গাংনীতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে অস্থায়ী সবজি হাট : ভারি বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি

বৃষ্টিতে ভেসে গেলো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কয়েক লাখ টাকার সবজি ও মাছ

মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা শহরের প্রধান সবজি বাজার এখন পানির নিচে। গতকাল মঙ্গলবার ভরি বর্ষণের জলাবদ্ধতায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। পানিতে ডুবে বিনষ্ট হয়েছে কাঁচা সবজি ও মাছ। অপরদিকে বাজার করতে না পেরে ফিরে গেছে অনেক ক্রেতা। একদিকে বৃষ্টির পানিতে বিনষ্ট অন্যদিকে ক্রেতা ফিরে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে ক্ষুদ্র এ ব্যবসায়ীরা। জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের বিষয়টি মাথায় না রেখে হাট স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে দুই মাস আগে প্রশাসনের নির্দেশনায় গাংনী পৌরসভা অস্থায়ী হাটের কার্যক্রম শুরু হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে গাংনী শহরের প্রাণকেন্দ্রের স্থায়ী হাটটি সরিয়ে ফুটবল মাঠে নেয়া হয়। দুই মাস ধরে এখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চট পেড়ে সবজি ও মাছ বিক্রি করেন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই পূর্বের ন্যায় হাটে বসেন সবজি ও মাছ ব্যবসায়ীরা। কিন্তু দীর্ঘ সময় ভারি বর্ষণের ফলে ফুটবল মাঠে হাঁটু পানি জমে। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোকানের সব পণ্যই নিমজ্জিত হয়। অনেক পণ্য ভেসে পড়ে পানির উপরে। এ যেন্য বন্যা কবলিত কোনো এলাকা। ভারি বর্ষণে হাটের অবস্থা কি হবে সে বিষয়টি মাথায় না রেখে অস্থায়ী হাট বসানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
ক্রেতা-বিক্রেতা কয়েকজন জানান, স্থায়ী হাটের পাশে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা রয়েছে। সেখানে হাট সম্প্রসারণ করা গেলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব পক্ষান্তরে ব্যবসায়ীদের এমন দুর্দশায় পড়তে হবে না।
গাংনী সবজি বাজারের মাছ ব্যবসায়ী নাসির উদ্দীন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দীর্ঘ মাঠ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় কোনোভাবেই আর কেনাবেচা সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর মাছ ফুটবল মাঠের পানিতে লাফিয়ে পড়ে। সেগুলো আর ধরা সম্ভব হয়নি। অনেক ব্যবসায়ী তাদের ক্ষুদ্র দোকান সরিয়ে নিলেও মাছ ও সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবজি বিক্রির টাকাও হারিয়ে গেছে অনেকের।
সবজি বিক্রেতা আব্দুল হান্নান বলেন, বৃষ্টির পানিতে পেঁয়াজ, রসুন ও আলু তলিয়ে যায়। পানি লাগার পরে এ তিনটি পণ্য বেশিক্ষণ থাকে না। আজ এখানকার চার শতাধিক ব্যবসায়ীর কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অস্থায়ী ওই হাটে সবজি কিনতে আসা গাংনী ঈদগাহপাড়ার আব্দুল করিম বলেন, হাঁটু পানির মধ্যে বাজার করতে না পেরে অনেক ক্রেতা ফিরে গেছেন। স্থায়ী হাটের আশপাশে সড়কের পাশে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। সেখানে হাটটি সম্প্রসারণ করলে এমন ক্ষতি ঠেকানো সম্ভব ছিলো। ফুটবল মাঠে হাট স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন করিমসহ অনেক ক্রেতা।
জানতে চাইলে গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহের আগামী হাটের দিন স্থায়ী বাজারের আশপাশে সম্প্রসারণের মধ্যদিয়ে উব্দুদ্ধ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করবো। বিষয়টি গোচারে আনলে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More