স্টাফ রিপোর্টার: ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত জুলাই ও চলতি আগস্ট মাসে দেশে ২৫ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে জুলাই মাসে মারা গেছেন ১২ জন। আর আগস্ট মাসের ১৬ দিনে মারা গেছেন ১৩ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে গতকাল সোমবার বিকেলে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা মহানগর এলাকার রয়েছেন ২৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর বাকি ৪ জনের মধ্যে চট্টগ্রামে ২জন এবং খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে একজন করে মারা গেছেন। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়ে এতোদিন স্বাস্থ্য অধিদফতর বলে আসছিলো, ডেঙ্গু সন্দেহে মৃত্যুর বিষয়টি পর্যালোচনা করতে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। এ বছরের মধ্যে গতকালই ২৫ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হলো। ডেঙ্গু সন্দেহ মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করার বিষয়ে জানতে আইইডিসিআরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, ২০১৯ সালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করার কারণে আইইডিসিআরকে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিলো। এখন পরিস্থিতি আগের মতো নেই। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে এখন থেকে মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করে তা কন্ট্রোল রুম থেকেই নিশ্চিত করা হবে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চললেও ২০১৯ সালে ব্যাপকভাবে এ রোগ ছড়ায়। সে সময় সরকারি হিসেবে লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (গত রোববার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত) নতুন করে ২২১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মাস হিসেবে চলতি মাসের ১৬ দিনেই সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৬৬৩ জন। আর গত জুলাইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৮৬ জন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ১৯৮ জনের মধ্যে ১৮৯ জনই ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২৬ জন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
করোনা পরিস্থিতির ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই বর্ষা মরসুম শুরুর পর ডেঙ্গু প্রকোপও বাড়তে থাকে। এদিকে মশক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিয়মিত মশকনিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাসাবাড়ি ও স্থাপনাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে।
এর মধ্যে গত ১ এপ্রিল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত ৮০ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের। আর উত্তর সিটির স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে জানানো হয়, চলমান চিরুনি অভিযানে ৫০ লাখের বেশি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।