নতুন আতঙ্ক সীমান্ত নিয়ে : ভারতফেরত অনেকের দেহে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট

অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ঢুকে অনেকেই মিশে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ভিড়ে

স্টাফ রিপোর্টার: করোনাভাইরাস সংক্রমণে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলো। প্রায় সব জেলায় বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। সারাদেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণ হারের গড় এখন ১০ শতাংশের নিচে থাকলেও সীমান্তের কয়েকটি জেলায় এরই মধ্যে ৫০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই করছে। অবৈধভাবে ভারতফেরত অনেক বাংলাদেশির দেহে পাওয়া গেছে ভাইরাসটির ভারতীয় ভেরিয়েন্ট। এছাড়া অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে মানুষ। এদের কেউ কেউ বিজিবির হাতে আটক হলেও অনেকে মিশে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ভিড়ে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তের জেলাগুলোতে। এসব জেলার মাধ্যমে সারা দেশে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঈদের পর থেকে সীমান্তের জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লালমনিরহাট, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর মেহেরপুর, সিলেট, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুড়িগ্রামসহ সীমান্তের বিভিন্ন জেলায় ভারতফেরত অনেকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের অনেকের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেলেও বড় অংশেরই জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধিকাংশ জেলায় ল্যাব না থাকায় করোনা পরীক্ষায় ফলাফল পেতে ১০-১২ দিন লেগে যাচ্ছে। এর পর ভারতফেরত করোনা রোগীদের ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করতে নমুনা পাঠাতে হচ্ছে ঢাকায়। অনেক সময় দুই সপ্তাহেও সেই ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সঠিক সময়ে ভেরিয়েন্ট শনাক্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। এসব রোগীর চিকিৎসা দিতে স্বাস্থ্যকর্মীরাও ঝুঁকিতে আছেন। এ ছাড়া কাঁটাতারবিহীন সীমান্ত দিয়ে যারা অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন, তাদের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে না। এর মধ্যে ভারত থেকে সংক্রমিত হয়ে আসা ১১ জন করোনা রোগীর যশোর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে ছিল ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বাহকও। পরে তাদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা হয়। এসব কারণে সীমান্ত নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ থেকে ১৬ মের তুলনায় ১৭ থেকে ২৩ মে এক সপ্তাহে ২২ জেলায় নতুন রোগী বৃদ্ধির হার শতভাগ বা তার বেশি। এর মধ্যে ১৫ জেলাই সীমান্তবর্তী। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণ হার ছিল ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। আগের দিন বৃহস্পতিবার এই হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। তবে রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার সব শেষ ফলাফলে সংক্রমণ হার ছিল ৪৬ শতাংশ, নাটোরে ৪১ শতাংশ, নওগাঁয় ৫০ শতাংশ, শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। এর মধ্যে মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণ হার ছিল ৬১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ওই দিন থেকে জেলাটিতে বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহজুড়ে কুষ্টিয়ায় ১৩-১৬ শতাংশ, মেহেরপুরে ১৮-২০ শতাংশ, সিলেটে ১৮-২০ শতাংশ, দিনাজপুরে ১৪-১৫ শতাংশ সংক্রমণ হার বজায় রয়েছে।
ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরতে শুরু করার পর থেকে চুয়াডাঙ্গায় করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ আবদুল আলিম জানান, গত ১২ দিনে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে বৈধ পথে ৭০১ জন বাংলাদেশে ফিরেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, গত ১৩ থেকে ২০ মে সাত দিনে জেলায় ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অপর দিকে ২১ থেকে ২৮ মে সাত দিনে জেলায় ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, ভারত থেকে দেশে ফেরা নাগরিকদের মধ্যে ১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থাকতে পারে সন্দেহে তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের হার মেহেরপুরে প্রতি একশ জনে ১৮-২০ জন। