স্বীকৃতি পাওয়া হলো না মেহেরপুরের বীরঙ্গনা জাহানারা খাতুনের

মেহেরপুর অফিস: বিভিন্ন দফতর ঘুরেঘুরে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি। তাই রাষ্ট্রীয় ছাড়াই নিরবে চলে গেলেন মেহেরপুরের বীরঙ্গনা জাহানারা খাতুন ঈশা। বীরঙ্গনা হয়েও তিনি শহরের বাড়ি বাড়ি ছিট কাপড় বিক্রি আবার কখনও শিলপাটা ফেরি করে আয়ের অর্থে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এরপরও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক দল। তার মৃত্যুর পরে জানাজা বা দাফনের সময় দেখা যায়নি রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক দলের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির। গতপরশু মঙ্গলবার রাতে মেহেরপুর শহরের কোর্টপাড়াস্থ নিজবাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় ইন্তেকাল করেন বীরঙ্গনা জাহানারা খাতুন ঈশা (ইন্নালিল্লাহি……রাজিউন)। বুধবার সকাল ১০টার সময় মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মহুমার জানাজার নামাজ শেষে পৌর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

জানা যায়, পাক হানাদারদের পাশবিক নির্যাতন ও গণধর্ষণের শিকার হন মেহেরপুরের বীরঙ্গনা জাহানারা খাতুন ঈশা। ১৯৭১ সব হারিয়েও রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি না পাওয়ায় একবুক বেদনা ছিলো তার।

জাহানারা খাতুনের ছেলে মামুন বলেন, আমার মায়ের মৃত্যুতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বা রাষ্ট্রের কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি উপস্থিত হয়নি। আমি মনে করি মুক্তিযুদ্ধে আমার মায়ের ভূমিকা নিয়ে রাষ্ট্র  যথাযোগ্য মূল্যায়ন করেনি।

জাহানারা খাতুন ঈশার পরিবার জানায়, মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মফে শেখের মেয়ে তিনি। ১৭ বছর বয়সে ১৯৭০ সালে পিরোজপুর গ্রামের আবুল খাঁর সাথে বিয়ে হয়। এরই মধ্যে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আবুল খাঁ রাজাকারে নাম লেখায়। মুক্তিযুদ্ধকালীন মে মাসের দিকে রাজাকার স্বামীর শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন মেহেরপুরে। এ সময় পাকসেনারা ঈশাকে ধরে নিয়ে যায় মেহেরপুর কোর্ট চত্বরে পাকসেনা ক্যাম্পে। সেখানে পাকসেনারা নির্যাতন চালায়। এ লজ্জায় তিনি আর গ্রামে ফিরতে পারেননি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গ্রামে গিয়ে একমাত্র ভাই ফরজ আলীর কাছেও আশ্রয় মেলেনি। আবারও ফিরে আসেন মেহেরপুর শহর।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More