তহশিলদার জাকিরের পকেট থেকে ঘুষের ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার

গাংনীর সাহারবাটি ভূমি অফিসে দুদকের অভিযান : অ্যাসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তদন্তে বাধা দেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি টিম বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানকালে উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) জাকির হোসেনের পকেট থেকে ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, যা ঘুষের অর্থ বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছে দুদক। এ অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি দুদক কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। দুদক জানায়, বেলা ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান পরিচালনা করেন দুদক কুষ্টিয়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলবুল হাসান রিয়াদ। তার সঙ্গে ছিলেন উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমানসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা। অভিযানের বিষয়ে সহকারী পরিচালক বুলবুল হাসান বলেন, “আমরা যথাযথ পরিচয়পত্র দেখিয়ে সরকারি দায়িত্ব পালনের জন্য অফিসে প্রবেশ করি। কিন্তু সহকারী কমিশনার (ভূমি) অহেতুক প্রশ্ন করে আমাদের কার্যক্রমে বারবার বাধা দেন। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব ছিল আমাদের সহযোগিতা করা, কিন্তু তিনি উল্টো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।”তিনি আরও বলেন, “উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাকির হোসেনের দেহ তল্লাশি করে বিভিন্ন পকেট থেকে থোকায় থোকায় ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এটি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের টাকা বলে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি।”সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘুষ বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। নামজারি, জমাভাগ বা খাজনা দিতে গেলেই ঘুষ দিতে হয়, নইলে কাজ এগোয় না।এক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “জমির নামজারি করতে গিয়ে একাধিকবার যেতে হয়েছে। ফাইল এক চুলও নড়ে না, যতক্ষণ না টাকা দেওয়া হয়।”এক নারী অভিযোগ করে বলেন, “ভূমি অফিসে গেলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ শুধু হয়রানির শিকার হয়। ২০০ টাকার কাজ করতে গিয়ে ২ হাজার টাকা দিতে হয়। আমরা বিচার চাই।”অভিযানের সময় অভিযুক্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।গাংনী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন বলেন, “আমি শুধু দুদক কর্মকর্তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে তাদের আইডি দেখতে চেয়েছিলাম। যেহেতু অফিসে কোনো লিখিত অভিযোগ ছিল না, তাই জানতে চেয়েছিলাম— ৩৬হাজার টাকা কেন জব্দ করা হলো।”তবে দুদক কর্মকর্তারা জানান, “অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং দেহ তল্লাশিতে ঘুষের টাকাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ধরা পড়েছেন।”গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, “দুদক যদি অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণসহ আমাদের কাছে উপস্থাপন করে, তাহলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনে পাঠানো হবে। প্রাথমিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More