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে প্রতিদিনই চোরাচালানিরা যাতায়াত করছে। এরপর তারা মিশে যাচ্ছে লোকালয়ে। তবে বিজিবির দাবি, সীমান্তে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে, অবৈধভাবে যাতায়াতের সুযোগ নেই। মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত ৮২ জন ভারতফেরত এখানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা তিনজন ও বৈধ পাসপোর্টধারী আটজনসহ মোট ১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের সময় বিজিবির হাতে তিন দফায় ৩৮ জন আটক হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ। জানা যায়, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সামন্তা, খোশালপুর, লড়াইঘাট, মাটিলাসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অবাধে মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। লেবুতলা গ্রামের বাসিন্দা জব্বার আলী বলেন, আমার বাড়ি একদম বর্ডারের সাতে। এখানে ২ কিলোমিটার কোনো তারকাঁটা নেই। রাতের আঁধারে লোকজন আসছে। বিজিবি কিছু ধরতে পারে। অনেকেই পালিয়ে যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সীমান্ত লাগোয়া জেলা কুষ্টিয়ায় ঈদের পর থেকে করোনা রোগী বাড়ছে। ভারত থেকে বৈধ পথে দেশে ফেরার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন জেলার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে দেশে ঢুকেছেন বলে জানা গেছে। উপজেলার ভাগজোত গ্রামের বিদুছ ম-ল (৪০) গত ২১ মে মহাম্মদপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করার সময় বিজিবির হাতে আটক হন। এ ছাড়া গত ১৫ দিনে উপজেলার ভাঙাপাড়ার রিয়াজুল ইসলাম (৩০), মুন্সিগঞ্জের মতিউর রহমান মতি (২৭), মহিষকু-ী মাঠাপাড়ার কালু ও লিটনসহ আরও বেশ কয়েকজন গোপনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাড়ি ফিরেছেন। জেলায় গত এক সপ্তাহে (২০-২৬ মে) ১২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অথচ আগের সপ্তাহে শনাক্ত হয় ৫০ জন। গত শনিবার থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ভারত থেকে কুষ্টিয়ায় ফিরেছেন ১৪৭ জন। এর মধ্যে তিনজন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। এসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা এখনো হয়নি বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই পরীক্ষা কেবল ঢাকাতেই সম্ভব। কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে লোক এসে নমুনা নিয়ে যাবে। সিভিল সার্জন বলেন, ১০দিন আগে শনাক্তের হার ছিল ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে। সেটি এখন ১৩ থেকে ১৬ শতাংশে ঠেকেছে।
যশোর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভারত থেকে আসছেন। ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আসা পাঁচজনের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। গত ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড থেকে ১০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী পালিয়ে যান, যাদের মধ্যে সাতজনই ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আসা। ভারত থেকে করোনা সংক্রমিত হয়ে আসা ইউনুস আলী নামে আরও একজন ১৩ মে পালিয়ে যান। তার দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছিল। পরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করে আবার ১১ জনকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পর গত ১৭ মে ভারতফেরত এক দম্পতির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ১৯ মে ভারতফেরত তিনজনসহ ২২ জন, ২০ মে ৩২ জন, ২১ মে আটজন, ২৪ মে ৩৬ জন, ২৫ মে ৩৬ জন, ২৬ মে ভারতফেরত দুজনসহ ২৪ জন এবং ২৭ মে ২১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চারজনের করোনা পজিটিভ ছিল। বাকি ছয়জনের করোনা উপসর্গ ছিল। নমুনা পরীক্ষার আগেই মারা যান। মৃতদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচজন, রাজশাহীর তিনজন ও নাটোরের একজন। এদিকে রাজশাহীতে সংক্রমণ হার বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর ২১৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সংক্রমণ হার ছিল ২১ দশমিক ৭ শতাংশ। বুধবার দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ শতাংশে। বৃহস্পতিবার বেড়ে হয় ৪৬ শতাংশ। এ ছাড়া নাটোরের ৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জন ও নওগাঁর ৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নাটোরে শনাক্তের হার ৪১ শতাংশ এবং নওগাঁয় ৫০ শতাংশ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষ লকডাউনের কারণে করোনা শনাক্তের হার কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। লকডাউনের প্রথমদিন