হজের অর্ধেক কোটাও পূরণ হয়নি : কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ হয়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে হজের অর্ধেক কোটাও পূরণ হয়নি। হজে যাওয়ার নিবন্ধনের সময় চার দফা বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি। মানুষের আগ্রহের ঘাটতির ফলে নিবন্ধনের সময়সীমা এবং হজের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্ম সচিব নুরুল ইসলাম জানান, হজ নিবন্ধনের সময়সীমা চার দফা বাড়ানো হলেও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা থাকায় নিবন্ধনে আগ্রহ কম। চতুর্থবারের মতো নিবন্ধনের সময় পার হয়েছে গত ৩০ এপ্রিল। নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না এবং হজের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, এবার বাংলাদেশের জন্যে সৌদি আরবের নির্ধারিত ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮টি কোটার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন মাত্র ৬৬ হাজার মুসল্লি। গত মাসে সৌদি সরকার আমাদের এ বছরের হজ কার্যক্রম এগিয়ে না নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তবে আমরা তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি।
প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই অর্থাৎ ৯ জিলহজ হজ হবে এবার। আগামী ২৩ জুন বাংলাদেশ থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট রওয়ানা হওয়ার কথা ছিলো। তবে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের মহামারির মধ্যে সবকিছুই এখন নির্ভর করবে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর। কারণ ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সৌদি আরব বিদেশিদের ওমরাহ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছিলো আগেই। এখন পুরো দেশ রয়েছে লকডাউনে; মসজিদে জামাতে নামাজ পড়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, এখন সব কিছু করোনা ভাইরাসের ওপর নির্ভর করে। আল্লাহর রহমতে হজ হলে যারা নিবন্ধন করেছেন তারা যাবেন। হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, কোটা পূরণ হয়েছে কী হয়নি সেটা বিষয় নয়। ৬৬ হাজার তো অনেক মানুষ। এখনো হজের বাকি অনেক দিন। আল্লাহ চাইলে তার মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
সম্প্রতি সৌদি কিং আব্দুল আজিজ ফাউন্ডেশন ফর রিসার্চ অ্যান্ড আর্কাইভস ইতিহাসে ৪০ বার হজ বাতিল করা হয়েছিলো বা হজযাত্রীর সংখ্যা অত্যন্ত কম ছিলো উল্লেখ করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। ‘দ্য নিউ আরব’এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমার কোনো লক্ষণ এখনো নেই। ফলে অনেকে হজ বাতিলের আশঙ্কা করছেন। এ ব্যাপারে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষক ড. মুহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ইতিহাসে হজ বন্ধ থাকার নজির আছে। করোনা ভাইরাসের কারণে হজ স্থগিত হওয়া অসম্ভব নয়।
হজ হতে পারে সীমিত: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সৌদি প্রবাসী জানান, সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আরো তিন মাস পরে হজ। হজের সময় সৌদি আরবে তাপমাত্রা ৪৫ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। প্রচ- গরমের কারণে তখন করোনা বিস্তারের আশঙ্কা কম। তবে বহির্বিশ্বে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে বাইরের লোকদের সৌদি আরবে প্রবেশের অনুমতি সৌদি সরকার কোনোভাবেই দেবে না। সে ক্ষেত্রে বাইরের লোকদের জন্য হজ বন্ধ রেখে সৌদি আরবে বসবাসরদের জন্য সীমিত আকারে হজের অনুমতি দেয়া হতে পারে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More