ঈদের পর লকডাউন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির ৯৬তম রিক্রুট প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন এমপি বলেছেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করলেও ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে লকডাউন আসছে তা কঠোর থেকে কঠোরতর হবে। সে সময় বন্ধ থাকবে গার্মেন্টস, শিল্প-কল কারখানাসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। গতকাল শনিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির সদর দফতরে অনুষ্ঠিত বিজিবির ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি ও মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের কথা চিন্তা করে সরকার লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর মতে, কোরবানিকে ঘিরে আমাদের বিশাল অর্থনীতি রয়েছে। অনেকে গরু প্রতিপালন করেছে। সবকিছু বিবেচনা করে চলাফেরার ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করতে হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যতদিন ভ্যাকসিন দেয়া না হয় ততোদিন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, বর্তমান সরকার দেশে নতুন নতুন এলাকায় রেললাইন স্থাপন করছে। রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা এলাকায় বিমানবন্দর স্থাপনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
এর আগে বিজিবির ৯৬ তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষে সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সালাম গ্রহণ করেন। প্যারেড পরিদর্শন করেন। প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কারও তুলে দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি স্বাধীনতার স্থপতি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কিছু বক্তব্যের উদৃতি তুলে ধরেন এবং বিজিবির সক্ষমতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিজিবি বর্তমানে অনেক দক্ষ, অনেক পরিপক্ক। বিজিবি সদস্যরা নিজেদের সক্ষমতা দিয়ে দেশের সীমান্তের অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ বাহিনীকে আরও আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা বিজিবিতে পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। মেহেরপুরেও বিজিবি ব্যাটালিয়ন সংযুক্ত করে ব্যাটালিয়ন সদর দফতর স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, যশোর রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মসিউর রহমান। অতিথি হিসেবে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার, মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মনসুর আলম খান, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম ও মেহেরপুরের পুলিশ সুপার রাফিউল আলম উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের প্যারেড কমান্ডার হিসেবে মনোজ্ঞ এ প্যারেড পরিচালনা করেন ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের অফিসার ইনচার্জ মেজর নিস্তার আহমেদ এবং প্যারেড অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ইমরান আলী।
সমাপনী কুচকাওয়াজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রতিমন্ত্রী অধ্যপক ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের সাথে আলোচনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ঈদ পরবর্তী লকডাউন কঠোর থেকে কঠোরতম হবে। ২৩ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আসবে গোটা দেশ। টানা ১৪ দিন স্থায়ী হবে এই লকডাউন। তিনি বলেন, গেলো লকডাউনে গার্মেন্ট ও শিল্পকারখানা খোলা ছিলো। কিন্তু ঈদের পরের লকডাউনে গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। সরকারের এমন ঘোষণার পর শিল্পকারখানা বন্ধ রাখলে অর্থনীতিতে ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কা করে উদ্যোক্তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে উদ্যোক্তারা ঈদের পর ঘোষিত বিধি-নিষেধের মধ্যে শিল্পকারখানা খোলা রাখার জোর দাবি জানান। এর মধ্যেই আজ গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানা বন্ধের বিষয়ে সরকারের আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখার কথা জানালেন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ আরো বলেন, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কোনো উপায় নেই। সরকার অনেক খরচ করছে। ওই টাকা দিয়ে দেশের রাস্তাঘাট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা সম্ভব হতো। তা খরচ করতে হচ্ছে করোনা নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু মাস্ক না পরলে সব বিফলে যাবে। সকলকে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More