আন্দোলনে নামছে চুয়াডাঙ্গাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠন

স্টাফ রিপোর্টার: উপজেলা পর্যায়ে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ এবং মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধের দুই দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। এ লক্ষ্যে ১১ সদস্যের একটি আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছেন তারা। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুরের ডোমরাকান্দিতে অবস্থিত ব্রাক লার্নিং সেন্টারের হলরুমে দিনব্যাপী এক সভা শেষে বিকেলে তারা সাংবাদিকদের কাছে এ সিদ্ধান্ত জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহ্ আলম মুকুল।

সভায় উপস্থিত বাস মালিক ও শ্রমিক নেতারা বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও বিআরটিসি বাস চলাচল করছে। এতে পরিবহন মালিকদের ব্যবসা এখন গুটিয়ে নেয়ার দশা। এছাড়া হাইকোর্ট থেকে চারবার নিষেধাজ্ঞা জারির পরও মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধ হচ্ছে না। পরিবহন সেক্টরে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হচ্ছে।

তারা অভিযোগ করেন, ছাত্র সংগঠনের ছেলেরা এখন বিআরটিসি বাসের ব্যবসা করছে। আর মহল বিশেষকে মাসওয়ারি চাঁদা দিয়ে চালানো হচ্ছে আলমসাধু, নছিমন, করিমনসহ অন্যান্য থ্রি হুইলারের যানবাহন। অথচ তাদের কোনো কাগজপত্র নেই, নেই গাড়ি চালানোর কোনো অনুমোদন।

‘থ্রি হুইলারের মতোই চলছে বিআরটিসি। তাদের কোনো কাগজপত্র বা অনুমোদন ও লাগে না’ উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, বিআরটিসি চলাচলের আগে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করতে হয়। সেটি বিভাগীয় কমিশনারের অনুমোদন পেলে তবেই বাস চলাচল করতে পারে। কিন্তু এখন আর এসবের কোনো বালাই নেই। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে বিআরটিসি চলাচলের নিয়ম নেই বলেও তারা জানান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন গোপালগঞ্জ জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, যশোর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. বদরুজ্জামান, ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার রাশেদ ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সিদ্দিকী কামরুল, মাদারীপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কামরুল হোসেন তুষু, ফরিদপুর জেলা মিনিবাস মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি শাহীন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. সোবহান চৌধুরী, কুষ্টিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোকবুল হোসেন চৌধুরী লাবলু, মাগুরা জেলা বাস মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান মিলন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, নড়াইল জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মকতুল হোসেন, ঝিনাইদহ জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান খোকন, শরিয়তপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন চুন্নু প্রমুখ।

সভাশেষে ফরিদপুর জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মুকুলকে প্রধান করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়। শাহ্ আলম মুকুল সাংবাদিকদের জানান, বিআরটিসি চলাচলে শৃঙ্খলা আনা এবং হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মহাসড়কে থ্রি হুইলারের যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধের দাবিতে তারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় দীর্ঘ আন্দোলন গড়ে তুলবেন। এজন্য মাসব্যাপী সময় নিয়ে তারা প্রথমে প্রতিটি জেলায় এক ঘণ্টার প্রতীকী মানববন্ধন করবেন। এরপর জেলা পর্যায়ে কমপক্ষে পাঁচটি সমাবেশের পর চূড়ান্ত আন্দোলনে নামবেন। এ আন্দোলন যাতে ফলপ্রসূ হয়- এজন্য এই অঞ্চলের বাস মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে সমন্বয় সাধন করবেন তারা।

তিনি বলেন, বাস ও মিনিবাসের সাথে পরিবহন মালিকদেরও এই আন্দোলনে নামতে হবে। সকলকে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে আমাদের আন্দোলনে নামতে হবে। সবার সম্পৃক্ততার মাধ্যমে বড় আকারে আন্দোলন গড়ে তুলবেন তারা। সভায় ফরিদপুর, যশোর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পিরোজপুর, নড়াইল, ঝিনাইদহ ও মাগুরাসহ ১৬ জেলার বাস ও মিনিবাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More