আজ প্রজ্ঞাপন : মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর তাগিদ

চলমান লকডাউন ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ
স্টাফ রিপোর্টার: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সারাদেশে চলমান লকডাউনের বিধিনিষেধ আরও সাত দিন বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সুপারিশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর আগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারসংক্ষেপ তৈরি করা হলেও এবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের আলোকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে আজ রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের কারণে লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে। তবে কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করতে পারে সরকার। করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি নতুন করে এই লকডাউন বাড়ানোর কোনো সুপারিশ করেনি। কমিটি এক্ষেত্রে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দিয়েছে। চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বাড়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা ‘লকডাউন’ হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। প্রথমে ঢিলেঢালাভাবে চললেও পরে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশজুড়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ দেয়া হয়। এর মেয়াদ শেষ হয় ২১ এপ্রিল মধ্যরাতে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে সেটি তিন দফা বাড়িয়ে ২৩ মে পর্যন্ত করা হয়। এবার আরেক দফায় বাড়ছে।
চলমান এই লকডাউনে বন্ধ করে দেয়া হয় বাস সার্ভিস, লঞ্চ, বিমান ও রেল যোগাযোগ। তবে পরবর্তী সময় অর্ধেক আসন খালি রেখে সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস ও অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করা হয়, যা এখনও চলছে। এ ছাড়া কয়েকটি আন্তর্জাতিক রুটেও ফ্লাইট চালু করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামীকাল সোমবার থেকে লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থা। শনিবার ঢাকার সদরঘাটে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দিতে সরকারি প্রণোদনার জন্য গত ৫ মে অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছে, অনতিবিলম্বে তা মালিকদের মাঝে বণ্টনের আহ্বান জানানোসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়। অন্য দাবিগুলো হলো অগ্রিম প্রদত্ত ছয় মাসের ট্যাক্স আনুপাতিক হারে মওকুফ করা, বিআইডব্লিউটিএর বিভিন্ন চার্জ ছয় মাসের জন্য মওকুফ করা, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের ছয় মাসের সার্ভে ফি মওকুফ করা এবং ব্যাংক ঋণের সুদ ছয় মাসের জন্য মওকুফ করা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, সরকারি নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের আগে দোকান মালিক সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেয় সরকার।
সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ সময়ে সরকারের রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব দপ্তর বা সংস্থাগুলো জরুরি পরিষেবার আওতাভুক্ত হবে। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো কেবল খাদ্য বিক্রি বা সরবরাহ করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। ভারতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। ৩১ মে পর্যন্ত স্থল সীমান্ত বন্ধ থাকবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৬ এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত ১৪ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়, যার মেয়াদ শেষ হয় ৯ মে। এরপর দ্বিতীয় দফায় স্থল সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়ানো হয়, যা আজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ অবস্থায় সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ আরও ৮ দিন বাড়ানো হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More