জেলায় ২১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ৬১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এর পরের দিন বুধবার ৫৪ জনের মধ্যে ২৬ জনের, বৃহস্পতিবার ১০২ জনের মধ্যে ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিকে গত ১৯ মে থেকে গতকাল পর্যন্ত সোনামসজিদ চেকপোস্ট দিয়ে আসা ৮২ জন ভারতফেরত বাংলাদেশির মধ্যে একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সিভিল সার্জন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরীক্ষায় পিসিআর ল্যাব না থাকায় নমুনা রাজশাহী ও ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। এতে ফলাফল আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। রবিবার থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ব্যবস্থা চালু হবে।
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, করোনা নেগেটিভ সনদপত্র বা ভ্যাকসিন গ্রহণের কার্ড দেখানো ছাড়াই হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রবেশ করছে শত শত ভারতীয় ট্রাকচালক ও তাদের সহযোগীরা। তারা দুই থেকে তিন দিন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এ কারণে আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা। এদিকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১৯ মে থেকে এ পর্যন্ত ১১৫ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে তিনজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১১ জনের জিনোম সিকোয়েন্স নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, তবে এখনো ফলাফল পাওয়া যায়নি।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী জেলা লালমনিরহাটের বুড়িমারী সীমান্ত পথে সম্প্রতি চিকিৎসা করতে যাওয়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দুই পরিবারের পাঁচজন সদস্য বাংলাদেশে আসেন। তাদের মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করতে তার নমুনা ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভারতীয় ট্রাকচালক ও হেলপারদের দেশে প্রবেশ ও ভারত থেকে আসা বাংলাদেশিদের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পুরো জেলায়। এছাড়া লালমনিরহাটের বেশ কিছু এলাকাজুড়ে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় ভারত থেকে সহজেই অনেকে লালমনিরহাটে প্রবেশ করছে বলে জানা গেছে। লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, গত দুই সপ্তাহে লালমনিরহাটে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। গত ২ সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জন করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি বুড়িমারী স্থলবন্দরের মাধ্যমে ২৯১ জন ভারতফেরতের মধ্যে ১৩৪ জনের পরীক্ষা করে নয়জনের শরীরে ভাইরাস পাওয়া গেছে। এরা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কিনা তা জানতে নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সিলেট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সিলেট বিভাগের সবকটি স্থলবন্দর ও শুল্কস্টেশন দিয়ে ভারত থেকে যাত্রী আসা-যাওয়া বন্ধ থাকলেও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চোরাকারবারিরা। চোরাচালানিরা ভারতের ভিতর ঢুকে গরু, কাপড়, কসমেটিক্সসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসছে। সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত জানান, ঈদের পর সংক্রমণ বেড়েছে। গেল এক সপ্তাহ ধরে সিলেটে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ শতাংশের উপরে। আগে এর চেয়ে কম ছিল। এদিকে, যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরা সিলেটের এক নারীর শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। ১২ মে সিলেটে তিনি মারা যান। তার সান্নিধ্যে আসা পরিবারের আরেক সদস্যের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। মৃত নারী ও শনাক্ত হওয়া আত্মীয়ের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছিল। ১৬ দিনেও এর ফলাফল জানতে পারেনি সিলেট স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তারা।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসা ২৯২ জনকে কুমিল্লার বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। কুমিল্লার সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসেন বলেন, ভারতফেরতদের নমুনা সংগ্রহ পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে এ পর্যন্ত যত জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তাদের করোনা নেগেটিভ এসেছে। তবে যেহেতু সীমান্তবর্তী ১৫ উপজেলায় আক্রান্তের হার বাড়ছে, সেহেতু কুমিল্লা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More