দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুরে শহিদুল হত্যা : ৩ দিনের পুলিশি রিমান্ডে সুজন

দর্শনা অফিস: দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুরে ছেলের বন্ধুর ছুরিকাঘাতে শহিদুল হত্যাকান্ড মামলার প্রধান আসামি সুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের পুলিশি রিমান্ডে আনা হয়েছে। দুদিনের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নতুন কোনো তথ্য মেলেনি সুজনের মুখ থেকে। আজ শনিবার রিমান্ডের ৩য় দিন। বিকেলে সুজনকে সোপর্দ করা হতে পারে আদালতে। শহিদুল হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও বাকী আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
গত ৩১ জুলাই শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে দর্শনা পৌর শহরের ঈশ্বরচন্দ্রপুর বড় মসজিদপাড়ার আসানুল ইসলামের ছেলে জাকির হোসেন (১৯) ও একই পাড়ার আমজাদ আলীর ছেলে সুজন পাপড় ভাজা খাচ্ছিলো। এ সময় জাকির ও সুজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সুজনের বাবাকে গলাছিলা ও কান কালা বলে কটাক্ষ করে জাকির। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজন দৌড়ে বাড়ি থেকে তার বাবাসহ কয়েকজন ধারালো ছুরি এনে হানা দেয় জাকিরের ওপর। এতে একইপাড়ার তাহার আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম ঠেকাতে এলে তার বুকে স্বজোরে ছুরিকাঘাত করে সুজন। সুজনের ছুরিকাঘাতে আরো রক্তাক্ত জখম হন শহিদুলের ছেলে ইলফাজ (২২), ফরিদ (৩৫) ও জাকির (২০)। আহতদের মধ্যে শহিদুলকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সুজন, ইলফাজ ও জাকির দর্শনা কলেজ পড়–য়া ছাত্র। তাদের মধ্যে ছিলো গভীর বন্ধুত্বও। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিনই বিকেল ৩ টার দিকে মারা যান শহিদুল ইসলাম। অবস্থা বেগতিক বুঝে সুজনসহ তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে দেয় গা ঢাকা। এ ঘটনায় নিহত শহিদুলের মেয়ে আমেনা খাতুন বাদি হয়ে সুজনকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার বাকী আসামির তালিকায় রয়েছে গফুর মিয়ার ছেলে আমজাদ আলী (৪৫), আমজাদ আলীর ছেলে শামীম হোসেন (২৬), আমজাদ আলীর স্ত্রী গোলেহার খাতুন (৪২), মশিউর রহমান ছোটনের স্ত্রী কাজল (৩০) ও বক্স ম-লের ছেলে সোলাইমান (৩৮)। গত ২ আগস্ট সোমবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহব্বুর রহমান কাজলের নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মাহবুবুর রহমান, ইন্সপেক্টর (অপরেশন) আবু সাঈদ, এসআই সুমন্ত বিশ্বাস, জীবননগর থানার এসআই মেফাউল হাসান এবং এএসআই ইমামুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালান ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার ঘুগরি পান্তাপাড়া ইউনিয়নের মানিকদিহি গ্রামে। ওই গ্রামের জনৈক ব্যক্তির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত খুনি সুজনকে। সুজনকে গ্রেফতারের পর করা হয় পুলিশি জিজ্ঞাবাদ। গ্রেফতারকৃত সুজনকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দর্শনা থানার ইন্সপেক্টর (অপরেশন) আবু সাঈদ। ১০ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য করেন বিজ্ঞ আদালত। শুনানি ধার্য দিনে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিজ্ঞ আদালতের বিচারক। গত পরশু বৃহস্পতিবার সুজনকে ৩ দিনের রিমান্ডে আনা হয় দর্শনা থানায়। গতকাল শুক্রবার ছিলো রিমান্ডের ২য় দিন। দুদিনের জিজ্ঞাসাবাদে নতুন কোনো তথ্য উৎঘাটন হয়নি বলেন জানান তদন্তকারী অফিসার আবু সাঈদ। আজ শনিবার বিকাল পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুজনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান কাজল।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More