বর্ণিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হলো তিন দিনব্যাপী চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের ৪৪ বর্ষপূতি অনুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের ৪৪ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের তিন দিনব্যাপী বর্ণিল আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ আয়োজনের গতকাল শনিবার ছিলো সমাপনী দিন। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিব শতবর্ষ ও চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের ৪৪ বর্ষপূর্তি উদযাপন উৎসবের শেষদিন ছিলো গতকাল।
সমাপনী দিনে চুয়াডাঙ্গা জেলা কবিমেলা-২০২১ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ও বিশিষ্ট কবি নজমুল হেলাল। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও দেশবরণ্যে কবি জুলফিকার মতিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়রাম্যান প্রফেসর তানবিরুল আলম এবং রাজশাহী কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক কবি আরিফুল হক কুমার। প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সুমন ইকবাল, হৃদিকা ও জুবায়ের হাসান। প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে শুভেচ্ছা স্মারক ও উত্তরীয় প্রদান করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি নজমুল হেলাল। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সূচনা বক্তব্য দেন কবি ও লেখক আনোয়ারুল রশিদ সাগর। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক পটভূমি থেকেই গড়ে উঠেছে আমাদের দেশের সাহিত্য। স্বাধীনতা অর্জনের পর মুক্তিযুদ্ধ ও তার আদর্শ দারুণভাবে কার্যকর যেভাবে হয়েছে তা তো দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ভোগবাদী জীবনের উত্থানও ঘটেছে। তবে যেভাবেই দেখি না কেন, এই ডিজিটালাইজেশনই বলি, আর ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির কথাই বলি, তা কিন্তু এভাবেও ভাবা যেতে পারে, শিল্প-সাহিত্যে সৃজনশীলতার দরজা খুলে দিয়েছে। কেন না লেখক তো চায় নিজেকে প্রকাশ করতে। আর দশজনের সামনে তার এই প্রকাশিত রূপকে চায় মূর্ত করে তুলতে।‘
সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন বিশেষ অতিথি রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়রাম্যান তানবিরুল আলম, রাজশাহী কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক কবি আরিফুল হক কুমার এবং কবি ও গবেষক ড. গাজী রহমান।
আলোচনা পর্ব শেষে কবিতা পাঠ করেন মিজানুর রহমান ম-ল, তৌহিদ আকবর অন্তু, ইদ্রিস ম-ল, ইব্রাহিম খলিল, আশিকুজ্জামান আসাদ, জুবায়ের হাসান, রাকিব হাসান, আনছার আলী, সালমা খাতুন, মুরশিদ, সুমন ইকবাল, গোলাম কবীর মুকুল, রাবেয়া খাতুন, দিলরুবা, হামিদুল ইসলাম আজম, হাবিবি জহির রায়হান, সার্থক আলীম, কবি নজমুল হেলাল, রতন কুমার শর্মা, ফয়সাল আহমেদ, মোশাররফ হোসেন, নাইমুর রহমান, আলমগীর, মুন্সি কবীর, আবু আফজাল সালেহ, সাইফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, এম এ হামিদ, হাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমান, আজিজ হোসেন, শংকর প্রমাণিক, জাহানারা জানি, সিরাজুল ইসলাম, খলিলুর রহমান প্রমুখ। স্বরচিত লেখার ওপর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন কবি ও গবেষক ড. গাজী রহমান। তিনি চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদেও এই আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একই সাথে চুয়াডাঙ্গার লেখকদের লেখার মানও অনেক ভালো বলে উল্লেখ করেন। স্বরচিত লেখা পাঠ করার পর অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের বার্ষিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অতঃপর চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখায় তাদেরকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এবার যারা সম্মননা এবং সংবর্ধনা পেলেন তাদের মধ্যে সমাজ সেবায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল জোয়ার্দ্দার ইসলাম টোটন, সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় গোলাম কবির মুকুল এবং অমিতাভ মীর (মরণোত্তর), সাহিত্য সংগঠক হিসেবে বিশেষ অবদান রাখায় মো. হেদায়েত আলী বিশ্বাস এ্যালবার্ড, জেড আলম (মরণোত্তর), ইকবাল আতাহার তাজ এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার ৮জন শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার ছবির স্কেচ অঙ্কনে বিশেষ অবদান রাখায় রিচার্ড রহমান।
কবিতা আসরের পর চুয়াডাঙ্গা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত প্রশিক্ষক আব্দুস সালাম তারার নেতৃত্বে একঝাঁক শিল্পী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজির আহমেদ। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন রিচার্ড রহমান, সুমন ইকবাল, কাজল মাহমুদ, হোসেন জাকির, হোসেন ফারুক, আহমেদ বেলাল, মাসুদ রানা প্রমুখ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More