দলবলসহ স্বামী পালালেও অবরুদ্ধ এনএসআই সদস্য : উদ্ধার করলো পুলিশ

চুয়াডাঙ্গায় বিচ্ছেদের ৭ মাস পর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে স্থানীয়দের বাধা

স্টাফ রিপোর্টার: তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের জনরোষে পড়েন স্বামীসহ চুয়াডাঙ্গার এনএসআইয়ের দুই সদস্য। এসময় স্বামী ঝিনাইদহের মেহেদী হাসানসহ অন্যরা পালিয়ে গেলেও জনগণের হাতে অবরুদ্ধ হন এনএসআই সদস্য এনামুল হক। পরে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সুমিরদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, ঝিনাইদহের পাগলাকানাই এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে মেহেদী হাসানের সাথে চুয়াডাঙ্গার সুমিরদিয়া গ্রামের এক কিশোরীর বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে কলহের কারণে মাস তিনেক পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। কাজি অফিসের মাধ্যমে গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্বামীকে তালাক প্রদান করেন স্ত্রী। এরপর থেকে ওই কিশোরী নিজের বাপের বাড়িতেই রয়েছেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পর একাধিকবার সুমিরদিয়া গ্রামে গিয়ে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান। তবে তিনি সফল হতে পারেননি। গতকাল সোমবার আঁটসাঁট বেধে আবারও সুমিরদিয়া গ্রামে যান মেহেদী হাসান। এবার সাথে নিয়ে যান চুয়াডাঙ্গার জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সদস্য এনামুল হক ও সোহাগ হোসেনসহ ১০/১২ জনকে। তারা প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলযোগে সেখানে গিয়ে ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বিবাহ বিচ্ছেদের ৭ মাস পর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে এলাকাবাসী তাদের বাধা প্রদান করে। এসময় কৌশলে মেহেদী হাসানসহ অন্যরা সটকে পড়লেও স্থানীয়রা অবরুদ্ধ করে এনএসআই সদস্য এনামুলকে। পরে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার এক সদস্য অবরুদ্ধ রয়েছে বলে খবর পেয়ে সুমিরদিয়া গ্রামে যায়। সেখান থেকে এনামুল নামের এক এনএসআই সদস্যকে উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। পরে গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে এনামুলকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) উপ-পরিচালক জিএম জামিল সিদ্দিক বলেন, সুমিরদিয়া এলাকায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সাবেক স্বামীসহ ঝিনাইদহের কয়েকজনকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে পুলিশে খবর দেয়া হলে তাদের উদ্ধার করে বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়। একই খবরে এনএসআই সদস্যরা তথ্য সংগ্রহের জন্য ওই এলাকায় যায়। অবরুদ্ধ অবস্থায় এনএসআই সদস্যকে উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো এনএসআই সদস্য আগে থেকে সেখানে যায়নি। কাউকে অবরুদ্ধ করার বিষয়টিও সঠিক না। পুলিশ সেখান থেকে ঝিনাইদহের কয়েকজনকে উদ্ধার করে থানায় নেয়, কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যকে নয়।

এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের প্রকাশ্যে তথ্য সংগ্রহ করার কোনো বিধান নেই; তাছাড়া একটি পক্ষের হয়ে প্রতিপক্ষের কাছে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করা এবং এধরণের ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সম্পৃক্ততা ও প্রকাশ্য উপস্থিতি আইনসিদ্ধ নয় বলেও মন্তব্য করেছেন এক প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ সচেতনমহল।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More