দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে শনিবার বিক্ষোভ-সমাবেশ ও গণঅনশন পালিত হয়েছে। এসব কর্মসূচি থেকে এখনই দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলার দাবি জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার পরও বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির এমন ভয়ংকর কর্মকা- সংখ্যালঘুদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে এ ব্যাপারে সরকারকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের আইনানুগ ব্যবস্থা চলার মধ্যেই আগামী ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজার দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সারাদেশে প্রতিমা ভাঙচুর, পূজাম-প ও মন্দিরে হামলা, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এই উৎসব বর্জনের ডাক দেন তারা। সেদিন সন্ধ্যায় দেশের বিভিন্ন মন্দির ও পূজাম-পগুলোতে কালো কাপড় পরে প্রতিবাদ করার ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক গণঅনশন থেকে দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক দেয়া হয়। এর আগে সকাল থেকে শাহবাগে কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সারাদেশে প্রতিমা, পূজাম-প, মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে গণঅনশন, গণঅবস্থান এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বানে ও আয়োজনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। শাহবাগের কর্মসূচির শেষের দিকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ আগামী ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজার দীপাবলি উৎসব বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আগামী ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে মন্দির, পূজাম-পে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাবিরোধী প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হবে।
চুয়াডাঙ্গায় সারাদেশব্যাপী মন্দির, দূর্গোৎসব, বসতবাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, নারী নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী গণঅনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শহীদ মিনার চত্বরে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ হিন্দু, খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। বাংলাদেশ হিন্দু, খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার শাখার সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার সিংহ রায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত কুমার সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে ইসকনের সাধারণ সম্পাদক অকুল চৈতন্য দাস, দামুড়হুদা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জেমস নিমু মন্ডল, চুয়াডাঙ্গা পৌরশাখার সাধারণ সম্পাদক রাজেশ পাল, সুজন দাস, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র দাস, দর্শনা পৌর কমিটির সভাপতি সমীর বিশ্বাস, বিউটি রাণী কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কিশোর কুমার আগরওয়ালা, দামুড়হুদা উপজেলা কমিটির সভাপতি উত্তম রঞ্জন দেবনাথ, বিপ্র সৃষ্টি নিমাই দাস, শ্যামল কুমার ঘোষ ও জীববনগর উপজেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নারায়ন ভৌমিকসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। গণঅনশন ও অবস্থান কর্মসূচিতে গীতা পাঠ করেন জয়দাস ও বাইবেল পাঠ করেন মথি মন্ডল। গণঅনশন ও অবস্থান কর্মসূচি থেকে বক্তারা অবিলম্বে কুমিল্লা, রংপুর, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ভাংচুর, নির্যাতন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, কুমিল্লার নানুয়া দিঘীরপাড়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাংচুর এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে আলমডাঙ্গায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর শাখা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজনে করে । গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় সত্য নারায়ণ মন্দিরের সামনে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনীন্দ্রনাথ দত্তের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু। জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি প্রশান্ত অধিকারী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী আলহাজ লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক কাজী রবিউল হক, বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিয়া মিলন, সম্পাদক কামাল হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান ফারুক, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুর রহমান পিন্টু, বণিক সমিতির ক্যাশিয়ার আলা উদ্দিন, ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাওলানা ওমর ফারুক, ইমাম আবুল বাশার, শরিয়াতুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, সোহাগ আলী, মারফত আলী, উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি ডা. অমল কুমার বিশ^াস, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ^জিৎ সাধুখাঁ। পৌর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক পলাশ আর্চয্যর উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন পৌর পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল কুমার কালু ঘোষ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন সরকার, রথযাত্রা উৎযাপন কমিটির সভাপতি শুশিল ভৌতিকা, আলমডাঙ্গা মহা-শ্মশানের শবদাহ কমিটির সভাপতি মুক্তি অধিকারী, সম্পাদক মদন কুমার সাহা, লিপন বিশ^াস, স্বপন দত্ত, পবন, প্রসাদ ঘোষ, অসিম কুমার সাহা, হারান অধিকারী, বিজয় কুমার সিহি, সজন সাহা প্রমুখ।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More