চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ সারাদেশে থেকে ভার্চুয়াল অংশগ্রহণ

দেশে আর কেউ না খেয়ে থাকবে না

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য উৎপাদনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। কাজেই এদেশে আর কোনদিন কেউ না খেয়ে থাকবে না। বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২০ উপলক্ষে শুক্রবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। সবাইকে নিয়ে একসাথে বিকশিত হোন, শরীরের যতœ নিন, সুস্থ থাকুন’ এ প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ সারাদেশে থেকে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সরকারি কর্মকর্তাগণ ভার্চুয়াল অংশগ্রহন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তাটা যেনো নিশ্চিত থাকে এবং প্রতিটি মানুষের ঘরে যেনো খাবার পৌঁছায় সেজন্য হতদরিদ্রের মাঝে আমরা বিনে পয়সায় খাবার দিয়ে যাচ্ছি এবং এটা আমরা সবসময় অব্যাহত রাখবো। একটি মানুষও যেনো না খেয়ে কষ্ট না পায়। একটি মানুষও আর গৃহহীন থাকবে না।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটি মানুষ যাতে চিকিৎসা সেবা পায় সেজন্য তাদের দোরগোড়ায় আমরা চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিচ্ছি, কেউ পুষ্টিহীনতাতেও ভুগবে না, সেজন্য মায়েদেরকেও আমরা মাতৃত্বকালীন আর্থিক সাহায্য দিচ্ছি, সদ্য প্রসূত মা বা যারা ব্রেস্ট ফিডিং করান তাদেরকেও আমরা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি, বিশাল সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের যে কর্মসূচি রয়েছে তার মাধ্যমেও আমরা আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যের সাথে সাথে যাতে পুষ্টির নিশ্চয়তা হয় এবং মানুষ যেনো সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসুন এই বিশ্বকে আমরা ক্ষুধামুক্ত করি এবং জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আমরা তা অর্জন করতে পারবো।’ তিনি গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সাহসী এবং তারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো ক্ষমতা রাখে। এই করোনার সাথে সাথে ঝড়, বন্যা-সবই আমরা মোকাবেলা করে যাচ্ছি। এভাবে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেই আমাদের বাঁচতে হবে।’ তার সরকারের প্রতিটি কাজের লক্ষ্য কৃষকদেরকে সুবিধা প্রদান করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই যখনই বিশ্বে করেনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে তখনই আমরা খাদ্য উৎপাদনে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিশ্চয়তা বিধানের উদ্যোগ নিয়েছি।’

চুয়াডাঙ্গায় বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২০ উদযাপন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্বখাদ্য দিবসের সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ ইয়া খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনিরা পারভীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহিদুল ইসলাম, চার উপজেলার ইউএনওবৃন্দ, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম, কৃষি সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী ও কৃষি সচিব মেজবাউল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। সভায় এফএও, সচিববৃন্দ, বিদেশী মিশনসমূহ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ, খাদ্য, কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ ও ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকবৃন্দ সংযুক্ত হন। এফএও-৭৫ বছরকে অভিনন্দন জানানো হয়। ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করে বিশ্ব খাদ্যদিবস। বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে এফএও’র সদস্য পদ লাভ করে।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্ব খাদ্য দিবস পালিত হয়েছে। প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্ব খাদ্য দিবস এর উদ্বোধন করেন। এ সময় মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মুনসুর আলম খানের সভাপতিত্বে বিশ্ব খাদ্য দিবসে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার, পিপি পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ প্রমুখ।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর গাংনীতে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ইউএনও সভা কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কে এম শাহাবুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাসেল রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনর (ভূমি) নুর-ই আলম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে পবিত্র কানআন থেকে তেলাওয়াত করেন উপসহকারী কৃষি অফিসার শফিকুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন কৃষকদের প্রতিনিধি হিসেবে সাহারবাটি গ্রামের চঞ্চল, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ, রেজা জুয়েল, সাংবাদিক রফিকুল আলম বকুলসহ কৃষকবৃন্দ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More