বিয়ের ২ মাস ১০ দিনের মাথায় কিশোরী বধূর পুত্রসন্তান প্রসব

ছেলে হওয়ার খবর পেয়েই ভিমরুল্লার স্বামী মুস্তাকিম দিলেন তালাক

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে কিশোরী মায়ের অভিযোগ- এ ছেলের পিতা প্রেমিক আশিক
স্টাফ রিপোর্টার: এমনিতেই অপ্রাপ্ত বয়সের, তার ওপর বিয়ে। বিয়ের ২ মাস ১০দিনের মাথায় সন্তান প্রসব করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে কয়রাডাঙ্গার এ কিশোরী। সন্তান প্রসবের পর স্বামী চুয়াডাঙ্গা ভিমরুল্লার মুস্তাকিম মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বলেছেন, বিয়ে হলো ২ মাস ১০দিন আগে সন্তান এলো কীভাবে? কিশোরী প্রসূতি অবশ্য বলেছে, এ সন্তানের পিতা প্রেমিক আশিক রহমান। সে হারদী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। তার বাড়িও কয়রাডাঙ্গা গ্রামে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বামী কিশোরীকে রোববার দুপুরে তালাক দিয়েছেন। মা ও সদ্যভূমিষ্ঠ পুত্রসন্তানকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সুস্থ আছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক আশিক গাঢাকা দিয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে আড়াই মাস আগে জেলা সদরের ভিমরুল্লার আলিম আলীর ছেলে মুস্তাকিমের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে থেকেই কিশোরী বধূ অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বিষয়টি গোপন করেই বিয়ে দেয়া হয়। অবশেষে বিষয়টি গোপন থাকেনি। বিয়ের তিন মাসের মাথায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ফুটফুটে এক পুত্রসন্তান প্রসব করেছে ওই কিশোরী বধূ। সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে স্বামীর লোকজন এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে ওই স্ত্রীর সাথে সকল প্রকারের সম্পর্ক ছেদের কথা জানিয়ে দেন। কিশোরী বলেন, কয়রাডাঙ্গা গ্রামেরই হারুন আলীর ছেলে আশিকের সাথে প্রেম সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের কথা বলে দেহভোগও করে। পেটে সন্তান আসে। বিষয়টি লজ্জায় কাউকে বলতে পারিনি। এদিকে পিতা-মাতা বিয়ে ঠিক করে। বিয়েও দিয়ে দেয়। ছেলে হওয়ার পর কি আর কিছু গোপন রাখা যায়?
কিশোরীর স্বামী মুস্তাকিমের পরিবারের লোকজন বলেন, ‘বিয়ের সময় আমরা কোনোভাবেই বুঝতে পারিনি ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।’ স্বামী মুস্তাকিম বলেন, ‘বিয়ের পর আমার স্ত্রী বিভিন্নভাবে আমাকে এড়িয়ে চলতো। তাই আমার পক্ষে বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি।’ গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বরে এসে কাজির মাধ্যমে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন মোস্তাকিম। ওই কিশোরী বলেন, ‘আমার পিতারবাড়ি কয়রাডাঙ্গা গ্রামের হারুনের ছেলে আশিক (২০) একদিন কিছু একটা দেখানোর জন্য তার ঘরে যেতে বলে। আমি সেখানে গেলে আশিক আমার সঙ্গে মেলামেশা করে। এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে সে। পরে লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে আমি জানাইনি। আমার স্বামী গতকাল রোববার দুপুরে জোরপূর্বক আমার স্বাক্ষর নিয়ে তালাক দিয়েছে। তালাক দিলেও এখনও দেনমোহরের টাকা পাইনি আমি। তবে আমি আমার পুত্রসন্তানের স্বীকৃতি চাই। আশিকই আমার সন্তানের জন্মদাতা।’ মোস্তাকিমের পিতা বলেন, ‘বিয়ের পর অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যায়। শনিবার রাতে সে পুত্রসন্তান প্রসব করে। এটা আমার ছেলের সন্তান নয়, অবৈধ সন্তান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কিশোরী প্রসূতির শয্যাপাশে থাকা তার মা বলেছেন, মেয়ে যে সন্তান সম্ভবা তা আগে জানতে পারিনি। এ জন্যই বিয়ে দিয়েছিলাম। এখন ওই ছেলেকে সহজে স্বীকৃতি না দিলে আইনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অভিযুক্ত যুবক আশিকের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More