ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ দাবি মির্জা ফখরুলের

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন খুব সুন্দর সুন্দর কথা বলে থাকেন, বিএনপিকে ধমক দেন, শিক্ষা দেন ও বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। তিনি বলেন, আগে আপনি (কাদের) নিজেদের ঘরে শিক্ষা দিন। কাদের মির্জা আপনার সম্পর্কে যেসব কথা বলেন, দলীয় নেতাদের সম্পর্কে যেসব কথা বলেন এরপর আর তো আপনাদের ক্ষমতায় থাকার কথা নয়। আপনাদের পদত্যাগ করা উচিত। গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সকালে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২২ বছর পর অনুষ্ঠিত কৃষক দলের জাতীয় সম্মেলনে জাতীয় পতাকা ও দলীয় উত্তোলন করা হয়। রঙিন বেলুন ও সাদা কবুতর উন্মুক্ত করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল ও সংগঠনটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু। এসময় জাতীয় সঙ্গীত এবং পরে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। বেলা ৩টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব কাউন্সিল অধিবেশন হয়। এতে সারা দেশ থেকে আসা সংগঠনটির ৫৪৮ জন কাউন্সিলর এবং কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির ১৫৩ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমরা কঠিন সময় পার করছি। একটা সংকটময় মুহূর্ত পার করছি। খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। দেশে তার চিকিৎসা দিনে দিনে অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। নিঃশর্তভাবে তাকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা ৩৫ লাখ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় বসে আছেন, ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে আপনাদের কি তফাৎ তা কি আমাকে একটু বোঝাবেন? পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে আপনাদের কোনো তফাৎ আমি দেখি না। বন্দুক দিয়ে মানুষকে মেরে পাকিস্তানিরা ক্ষমতা দখল করে বসেছিলো। আপনারা একই কায়দায় মানুষ হত্যা করে, নির্যাতন করে, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে যদি বাঁচাতে চান তাহলে অবিলম্বে যা আপনারা করেছেন তার জন্য মাফ চেয়ে দেশের মানুষের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন। পদত্যাগ করেন, নির্বাচন দিন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দেশটাকে পৈতৃক সম্পত্তি করে নিয়েছে। কোনো বিচার নেই। এটাই সমগ্র বাংলাদেশের চিত্র। আমরা দেখেছি, কিভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, সমগ্র দেশটাকে তাদের দলীয় সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে এবং দেশটাকে তারা শোষণ করছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। দেশটাকে লুটেরা স্বর্গ রাজত্ব তৈরি করেছে। উন্নয়নের নামে মেগা লুট করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ ব্যবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে কৃষক দলকে এলাকায় গিয়ে কৃষকদের সংগঠিত করে একটা গণঅভ্যুত্থানের সূচনা করার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব। এ অনুষ্ঠানে কৃষক দলের ১৫৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব।
কৃষক দলের আহ্বায়ক ও দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও সদস্য এসকে সাদীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কৃষক দলের সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, একেএম মোয়াজ্জেম হোসেন, নাজিমউদ্দিন, আফতাব উদ্দিন আহমেদ ম-ল, জামালউদ্দিন মিলন, এমএ হালিম, নাসির হায়দার, মাইনুল ইসলাম, জিয়াউল হায়দার পলাশ, লুৎফুর রহমান, মাহমুদুল হক সানু, শরীফুল ইসলাম মোল্লা, মহসিন আহমেদ তুষার, আনোয়ারুল হক, এনায়েতুল্লাহ খোকন, রবিউল হাসান পলাশ, সালাহউদ্দিন খান মিলকী, নাসিরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, রফিকুল আলম রফিক, মাহবুবুর রহমান আউয়াল, আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন এবং শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন তকদির হোসেন জসিম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহিদুল ইসলাম বাবুল, অনিন্দ্র ইসলাম অমিত, আবদুল খালেক, আমিরুজ্জামান শিমুল, তাঁিতদলের আতুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More