চুয়াডাঙ্গায় উদ্যোক্তা মেলা পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার

একজন উদ্যোক্তা হওয়া মানেই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার হোটেল সাহিদ প্যালেসে অনুষ্ঠিত উদ্যোক্তা মেলায় দ্বিতীয় দিনে পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেলায় উপস্থিত হয়ে প্রথমে চারটি স্টল পরিদর্শন করেন। পরে মেলার আয়োজক মেনিরা জামান মমীকে নিয়ে কেক কাটা হয়। কেককাটা অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারকে ক্রেস্ট প্রদান করেন মেনিরা জামান মমী। এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, একজন উদ্যোক্তা হওয়া মানে আপনি নিজে প্রতিষ্ঠিত হলেন। যদি আপনারা সফল উদ্যোক্তা হতে পারেন তাহলে আপনার পরিবার প্রতিষ্ঠিত হলো। আপনার মাধ্যমে আরও ৫-৭জন এগিয়ে আসলো ওই ৫-৭ জন স্বাবলম্বী হওয়া। তিনি বলেন, আমাদের ছোট্ট দেশে এতো লোকের চাকরির ব্যবস্থা করা কঠিন। নিজে কাজ নিয়ে করতে হবে। উদ্যোক্তারা স্বনির্ভর। তাই যতবেশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে তত মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। তত আমাদের অর্থনৈতিক সফলতা আসবে। অর্থনৈতিক চাকা গতিশীল হবে। সকল উদ্যোক্তারা সফল হোক। আপনাদের দেখে আরো বেশি বেশি মানুষ এ রকম উদ্যোগ গ্রহণ করুক এবং সফল হোক। তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা মধ্যমায়ের দেশ হচ্ছি, সামনে আমরা উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই সবকিছু সম্ভব হচ্ছে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা এগিয়ে আসছে বলে। আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ১০টি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আজকে আমরা সোনার দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। এই ১০টি উদ্যোগের মধ্যে বিশেষ একটি উদ্যোগ ছিলো নারীর ক্ষমতায়ন। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের তেমন কোনো ভূমিকা ছিলো না। এই ভূমি নিতে হলে তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। সেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষে সকল ক্ষেত্রে কিভাবে নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারে; অবাধে বিচরণ করতে পারে, সেই কাজগুলো করছে। বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের জন্য কোটা সৃষ্টি করা হয়েছে। যাতে সকল চাকরিতে নারীদের অংশগ্রহণ থাকে। শিক্ষাক্ষেত্রে অব্যনৈতিক করা হয়েছে। এই সবকিছু করে আজকে নারীবান্ধব পরিবেশ করা হয়েছে। আগে মেয়েরা রাস্তাঘাটে একা বের হতে ভয় পেতো। তারা একা কোথাও যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারতো না। এখন অবাধে সব জায়গায় চলাচল করছে। সবকিছু সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগের একটি নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, যারা অনলাইনে ব্যবসা করছেন, তাদের কাছে একটি অনুরোধ যেন ক্রেতারা না ঠকে, সেদিকে আপনারা খেয়াল রাখবেন। আপনারা সততার সাথে এগিয়ে যাবেন। আশাকরি আপনাদের মাঝে এই সততা থাকবে। নজরুল ইসলাম সরকার আরও বলেন, আগামীতে ইচ্ছে আছে চুয়াডাঙ্গায় জেলাব্যাপী সরকারিভাবে উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করার। আশাকরি সেই মেলায় সকল উদ্যোক্তদের এক জায়গায় পাবো। আমরা চাচ্ছি আপনারা সফল উদ্যোক্তা হোন। তাহলে আমরা যে মধ্যমায়ের দেশ হচ্ছি আগামী টার্গেট উন্নত বাংলাদেশ। জাতির পিতার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সুখি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার সেই সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা সফল হবো। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ যে উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই কাজ করবো এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
পরে মেলার সকল স্টলগুলো ঘুরে দেখেন এবং উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে খোঁজ খবর নেন। এই মেলায় অধিকাংশ নারী উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে রয়েছে ৩২টি স্টল। প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এ মেলা। মেলায় বুটিক বাটিক, হ্যান্ডি ক্রাফট, শাড়ি, তৈরি পোশাক, কেক, চকলেট, চুড়ি, প্রসাধনী, বই, আসবাবপত্র, খেলানাসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে নারীদের গয়না, থ্রি-পিস, বিভিন্ন বয়সীদের পোশাক, শিশুদের খেলনাসহ বিভিন্ন সামগ্রী সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার ও নারী উদ্যোক্তাদের হাতের তৈরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। মেলার প্রথম দিনে সকাল থেকেই ভীড় জমাচ্ছেন নারী ও শিশুসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। মেলায় সকল পণ্যের ওপর ১০ ভাগ ছাড় দেয়া হচ্ছে। পণ্য কিনলেই দেয়া হচ্ছে লাকি কুপন। শেষ দিন লটারির মাধ্যমে ওই লাকি কুপনের ড্র অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More