১৫ মাসের শিশুসহ চারজনকে রাতভর থানায় আটক

দামুড়হুদায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় হয়নি মামলা : আটককৃতদের ছেড়ে দিলো পুলিশ

দামুড়হুদা অফিস: দামুড়হুদায় ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ অপচেষ্টার ঘটনায় ১৫ মাসের শিশুসহ চারজনকে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ। মূল অভিযুক্তের ভাগ্নে ১৫ মাসের শিশু, প্রতিবন্ধী বাবা, মা এবং ওইদিন বিকেলে বেড়াতে আসা বোনকেও নেয়া হয় থানায়। তবে আটক করা সম্ভব হয়নি মূল অভিযুক্ত স্বাধীনসহ তার দুই বন্ধুকে। এদিকে, অভিযুক্ত স্বাধীনের বাবা-মাসহ চারজনকে রাতভর থানায় আটকে রাখার পর গতকাল সকালে তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। গতকালই স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ওই নাবালিকা স্কুলছাত্রীর সাথে অভিযুক্ত স্বাধীনের বিয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে দু’পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে পুলিশ বলেছে, স্বাধীনের বাবা-মাকে আটক করা হয়নি, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানায় নেয়া হয়েছিলো। স্কুলছাত্রী মামলা করতে রাজি না হওয়ায় স্বাধীনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে নাবালিকা ছাত্রীর বাল্যবিয়ের বিষয়ে কিছু জানা বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
এদিকে, শীতের রাতে মাত্র ১৫ মাস বয়সি শিশু ও এক প্রতিবন্ধীসহ ৪ জনকে ধরে এনে রাতভর থানায় আটক রেখে সকালে জয়রামপুর এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি থানায় আসার পর নাটকীয় ঘটনা ঘটে। থানা পুলিশ আটককৃত শিশু ও প্রতিবন্ধীসহ সবাইকে থানা ছেড়ে দেয়। সারারাত ১৫ মাস বয়সী শিশু ও প্রতিবন্ধীকে আটক করে রাখায় পুলিশের মানবিকতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গতকাল শনিবার দিনভর দামুড়হুদায় নানামুখি গুঞ্জন শোনা যায়।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদার জয়রামপুরে মামাবাড়িতে থাকা ৭ম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে একা পেয়ে জোরপূর্বক বন্ধু রাহুলের বাড়িতে নিয়ে যায় একই এলাকার ডাবুর ছেলে স্বাধীন। তার বন্ধু রাহুল ও শাকিল বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে পাহারা শুরু করে। স্বাধীন ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অপচেষ্টা চালালে চিৎকার দেয় ওই ছাত্রী। প্রতিবেশীরে ছুটে এলে পালিয়ে যায় স্বাধীন। এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রী দামুড়হুদা মডেল থানায় স্বাধীনসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় স্কুলছাত্রীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই বাকীবিল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত স্বাধীনের ভাগ্নে ১৫ মাসের শিশু, প্রতিবন্ধি বাবা, মা এবং ওইদিন বিকেলে বেড়াতে আসা বোনকে থানা হেফাজতে নেন। রাতভর তাদের থানায় আটকে রাখা হয়। পরদিন অর্থাৎ গতকাল সকালে হাজির হয় অভিযুক্ত স্বাধীন। তবে অজ্ঞাত কারণে মামলা রেকর্ড না করে অভিযুক্তসহ সকলকেই ছেড়ে দেয় থানা পুলিশ। এদিকে, উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড মসজিদের পেছনে কাজী কুতুব উদ্দিনের বাড়িতে ছেলে-মেয়ের বিয়ের হয়েছে। তবে বিয়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কাজী কুতুব উদ্দিন।
স্কুলছাত্রীর দায়ের করা অভিযোগের সতত্যা স্বীকার করে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযোগপত্র পাওয়ার পর অভিযুক্ত স্বাধীনকে আটক করতে থানা পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় অভিযুক্ত স্বাধীন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলে পুলিশ স্বাধীনের বাবা, মা, বোনকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। এ সময় তাদের সাথে একটি শিশুও ছিলো। পরদিন তাদের ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনের বাবা, মা, বোনসহ শিশুকে আটক করা হয়নি। মূলত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। পরদিন সকালে স্বাধীন থানায় হাজির হলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া, অভিযোগকারী স্কুলছাত্রী পরবর্তীতে মামলা করতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্ত স্বাধীনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে ওই স্কুলছাত্রীর সাথে স্বাধীনের বিয়ের বিষয়ে কিছু জানা নেই বলেও দাবি করেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More