গৌরব ও মর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আজ

এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ : সারাদেশে বর্ণিল আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার: অপেক্ষার প্রহর শেষে অদম্য বাঙালি জাতির স্বপ্নের দুয়ার খুলছে আজ। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণ ঘিরে সারা দেশে সাজ সাজ রব উঠেছে। ঐতিহাসিক এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ দেবেন অন্তত ১০ লাখ মানুষ। ইতোমধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য, সম্ভাবনা আর উন্নয়নের মাইলফলক হবে এই পদ্মা সেতু। নিজস্ব অর্থে নির্মিত এই সেতু বাঙালির অহংকার।

অদম্য বাঙালি প্রমাণ করেছে, তাদের কাছে কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। পদ্মা সেতু শুধু একটি বড় স্থাপনাই নয়, দেশের আত্মমর্যাদা ও সক্ষমতার একটি প্রতীক। পদ্মা সেতু বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে- বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতার কাছে হার মেনেছে সব ষড়যন্ত্র।

আজ সকাল ১০টায় আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর দুই প্রান্তে জনসভা করবেন তিনি। সেতুর আদলেই তৈরি করা হয়েছে জনসভার মঞ্চ। মঞ্চের ঠিক সামনে পানিতে ভাসতে থাকবে বিশাল আকৃতির একটি নৌকা। দূর থেকে দেখে মনে হবে সেতুর পাশ দিয়ে বড় একটি নৌকা চলছে।

প্রধানমন্ত্রী জাজিরা প্রান্তে ফলক উন্মোচন করে যোগ দেবেন আওয়ামী লীগের সমাবেশে। এ উপলক্ষে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে থাকছে ফলক উন্মোচোন, সুধী সমাবেশসহ বিভিন্ন আয়োজন। আর মাদারীপুরের বাংলাবাজারে উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে। থাকছে জনসমাবেশও। এ জন্য ঘাটের ৮ কিলোমিটার জুড়ে সাত শতাধিক মাইক স্থাপন করা হয়েছে। বিশাল আয়োজনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আমন্ত্রিত অতিথিসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। এজন্য নিরাপত্তার কঠোর বলয়ে রাখা হয়েছে গোটা অনুষ্ঠান। উদ্বোধনের দিন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশ জুড়ে থাকবে উৎসব আমেজ।

এদিকে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে শুক্রবার বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক ‘পদ্মা সেতু’র শুভ উদ্বোধন হচ্ছে জেনে রাষ্ট্রপতি বাণীতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনকে ‘এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত সর্বস্তরের দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, পরামর্শক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য অভিবাদন জানাই। সেতুর দুই প্রান্তের জনগণ জমি প্রদানের মাধ্যমে এবং নানাভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এ মাহেন্দ্রক্ষণে দেশবাসীকেও আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, উদ্বোধনকে ঘিরে পদ্মার দুই পাড়ের মানুষের মনে বইছে আনন্দের বন্যা। পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচনের মধ্যদিয়ে দেশের পর্যটন মানচিত্র পাল্টে যাবে। শুধু কুয়াকাটা নয়, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনও নতুন রূপে জেগে উঠবে। দীর্ঘদিন ধরে নানা ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দেওয়া মানুষের কাছে এক স্বপ্ন পদ্মা সেতু। নৌপথে যাত্রার ভোগান্তির কথা মনে করে পদ্মাপাড়ের মানুষ বলছেন, এবার স্বস্তির দিন আসছে। দীর্ঘদিনের উন্নয়নের স্বপ্ন সত্যি হবে বলে মনে করছেন ২১ জেলার বাসিন্দারা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরদিন ২৬ জুন ভোর ৬টা থেকেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে স্বপ্নের এই সেতুটি। এরপর থেকে সরকার নির্ধারিত টোল দিয়ে সেতুতে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। টোল আদায়ে সেতু এলাকায় বসছে আধুনিক ইলেকট্রনিকস টোল কালেকশন (ইটিসি) বুথ। এর মাধ্যমে চলমান গাড়ি থেকে মাত্র ৩ সেকেন্ডে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায় করা যাবে।

পদ্মা সেতু একটি স্বপ্নের সেতু। যা কেবল দেশের রাজধানী এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করবে না বরং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিতে আনবে নতুন বিপ্লব, বাড়বে কর্মসংস্থান। পদ্মা সেতু ঘিরে বাড়বে পর্যটন সম্ভাবনা। দুই পারে সিঙ্গাপুর ও চীনের সাংহাই নগরের আদলে পর্যটন শহর গড়ে উঠবে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্য বাড়াবে। পায়রা, মংলাবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি করবে। এতে দেশের মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধির আশা দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

পদ্মা সেতু এশিয়ান হাইওয়ে-১ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবেও কাজ করবে, যা এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে এবং উপমহাদেশে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নত করবে। পদ্মা সেতুতে বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত হবে বহুমুখী খাত।

দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় পদ্মা সেতুর সংযোজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের এক অবিস্মরণীয় অবদান। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সক্ষমতা ইতিহাস হয়ে থাকবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত্তি যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি জাতীয় অর্থনীতির চাকাও গতিশীল হবে। দেশি বিনিয়োগের চেয়ে বিদেশি বিনিয়োগ এ অঞ্চলে বেশি আসবে। কৃষি-শিল্প-অর্থনীতি-শিক্ষা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই পদ্মা সেতুর বিশাল ভূমিকা থাকবে। পদ্মার দুই পারে অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে।

সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার: এদিকে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে সারাদেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। থাকছে স্থল, জল ও আকাশপথে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে।

শুক্রবার বেলা ১১টায় মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল পরিদর্শনে এসে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে দুটি উচ্চ প্রযুক্তির ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে, যা প্রথমবারের মতো দেশে ব্যবহার হচ্ছে। আশা করছি, ঐতিহাসিক এই মুহূর্ত উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল পুলিশের কাছে কোনো থ্রেট (হুমকি) নেই। ঐতিহাসিক এই জনসভা ঘিরে প্রতিটি স্থানে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বড় ওয়াচ টাওয়ার দুটি অমেরিকা থেকে সম্প্রতি আনা হয়েছে। শারীরিকভাবে এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়ন করছি এবং প্রতি মুহূর্তে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে গোয়েন্দা সমন্বয় রয়েছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) লিমন রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবচর (সার্কেল) আনিসুর রহমান প্রমুখ।

পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব ও অপপ্রচার ঠেকাতে পুলিশের সব ইউনিটে সাইবার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং চলছে সাইবার ওয়ার্ল্ডে। উদ্বোধনের দিন পদ্মার দুই পারে পুলিশ ও র‌্যাবের সাড়ে পাঁচ হাজার সদস্য পোশাক পরিহিত অবস্থায় মোতায়েন থাকবে। সাদা পোশাকে থাকবে অসংখ্য গোয়েন্দা সদস্য। স্থলপথে পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি থাকছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোয়েন্দা সদস্যরা। জলপথে থাকছে নৌ-পুলিশের চৌকস টিম। ইতোমধ্যেই নৌ-পুলিশ পদ্মা সেতু এলাকায় টহল শুরু করেছে। আকাশপথে র‌্যাবের হেলিকপ্টার দিয়ে পদ্মা সেতুর সার্বিক বিষয়ের ওপর নজর রাখা হবে।

এছাড়া সমাবেশস্থল, টোল প্লাজা, ফলক উন্মোচন ও হেলিপ্যাড এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অনুষ্ঠান চলাকালীন সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, আউটার পেরিমিটার, পেট্রোল, মোটর সাইকেল পেট্রোল, ফুট পেট্রোল, বোট পেট্রোলিং, অবজার্ভেশন পোস্ট, চেক পোস্ট ও প্রতি ইঞ্চি জায়গা সিসিটিভির মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। উদ্বোধনের পর সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গোয়েন্দা নজরদারি ও নিরাপত্তা টহল থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র‌্যাবের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালানো হবে।

এর বাইরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সেতুর দুই পারে র‌্যাবের মেডিকেল টিম নিয়োজিত থাকবে। সেতুর দুই প্রান্তে থাকছে দুটি কন্ট্রোল রুম। কন্ট্রোলরুমের মাধ্যমে সার্বিক বিষয় সমন্বয় করা হবে। চালু করা হয়েছে দুটি কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বর ০১৭৭৭-৭২০০২৯ ও ০১৭৭৭-৭২০০৪৯।

মোবাইল নেটওয়ার্ক জোরদার: অন্যদিকে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে সেতু এবং সেতু এলাকায় মানসম্মত মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে শুক্রবার সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর গৃহীত পদক্ষেপ ও নেটওয়ার্কের মান যাচাইয়ের জন্য তিনি ওই এলাকায় যান।

এ সময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান মাওয়া প্রান্তে সার্ভিস এরিয়া-১ এর কাছে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক যৌথভাবে স্থাপিত একটি স্থায়ী সাইট এবং মাওয়া প্রান্তে গ্রামীণফোন ও টেলিটক স্থাপিত অস্থায়ী সাইট তথা ‘সেল অন হুইল’ পরিদর্শন করেন। পরবর্তী সময়ে সেতুর ওপরে এবং জাজিরা প্রান্তে নেটওয়ার্কের মান যাচাই করেন পরিদর্শক দল। এ সময় অপারেটররা বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে তাদের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন।

তারা জানান, অপারেটররা মাওয়া ও জাজিরার উভয়প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসা সবার জন্য মানসম্মত মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিতে বিদ্যমান সাইট ও অস্থায়ী সাইটে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি, সর্বোচ্চ পরিমাণে তরঙ্গ, ২টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অ্যান্টেনা এবং টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি প্রযুক্তির সক্ষমতা ও ট্রান্সমিশন সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।

প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিলো ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর। আর সেই কাজ সম্পন্ন হয় চলতি বছরের ২২ জুন। সেতুটির নির্মাণ শেষ হতে সময় লেগেছে ৭ বছর ৬ মাস ২৭ দিন। দিনরাত খেটে কাজ করেছেন প্রায় ১৪ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক, প্রকৌশলী ও পরামর্শক। চার হাজার টন জাহাজও পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা দিলে জাহাজেরই ক্ষতি হবে, পিলারের কিছু হবে না। এভাবেই পদ্মা সেতুর পিলার নির্মাণ করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকাসহ বহু জাতিক অর্থ লগ্নিকারী দাতা সংস্থাগুলো দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনে। তারা অর্থায়ন প্রত্যাহার করে নেয়। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। সরকারের দুই সিনিয়র প্রভাবশালী সচিবকে কারাগারে যেতে হয়। দুর্নীতির অভিযোগ শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কানাডার আদালতে মিথ্যা-ষড়যন্ত্র বলে প্রমাণিত হয়।

ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত পদ্মা সেতু। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করেছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More