রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উপলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদানকে জাতীয়ভাবে মূল্যায়নের আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার: রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উপলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার ছাত্র জনতার জুলাই গণ-অভ্যুথান স্মরণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যারা আমাদের দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করছে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা ও তাদের পরিবার বিভিন্ন জায়গায় হয়রানি শিকার না হয়। এ বিষয়গুলো আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদানকে জাতীয়ভাবে মূল্যায়নের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা আরও বলেন, যারা বিদেশে যেতে আগ্রহী তারা বিদেশে যাওয়ার আগে জেলা পর্যায়ে অফিসে সুযোগ সুবিধার বিষয়ে যোগাযোগ করবেন। যেসকল যুবক ট্রেনিং নিয়ে দক্ষ কর্মী হিসেবে বিদেশে যান তারা বেশি বেতনে চাকরি করেন। আপনারা বিদেশে যাবার আগে দালালদের কাছে টাকা দেবেন না। সরকারি অফিসে এসে যোগাযোগ করবেন। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা এক অনন্যের প্রতীক। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা হাজারোও ত্যাগ ও অক্লান্ত পরিশ্রম স্বীকার করে দেশে বৈদেশিক মুদ্র পাঠাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড হিসেবে কাজ করছে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বৈদেশিক মুদ্রা না পাঠিয়ে বিগত সরকারকে চাপে ফেলেছিলেন। এতে করে সরকার পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। সেই সময় এক প্রভাবশালী মন্ত্রী হাতজোড় করে রেমিট্যান্স যোদ্ধারাদের বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাতে বলেন কিন্তু তারপরেও রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠানো বন্ধ রেখেছিলেন। আবার সেই রেমিট্যান্স যোদ্ধারাই সরকার পতনের পরে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে। বক্তারা বলেন, প্রবাসে প্রায় এক কোটি রেমিট্যান্স যোদ্ধারা রয়েছে। এদের ওপর যদি চারজন পরিবারের সদস্য নির্ভরশীল থাকেন। তাহলে প্রায় ৫ কোটি লোক এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারাদের দাঁড়ায় অর্থনীতিভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। আমরা যদি সবাই এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারাদের মর্যাদা দিই, তাহলে আমাদের দেশসহ সবাই সমৃদ্ধ হব। তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন যে, আপনারা এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারাদের পরিবারকে সহযোগিতা করবেন এবং তাদের খোঁজ খবর রাখবেন। যাতে করে আপনাদের দপ্তরে যেকোনো কাজের জন্য আসলে তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।
চুয়াডাঙ্গায় ছাত্র জনতার জুলাই গণ-অভ্যুথান স্মরণে রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাহিত্যমঞ্চে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা টিটিসি’র অধ্যক্ষ মো. মুছাব্বেরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। টিটিটিসি’ ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের ইন্সট্যাক্টর আনোয়ার কবিরের সঞ্চালনায় জেলার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সভায় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল হালিম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক আষলাম হোসেন অর্ক, ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার তানজিনুর রহমান ও রেমিটেন্স যোদ্ধা মো. হাসান বক্তব্য রাখেন। সভায রেমিট্যান্স যোদ্ধা আমেরিকা প্রবাসী আনসার আলী ও জর্ডান প্রবাসী মোছা. পারভীন আক্তারকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে ছাত্র জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর টিটিসির অধ্যক্ষ ড. প্রকৌশলী মো. শামীম হোসেন। মেহেরপুর জেলা প্রশাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) এবং জেলা এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ম্যানপাওয়ার অফিস (ডিইএমও) এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। আনিসুর রহমানের সঞ্চালনায় রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবসে আলোচনাসভা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর টিটিসির অধ্যক্ষ ড. প্রকৌশলী মো. শামীম হোসেন। অনুষ্ঠানে বিদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠানো তিনজন রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। শিমুল রহমান এক বছরে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন এক কোটি ৪৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ২২১ টাকা, রকিবুল ইসলাম পাঠিয়েছেন ৮৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৬১৩ টাকা ও রবিউল ইসলাম পাঠিয়েছেন ৫৯ লক্ষ ৮১ হাজার ৪০১ টাকা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রতিনিধি, তামিম আহমেদ, ইসলামী ব্যাংকের প্রতিনিধি, প্রকৌশলী শফিউদ্দিন, সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিনিধি, সিঙ্গাপুর প্রবাসী রোকনুজ্জামান, আবু মুসা ও মনিরা আখতারসহ বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা বৃন্দু ও ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দগণ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More