প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার বঞ্চিত জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ার ৪০৩ জন

এনআইডি-ফোন নম্বরে গড়মিল : সংশোধিত তালিকা প্রেরণের নির্দেশ
আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ১৭৯ পরিবারের মধ্যে ৪০৩ জনকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার নগদ আড়াই হাজার টাকা দেয়া সম্ভব হয়নি। তাদের ভোটার আইডিকার্ড ও মোবাইল ফোন নম্বরের গড়মিল থাকায় মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবার মাধ্যমে এ অর্থ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। বঞ্চিত উপকারভোগীর তথ্য সংশোধন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে ৩ দিনের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে সংশোধন করে তালিকা প্রেরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল এ নির্দেশনা পরিপত্র পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার এক জরুরিসভা তলব করে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যদের বঞ্চিত উপকারভোগীদের তথ্য সংশোধন করে জমাদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে দুই হাজার ৫শ’ টাকা উপকারভোগীদের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবার মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে। এ কর্মসূচির আওতায় জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, শিক্ষক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্র ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, হকার ও নি¤œআয়ের নানা পেশার ১ হাজার ১৭৯ জন তালিকা তৈরি করে জমা দেয়া হয়। প্রাপ্ত তালিকায় ৪০৩ জনের ভোটার আইডিকার্ড ও মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশনের সাথে গড়মিল দেখা দেয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবার মাধ্যমে উপকারভোগীদের নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রাপ্ত তালিকায় দেখা গেছে, কেউ কেউ একাধিক মোবাইল নম্বর লিপিবদ্ধ করেছেন। কিন্তু তার কোনো মোবাইল নম্বর রেজিস্ট্রেশনের সাথে ভোটার আইডি কার্ডের নম্বরের মিল নেই। অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ডাটা সংশোধনের জন্য প্রেরিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে উপকার ভোগীরদের প্রদত্ত মোবাইল নম্বরটি জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের বিপরীত নিবন্ধন নয়। সেক্ষেত্র উপকারভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ডের বিপরীতে নিবন্ধনকৃত সকল মোবাইল নম্বর দেয়া আছে। এর মধ্য থেকে উপকারভোগী নিজে ব্যবহার করছেন, শুধুমাত্র এমন মোবাইল নম্বর রেখে বাকি নম্বরগুলো মুছে ফেলতে হবে। কোনো ক্রমেই একাধিক মোবাইল নম্বর দেয়া যাবে না। অন্যথায় আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে। কোনো উপকার ভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্রে বা স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে নিবন্ধনকৃত কোন মোবাইল নম্বর সচল না থাকলে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনে জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে নিবন্ধনকৃত যে কোন একটি সিম সচল করা যেতে পারে। যদি কোনো অর্থ উপকারভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে নিবন্ধনকৃত কোনো মোবাইল নম্বর নেই। সেখানে প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উপকারভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে একটি সিম ক্রয় করে রেজিস্ট্রশন কলামে এন্টি করতে হবে। উপকারভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের নম্বর ও প্রদত্ত জন্ম তারিখ অবশ্যই ভালো করে পরীক্ষা করে সঠিক এনআইডি নম্বরটি, স্মার্টকার্ড নম্বর, জন্ম তারিখ আবশ্যিকভাবে ফরমেটে এন্টি করতে হবে। উপকারভোগীর সঠিক পেশা বেদে, গৃহণী, হিজরা, পথশিশু, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধী, ইমাম, চা শ্রমিক, চা দোকানদার, বস্তিবাসী, ভিক্ষুক, ভবঘুরে ও বেকার এ ১৪টি পেশা ব্যতীত সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে। উপকারভোগীর প্রদত্ত মোবাইল নম্বরটি ১১ ডিজিটের কম বা বেশি দেয়া হয়েছে অথবা সঠিক ফরমেট নেই। সেক্ষেত্রে সঠিক ফরমেট মোবাইল নম্বরটি লিপিবদ্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য প্রদত্ত মোবাইল নম্বরটি অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে নিবন্ধিত থাকতে হবে। কোন উপকারভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে নিবন্ধনকৃত কোন মোবাইল নম্বর সচল বা নতুন মোবাইল সিম সংগ্রহ করা সম্ভব না হলে সে ক্ষেত্রে কোনো ক্রমেই অন্য কারো মোবাইল নম্বর লিপিবদ্ধ করা যাবে না। এনআইডি, স্মার্টকার্ড, জন্ম তারিখ রেজিস্ট্রশন ব্যতীত অন্য কোনো কলামে তথ্য এন্টি বা পরিবর্তন করা যাবে না বলে নির্দেশনা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আন্দুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাথাভাঙ্গা এ প্রতিবেদককে বলেন, তালিকায় রেজিস্ট্রশন বিহীন একাধিক মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। তালিকা সংশোধন করার জন্য ইউপি সদস্যদের সভায় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে এ তালিকায় উপকারভোগীদের তথ্য সংশোধন করে পাঠানো হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More