আলমডাঙ্গার ঠিকাদার কামাল হত্যার প্রধান আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ঠিকাদার কামাল হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ আরও ৪জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি স্বাধীন। গত ১৯ মে দিনগত রাতে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এজাহার নামীয় মোট ১১ আসামির ভেতর এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৮ আসামিকে।

জানা যায়, বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে পুলিশ নিশ্চিত হয় জেহালার ঠিকাদার কামাল হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ বেশকিছু আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় প্রধান আসামি স্বাধীনের আত্মীয় বাড়িতে অবস্থান করছেন। প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা যাচাই করে গত ১৯ মে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় মামলার প্রধান আসামি আলমডাঙ্গার বামানগর গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে ও জেহালার মৃত  মোতাহার হোসেনের ঘরজামাই স্বাধীন আলী, ৭নং আসামি মৃত মোতাহার আলীর স্ত্রী ইসমত আরা বিউটি, প্রধান আসামি স্বাধীনের স্ত্রী সাইমা নিগার ও ৯নং আসামি মৃত মোতাহার হোসেনের মেয়ে নাইমা নিগারকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে প্রধান আসামি স্বাধীন আলীকে গতকাল চুয়াডাঙ্গায় সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত করা হলে তিনি কামাল হত্যাকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই একরামুল জানান, গ্রেতারের পর স্বাধীনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেটের নিকট নিজেকে হত্যাকান্ডে জড়িত করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ইতোপূর্বে গত ১০ মে কামাল হত্যা মামলার আরও ৪ এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  পূর্বে গ্রেফতার করা হয়েছে হারদী গ্রামের ওবাইদুল ইসলাম খানের ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম স্বপন (৪৭), মুন্সিগঞ্জের মৃত আলাউদ্দীনের ছেলে ও প্রধান আসামি স্বাধীনের ম্যানেজার রফিক, মৃত আলফাজের ছেলে বিমান ও তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে তরিকুল ইসলাম।

একইদিন নিহত কামাল হোসেনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ১১জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

                    এজাহারে উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন প্রধান আসামি মুন্সিগঞ্জের মৃত মোতাহার হোসেনের ঘরজামাই ও বামানগর গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে স্বাধীন, মুন্সিগঞ্জের মৃত সিদ্দিক মিয়ার দুই ছেলে সালাউদ্দীন ও আব্দুস সাত্তার, মৃত মোতাহার আলীর স্ত্রী ইসমাতারা বিউটি, মৃত ঈমান আলীর মেয়ে সাইমা নিগার, মৃত ঈমান আলীর ছেলে  তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।

প্রসঙ্গত, ৯ মে আলমডাঙ্গা জেহালার বিশিষ্ট ঠিকাদার কামাল হোসেনকে (৬৪) পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জমি নিয়ে বিরোধে তাকে গত ২ মে সোমবার দিনগত রাত ১২ টার দিকে এ হত্যাকান্ড ঘটে। নিহত কামাল হোসেন  জেহালা গ্রামের প্রয়াত জাহান আলী মাস্টারের ছেলে। তিনি বিএনপি নেতা ছিলেন। ঠিকাদারী করতেন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে ও পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত  ঘোষণা করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আহসানুল হক বলেন, হাসপাতালে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।

নিহত কামাল হোসেনের স্ত্রী সেলিনা খাতুন জানান, ‘আমার স্বামীর সাথে স্বাধীনের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিলো। গত পরশুদিন স্বাধীন আমার স্বামীকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিলো। মৃত্যুর আগে আমার স্বামী বলে গেছে স্বাধীন তাকে পিটিয়েছে ও কুপিয়েছে।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More