পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি পান করেন এবং হাত ধৌত করেন। সেই সঙ্গে বাসি-পঁচা খাবার এড়িয়ে চলেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বয়স্ক মানুষের ডায়রিয়া হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সব জায়গা যোগাযোগ করেছি। আমাদের ওষুধ, স্যালাইন পর্যাপ্ত আছে। আশা করছি, এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More