মেহেরপুর গাংনী হাসপাতাল দালালমুক্ত রাখার ঘোষণা

ডাক্তার স্যাকমো ও এমআরদের জন্য নতুন নির্দেশনা
গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাম্প্রতিক সময়ে দালালদের তৎপরতা ও রোগীর পরীক্ষা নিয়ে কঠোর অবস্থানে হাসপাতাল প্রশাসন। দালাল রুখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ বিভাগে লিখিত আবেদন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে চিকিৎসক, স্যাকমো, এমআরদের জন্য গতকাল মঙ্গলবার লিখিত নতুন নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদ্যোগ অত্যান্ত ইতিবাচক উল্লেখ করে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন গাংনীর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
অভিযোগ রয়েছে, চিহ্নিত কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক তাদের পোষ্য দালাল নিয়োজিত করে হাসপাতালে। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাঝে মাঝে রোগীদেরকে তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে টেস্ট করায়। আর এর পেছনে হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজনের বিরুদ্ধে দালালদের সহায়তায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিলের। দালালদের অপতৎপরতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদেরকে গ্রেফতার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গাংনী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতাল সব সময় দালালমুক্ত। তবে কিছু কিছু সময় কৌশলে কিছু ঘটনা তারা ঘটায়। বিষয়টি আমি জানতে পেরে কঠোর ব্যবস্থার দিকে গিয়েছি। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে গাংনী হাসপাতালে চিকিৎসক, স্যাকমো, ফার্মাসিস্ট ও এমআরদের বিষয়ে জারিকৃত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি সরবরাহ নেই এমন কোনো ওষুধ চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রে লেখা যাবে না। অফিস চলাকালিন সময়ে হাসপাতালে হয় এমন কোনো পরীক্ষা বাইরে পাঠানো যাবে না। বাইরে করাতে হলে তা অত্যান্ত প্রয়োজনীয় ও যৌক্তিকভাবে করা যাবে। টিকেট ছাড়া কোনো ওষুধ হাসপাতাল ফার্মেসি থেকে নেয়া যাবে না এবং কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই টিকেট কাটতে হবে।
অপরদিকে ওষুধ বিপণন কর্মকর্তাদের (এমআর) জন্য নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের সাথে এমআররা সাক্ষাৎ করতে পারবেন। এ সময়ের বাইরে তারা হাসপাতালে অবস্থান করতে পারবেন না। এমআররা কোনো প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে পারবেন না। কোনো ওষুধ কোম্পানির প্রডাক্ট প্রমোশনে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে চাইলে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে আলোচনা ও অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু কোনো অর্থ লেনদেন করতে পারবে না এবং বিষয়টি সিভিল সার্জনকে অবহিত করতে হবে।
এদিকে গত মঙ্গলবার নির্দেশনা জারির পরই হাসপাতালে পরিবেশ অনেকটাই ছিলো পরিবর্তিত। বিশেষ করে রোগী ও তাদের স্বজনরা ছাড়া তেমন কেউ হাসপাতালে অবস্থান করেনি। অপরদিকে এমআরদের কেউ ছিলেন না হাসপাতালে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন, নির্দেশনার বিষয়টি কঠোরভাবে প্রতিপালন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। অপরদিকে অন্যান্য যে বিষয়গুলো রয়েছে তাও কঠোরতার সাথে দেখা হচ্ছে। গাংনীর মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যা যা করণীয় সে বিষয়ে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More