বর্তমান সরকার চামড়া সংরক্ষণের জন্য বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করছে
চুয়াডাঙ্গায় পশুর চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ ও লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণে আলোচনাসভায় জেলা প্রশাসক
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ঈদ-উল-আযহা ২০২৫ উপলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গায় কোরবানির পশুর চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ ও লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ৩টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার আশফাকুর রহমান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাহাবুদ্দীন, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কৃত্রিম প্রজনন কর্মকর্তা ডা. আ.হ.ম. শামিমুজ্জামান, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আসলাম অর্ক। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েক বছর যাবত আমাদের দেশে চামড়ার মূল্য একেবারে কম। চামড়ার মূল্য কম হওয়ায় অনেকে চামড়া সংরক্ষণ ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন চামড়া নিয়ে যাওয়ার জন্য। অথচ এই চামড়ার বাজারমূল্য হিসেব করলে অনেক বেশি হওয়ার কথা। আজ থেকে ৭-৮ বছর আগে আমাদের দেশে গরুর চামড়া প্রকারভেদে ১২শ থেকে প্রায় ২ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কোরবানির সময় যেহেতু একসাথে অনেক চামড়া হয় সেহেতু দামে কিছুটা কমে যায়। আবার অনেক সময় সংরক্ষণের অভাবে বাধ্য হয়ে কেউ কেউ কম দামে চামড়া বিক্রি করে দেন। তিনি আরও বলেন, একসময় ব্যবসায়ীরা কোন গ্রাম বা এলাকায় চামড়া নেয়ার জন্য গেলে অন্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ইশারা দিতেন উনি চামড়া নিবেন, কাউকে দেয়ার দরকার নেই। এখন কিন্তু সেই সময় আর নেই। এখন যে কোনো ব্যক্তি চামড়া সংরক্ষণ করতে পারে। এখন যদি কেউ ইশারা দিয়ে চামড়া কিনে বাধা দেয় আমাদের জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেব। বর্তমান সরকার চামড়া সংরক্ষণের জন্য বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করছে। চামড়া সংরক্ষণের মূল উপাদান হলো লবণ। বিশেষ করে মাদরাসা, লিল্লাহবোর্ডিং, এতিমখানা এরাই মূলত চামড়াগুলো সংরক্ষণ করে। ঈদের দিন সকালে চামড়াগুলো সংরক্ষণ করে বিকেলে সামান্য কিছু লাভে বিক্রি করে দেয়। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের তো রাখার জায়গা নেই এমনকি সংরক্ষণের জন্য কোনো প্রস্তুত নেই। এজন্য সরকার আগাম প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে এসব প্রতিষ্ঠানকে চামড়া সংরক্ষণ করে মূল যে উপাদান লবণ প্রতি গরুর চামড়ার জন্য ৮ কেজি এবং ছাগলের চামড়ার জন্য ৫ কেজি বিনামূল্যে দেবে। যারা চামড়া সংরক্ষণ করবেন তারা আমাদের সংখ্যাটা বলবেন সে অনুপাতে আমরা লবণের অর্ডার দেবো। এ জন্য সরকার আমাদের অলরেডি বরাদ্দ দিয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, অনেকে আশঙ্কায় থাকেন চামড়া সংরক্ষণ করে পরে যদি দাম না পান। দেখেন, আপনি যদি চামড়া সংরক্ষণ করতে না পারেন তাহলে বাজার তৈরি হবে কীভাবে? সুতরাং চামড়ার দামের বাজার বাড়াতে হলে আপনাকে চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া সংরক্ষণ না করলে আপনি তো চামড়ার দর কষাকষির সুযোগ পাবেন না, তখন আপনাকে স্বল্পমূল্যে বাধ্য হয়ে বিক্রি করে দিতে হয়। এছাড়া অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মানিক আকবরসহ জেলার বিভিন্ন মাদরাসা, লিল্লাহ বোডিং, এতিমখানার পরিচালকবৃন্দ ও চামড়া ব্যবসায়ীরা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.