হাসপাতালের ওষুধ ভা-ারের দায়িত্ব নিতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার পিয়াসের দৌঁড়ঝাঁপ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিস থেকে সদর হাসপাতালে বদলির জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন আলোচিত স্টোর কিপার হাফিজ বিন ফয়সাল পিয়াস। তিনি চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে স্টোর কিপার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সম্প্রতি হাসপাতালের ওষুধসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদী সরাসরি স্ব স্ব হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ইতোমধ্যে কয়েকবার সিভিল সার্জন অফিস ব্যতিরেকে সরাসরি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর ওষুধ পৌছিয়েছে। তারপর থেকেই সিভিল সার্জন অফিস থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বদলির জন্য বিভিন্নভাবে লবিং শুরু করেছেন।
জানা গেছে, ২০১০ সালে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে স্টোর কিপার হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে চাকরি জীবন শুরু করেন হাফিজ বিন ফয়সাল পিয়াস। তারপর থেকে তিনি একই জায়গায় দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন সময় পিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলেও অজানা কারণে তাকে সেখানেই রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হলেও বহাল তবিয়তে তিনি চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসেই থেকে গেছেন। অভিযোগ রয়েছে, পিয়াস একটি ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকায় কর্মস্থলেও তার প্রভাব বিস্তার করেন। দুদকের অনুসন্ধানেও উঠে আসে তার নাম। এর আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়ায় হাসপাতালের ব্যবহারের অযোগ্য চিকিৎসা সামগ্রী ও উপকরণ ধ্বংস করা নিয়েও আলোচনায় আসেন পিয়াস।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে সরকারি হাসপাতালে বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার করে গরিবের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছিলো দুর্নীতি দমন কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেসময় গঠন করা হয় বিশেষ অনুসন্ধান দল। দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে হাসপাতালের কেনাকাটায় লাগামহীন দুর্নীতির কারণেই স্বাস্থ্যসেবায় চরম দুরবস্থা বিরাজ করছে। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে বিভিন্ন হাসপাতালের সরঞ্জামাদি কেনাকাটায় নানা অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে ছিলো, অর্থ বরাদ্দের আগেই টেন্ডার আহ্বান, মালামাল সরবরাহের আগেই ঠিকাদারের টাকা পরিশোধ, একই ঠিকাদারের বারবার অংশগ্রহণ, ভূয়া ভাউচারে অর্থ আত্মসাৎ, বাজারমূল্যের চেয়ে অস্বাভাবিক বেশি দামে মালামাল কেনা। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেনাকাটার হিসেব খতিয়ে দেখেন তদন্ত কর্তারা। সেসময় দুদকের অনুসন্ধানে শুধু চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নামই নয়, উঠে আসে স্বয়ং সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার হাফিজ বিন ফয়সাল ওরফে পিয়াসের নাম। এর আগে, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে হাসপাতাল পরিদর্শন করে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিনিধি দল। সেসময় বিভিন্ন অনিয়ম লক্ষ করে তা লিখিতভাবে জানানোর জন্য চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন দুদক কর্মকর্তা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের স্টোর কিপার হাদিউজ্জামান স্বপন জানান, আগে সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে ওষুধসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি সদর হাসপাতালের আসতো। এখন সরাসরি হাসপাতালেই আসছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত ৩ বার সরাসরি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের মাধ্যমে ওষুধসহ মালামাল পৌছেছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More