স্টাফ রিপোর্টার: নিজেকে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান’ বা ‘প্রতিনিধি’ পরিচয় দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে ধোঁকা দিয়ে আসছিলেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা খালিদ হোসেন। এই একই পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকেও নানা সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিজ এলাকায় সুবিধা করতে না পেরে নিজের বাড়ি ছেড়ে তিনি বর্তমানে শ্বশুরালয়ে (চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়ার মাছ বিক্রেতা শফিউল ইসলামের জামাই) বসবাস করেন। সেখানেও তিনি সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতারণার চেষ্টা করতেন বলে জানা যায়।
তবে এবার নতুন এক ফাঁদ পাততে গিয়ে নিজেই সেই ফাঁদে ধরা পড়েছেন তিনি। এক নারীর সাথে যোগসাজশে অন্য ব্যক্তিকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন খালিদ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়ার একটি নির্জন বাড়ি থেকে এক যুবতীসহ খালিদকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এলাকাবাসী। এসময় খালিদের কাছ থেকে এক বোতল নেশাজাতীয় তরল দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দু’জনকে থানা হেফাজতে নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহরের মুক্তিপাড়ার বাসিন্দা ওই যুবতী নারীর সঙ্গে দিন পাঁচেক আগে খালিদের পরিচয় হয়। যুবতী নারী বলেন, কিছু ছেলে তাকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতো। দু’দিন আগে পৌরসভার পিছনে খালিদের সাথে তার দেখা হলে তিনি তার সমস্যার কথা খালিদকে জানান। খালিদ তখন তাকে পরামর্শ দেন যে, ওই ছেলেদের কৌশলে ডেকে এনে মাদকসহ ধরে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে হবে।
যুবতী নারী আরও বলেন, “খালিদের কথামতো আজ (গতকাল) শনিবার সন্ধ্যায় খালিদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী আমি বাগানপাড়ার এই নির্জন বাড়িতে আসি।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খালিদ নিজেকে মানবাধিকার সংগঠনের নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় মানুষকে ধোঁকা দিয়ে অর্থ আদায় করে থাকেন। গতকাল খালিদের কাছ থেকে এক বোতল তরল নেশাজাতীয় মাদক উদ্ধার হওয়ায় এলাকাবাসী মনে করছেন, খালিদ মাদক পাচারের সাথেও জড়িত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খালেদুর রহমান বলেন, “খালিদ নামের ওই ব্যক্তিকে বাগানপাড়া থেকে এক যুবতী নারীসহ আটক করা হয়। আটককৃত খালিদ এর আগেও থানায় এসে নিজেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান দাবি করে বিভিন্ন সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।”
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.