ঝিনাইদহে শিকারির কবল থেকে মুক্ত হলো ৫৮টি পাখি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: মাঠের পর মাঠ সাদা বক আর নানা প্রজাতির পাখি ঘুরে বেড়ায় সারাক্ষণ। লাঙলের ফালে খাবার খুঁজে নেয় তারা। কেউ তাদের তাড়া করেনি কখনো। কিন্তু একশ্রেণির পাখি শিকারি রাতের আঁধারে সেই পাখিগুলো মেরে নিয়ে যাচ্ছে।

খবর পেয়ে ঝিনাইদহের পাখিপ্রেমী রামনগর গ্রামের জহির রায়হান পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছুটে যান সেখানে। গতকাল শনিবার রাতে সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের কাটিয়ার বিলে অভিযান চালিয়ে বেশকিছু জাল ও ৫৮টি পাখি উদ্ধার করেছেন তারা। তবে পাখি শিকারিরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরা যায়নি।

জহির রায়হান বলেন, সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের ভবানীপুর, ডেফলবাড়িয়া, বানিয়াকান্দর, রামনগর, বেড়বাড়ীসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে শীতের শেষে প্রচুর পাখি দেখা যায়। মাঠে কৃষকের খেতে সাদা বক আর নানা প্রজাতির পাখি খেলা করে। এলাকার কৃষকেরা জমিতে লাঙল দেয়ার সময় পাখিগুলো লাঙলের পেছনে পেছনে থেকে খাবার সংগ্রহ করে। এলাকার মানুষদের দেখলে পাখিরা ভয় পায় না। সাধারণ মানুষও পাখিদের তাড়া করে না। এগুলো এলাকার মানুষের কাছে অতিথি হিসেবে পরিচিত। জহির রায়হান বলেন, গত এক সপ্তাহে তারা খবর পান, রাতের আঁধারে মাঠ থেকে পাখি শিকার করা হচ্ছে। একশ্রেণির মানুষ এগুলো ধরে গোপনে বিক্রি করছে। এই খবর পেয়ে তিনি পরিবারের আরও পাঁচ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে ওত পেতে থাকতে শুরু করেন। দুইদিন শিকারি ধরতে না পারলেও আজ রাত আটটার দিকে কাটিয়ার বিলে পাখি শিকারের জন্য পাতা জাল দেখতে পান। এ সময় তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিকারির দল পালিয়ে গেলেও তাদের শিকার করা ৫৮টি পাখি উদ্ধার করেন। পাখিগুলোর মধ্যে কাদাখোঁচা, হাঁস, বকসহ নানা জাতের পাখি রয়েছে। এসময় বেশকিছু জালও উদ্ধার করেছেন তারা।

জহির বলেন, তার এই কাজে ছেলে তপু রায়হান, ভাতিজা রাজিব হোসেন, আনিচুর রহমান, নাতিন রনি ও জনি সহযোগিতা করেছেন। পাখিগুলো সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শাহীন বলেন, যিনি রাতে কষ্ট করে পাখিগুলোর জীবন বাঁচাতে কাজ করেছেন, তিনি প্রশংসার দাবি রাখেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় মানুষদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে কীভাবে পাখিগুলো রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান ইউএনও।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More