কুষ্টিয়ায় ডিসি এডিসি ও মেয়রসহ করোনায় আক্রান্ত দুই শতাধিক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। দিন দিন করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। কুষ্টিয়ার ডিসি, এডিসি ও মেয়রসহ করোনা রোগী ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ হিসাবমতে, জেলায় করোনা রোগী সংখ্যা ২০৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত শতবর্ষী করোনা রোগী এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। এদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে জেলায় করোনা রোগী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া ২৫০ বেডবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলে গত ১১ জুন বৃহস্পতিবার নতুন আরো ২৪ জনের করোনা পজেটিভ ধরা পড়েছে। এর আগে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সিরাজুল ইসলাম, ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র শামিমুল ইসলাম ছানা, সাংবাদিক তারিকুল হক তারিক ও ২৫ পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। সাধারণ ছুটিসহ জেলায় লকডাউন উঠে যাওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে অবাধ চলাফেরা ও সংক্রমিত লোকের সংস্পর্শে ক্রমাগত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া শহরের দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা-বিক্রেতারা মানছে না স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব। গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে স্বাস্থ্য বিধি না মানার চিত্র আরও ভয়াবহ।
এদিকে সংক্রমিত এলাকার লোকজন এ জেলায় প্রবেশে এখন নেই কোনো পুলিশি ব্যরিকেড কিংবা বাধা-নিষেধ। গত ২২ এপ্রিল কুষ্টিয়ায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ক্রমাগত বাড়তে থাকে করোনা রোগী। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় বর্তমানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৩ জন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৮৫ জন, ভেড়ামারায় ৩৩ জন, দৌলতপুরে ২৯, কুমারখালীতে ২৬, মিরপুরে ১৮ ও খোকসা উপজেলাতে ১২ জন। দিন যতই এগুচ্ছে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ততই বাড়ছে। এভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্মতরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এদিকে ১০ জুন মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শেরকান্দি এলাকার শতবর্ষী বৃদ্ধ মোকাদ্দেস হোসেন (১০১) শ্বাসকষ্টে মারা যান। পরে নমুনা সংগ্রহে তার ধরা পড়ে করোনা পজেটিভ। জেলায় করোনা সংক্রমনে মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম। তবে আক্রান্তদের মধ্যে ইতোপূর্বে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৪ জন রোগী। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ১৬৯ জন করোনা রোগী।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ ও জেলা বিএমএ’র সভাপতি অধ্যাপক ডাক্তার এসএম মুস্তানজিদ জানান, করোনা সংক্রমণে মৃত্যুহার খুবই কম। স্বাস্থ্যবিধি অনুস্মরণ ও সামাজিক দূরত্ব নেমে চললে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা কিংবা ভয়ের কিছু নেই বলে তিনি জানান।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাক্তার এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, জেলায় সর্বমোট ২০৩ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমন রোধ ও বিপর্যয় এড়াতে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণসহ সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More