এসএসসি এইচএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা হবে যেভাবে

স্টাফ রিপোর্টার: গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষার মতো আর পরীক্ষা ছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হবে না। সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করিয়েই এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে। একইভাবে আগামী বছরের (২০২২ সালের) এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে। অন্যদিকে এ বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলো, যদি পরীক্ষা নেয়ার মতো পরিস্থিতি হয় তাহলে পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। অন্যথায় অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে এই পরীক্ষার মূল্যায়ন হবে। করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি এবং খোলার বিষয় নিয়ে গতকাল বুধবার আয়োজিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এবার পরীক্ষা ছাড়াই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পাস দেয়ার সুযোগ কম। দেয়া ঠিকও হবে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বছর সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে ৬০ দিন ক্লাস করিয়ে এসএসসি এবং ৮৪ দিন ক্লাস করিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বছরের (২০২২) এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে। এ জন্য এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১৫০ দিন এবং এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ১৮০ দিন ক্লাস করানোর জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি করা হয়েছে। এছাড়া এসব শিক্ষার্থীর জন্য আগামী জুন থেকে সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। আর জেএসসি পরীক্ষার বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা নেয়ার পরিস্থিতি হলে নেয়া হবে। আর না হয় অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা যায় কি না, সেটা দেখা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ১২ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে পরদিন ১৩ জুন থেকে খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ১৩ জুন উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টিকা দেয়ার ওপর। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ হয়তো আগেই খুলে দেয়া যাবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি হয়তো টিকার ওপর খানিকটা নির্ভর করছে। শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে চাওয়া হয়েছে। তবে ধরে নেয়া যায়, যেহেতু শিক্ষার্থীদের বয়স ৪০-এর নিচে, তাই অধিকাংশই হয়তো টিকা নিতে পারেননি। তবে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিকল্প কী করা যায়, সেটা ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারবে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ২৯ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন তা বাড়ল। করোনাভাইরাসের কারণে ১৪ মাস ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ঘাটতি নিয়ে ওপরের ক্লাসে উঠছে। কতটুকু শিখল, সেটাও যাচাই করা যাচ্ছে না। কয়েক দিন আগে একটি বেসরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ প্রাথমিকের ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিখতে না পারার বা শিক্ষণ ঘাটতির ঝুঁকিতে আছে। এমন অবস্থায় শিক্ষার এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার তাগিদ দিচ্ছেন শিক্ষাবিদরা। তাদের অনেকে যেসব এলাকায় সংক্রমণ নেই বা কম, সেসব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ারও সুপারিশ করেছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More