মাঠ প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে আনাই ইসি’র বড় চ্যালেঞ্জ

সাবেক সিইসি-কমিশনারদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কমিশনার ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও মতামত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ৩ জন সাবেক সিইসি, ৪ সাবেক কমিশনারসহ মোট ১৪ জন অংশ নেন। সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মোট ২৯ জনকে। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের ভূমিকা, তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম, এনআইডি’র দায়িত্ব স্থানান্তরসহ নানা বিষয় আলোচনায় উঠে আসে। বৈঠকে অংশ নেয়া সাবেক সিইসি, কমিশনার ও কর্মকর্তাদের অনেকে নির্বাচনের সময় প্রশাসনের ওপর ইসির নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এ বিষয়ে তারা বিভিন্ন পরামর্শও দেন। তারা বলেছেন, মাঠ প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব নয়। এজন্য এখন থেকেই যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে। তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে নানা ধরনের মত এসেছে। গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ সঠিক ছিল বলে মত দিয়েছেন অনেকে। আবার ইসি’র এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষেও মতামত এসেছে। নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি দেয়ার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্রে দেয়ার বিষয়ে নেতিবাচক মতামত এসেছে।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সবার আগে দেখতে হবে প্রশাসন নিরপেক্ষ কিনা। এটি তো এখন স্পষ্ট। প্রশাসন নিরপেক্ষ ছিল না বলে গাইবান্ধার নির্বাচনটা বন্ধ করতে হয়েছে। সামনে যত নির্বাচন হয় নিরপেক্ষ না হলে নির্বাচন কমিশন বন্ধ করে দিতে পারে। এটি তাদের ক্ষমতায় আছে। এমনকি জাতীয় নির্বাচনও তারা বন্ধ করতে পারে। এখন যে পরিস্থিতি তাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকে বাগে আনা বা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই বিষয়গুলো অনেকে ইসিকে বলেছেন।

বৈঠক শেষে বিচারপতি আব্দুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, ইসি কর্মকর্তারা নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা বলেছি, দরকার হলে বার বার নির্বাচন বন্ধ করবেন। জাতিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করবেন। আব্দুর রউফ বলেন, যখন ভোটাররা ভোট দিতে পারেন না। একজনের ভোট আরেকজন দেয়, তখন নির্বাচন কমিশন বসে থাকবে কেন? স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের এই অধিকার (নির্বাচন বন্ধ করে দেয়ার) আছে। তাদের চোখের সামনে ধরা পড়েছে, ভোট দিতে পারছে না, কারচুপি হচ্ছে। তারা নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে।

মাগুরার নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনায় কেন ব্যবস্থা নিতে পারেননি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। পেছনের ঘটনা টেনে এনে জাতিকে আর অন্ধকারে ফেলবেন না। ইভিএম প্রশ্নে আব্দুর রউফ বলেন, কমিশন চেষ্টা করতে থাকুক। মানুষ যদি শিক্ষিত হয়, তাহলে হবে। এনআইডি’র বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বিভিন্ন অফিসে থাকতে পারে। এতে অসুবিধা নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যেহেতু এর প্যারেন্ট, মূলটা তারাই ইনিশিয়েট করবে। এটা তাদের কাছে না থাকলে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে যদি দেখেন এনআইডিতে একটা ভোটার লিস্টে অন্যটা, তখন আরেকটা গ-গোল লাগবে। আমার কথা হলো- বেইজটা ইসি’র হাতে থাকবে। অন্যদের লাগলে সেটা নেবে।

সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মুহাম্মদ সাদিক জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকে অনেক আলোচনা করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য টিম ম্যানেজমেন্টের বিষয়টি এসেছে। কারণ নির্বাচন করতে ৭ থেকে ১০ লাখ মানুষ কাজ করবেন। তারা প্রজাতন্দ্রের কর্মচারী। নির্বাচন কমিশন তাদের মাধ্যমে নির্বাচন করবে। তাই তাদের ব্যবস্থাপনা, তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং যোগাযোগ এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দূরত্ব আছে বলে মনে করেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা বলা যায় না। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় তো সামনে আসছে। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে। তাদের সঙ্গে বসতে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের সম্পর্ক বাড়ানো এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলেছি। গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধের বিষয়ে অনেকে পজেটিভ বলেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, ৫১টি কেন্দ্রে গোলযোগ হয়েছে বাকিগুলো বন্ধ হলো কেন? যাই হোক কমিশন বন্ধ করেছে তার আইনের মধ্যেই। সাবেক সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বডি। সংবিধান ও আইন মোতাবেক তারা কাজ করে যাবে, আমরা এই পরামর্শ দিয়েছি।

ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে প্রচার-প্রচারণা করতে হবে। এর সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। তারা বলেছেন নতুন ইভিএম খুবই উন্নতমানের। অলমোস্ট ডিজিটাল। কিন্তু এটা তো লোকজনকে জানতে হবে। এটা নিয়ে ইতিবাচক প্রচারণার দরকার আছে।

এনআইডি প্রসঙ্গে কাজী রকিব উদ্দিন বলেন, ভোটার তালিকা থেকেই এনআইডি এসেছে। এনআইডি ইসি’র কাছে না থাকলে লোকজন ভোটার হতে চাইবে না। মানুষের ভোটার হওয়ার ততটা আগ্রহ নেই। এখন এনআইডি’র জন্যই আগ্রহ বেশি। এই অ্যাডভান্টেজটা এখান থেকে সরানো উচিত নয়। এতে গ-গোল হতে পারে।

গাইবান্ধা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশন যেটা নিয়েছে ঠিকই নিয়েছে। বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার এই ক্ষমতা আছে। তারা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে নতুনভাবে আর তথ্য-উপাত্ত জোগাড় করার দরকার নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমাদের সময় যেভাবে রিপোর্ট আসতো, সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হতো। রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। এই কমিশন সিসিটিভিতে পর্যবেক্ষণ করেছে। তার আলোকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মাঠ প্রশাসনে ভালো একটি সমন্বয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক করতে হবে। তাদেরকে নির্বাচনী কাজে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহার না করে সিসিটিভি ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ভালো হোক মন্দ হোক-আপনাদের ইভিএম নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। যে বাজেটে ১৫০ আসনের জন্য ইভিএম কিনবেন, তার থেকে বেটার যতখানি পারেন সিসিটিভি ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। যেটা করেছেন সেটা ঠিক আছে। তবে পরের ধাপগুলোতে যেন সিøপ না করেন। যদি সিøপ করেন, তাহলে জাতির কাছে অন্য রকমের মেসেজ যাবে যে, আপনারা দেখানোর জন্য করেছেন, বাকিটুকু করলেন না। আইন শক্ত অবস্থানে। পি¬জ ডু ইট। নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে- পরিবেশ ঠিক নেই তাহলে নির্বাচন বন্ধ করতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত মনে করবেন, পরিবেশ ঠিক নেই, ততক্ষণই বন্ধ রাখতে পারবেন। আইনে কোথাও বাধা নেই।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এর আগে কোনো কমিশন কিন্তু এটা করতে পারেনি। ১৯৯৪ সালে যদি এটা করা হতো, তাহলে আজকে পলিটিক্যাল ফিল্ডটি অন্যরকম হতো। হতে পারতো ইতিহাস। নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে জানিয়ে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপনাদের নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী যাদের নিয়ে নির্বাচন করবেন, আগে তাদের আত্মবিশ্বাসী করতে হবে। যাতে তারা মনে করে আপনারা জাতীয় নির্বাচনে তাদের সুরক্ষা দিবেন। বরিশালে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, ইসির উচিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সমর্থন দেয়া।

এম সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এনআইডি কেন নিতে চাইছে জানি না। এতে ভবিষ্যতে ভোটার তালিকা নিয়ে জটিলতা তৈরি হবে। সরকারকে বোঝালে তো বোঝে। কারণ এই সরকারের আমলে আমরা ভোটার তালিকা করেছি।

সাবেক সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, মাঠ প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ হলো জেলা প্রশাসক। নির্বাচনে তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করে। সুতরাং তাদেরকে এড়িয়ে চলে নির্বাচন সফল হবে না। মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সম্পর্কের যে অবনতি হলো, সেটি দ্রুত ঠিক করতে হবে এবং ডিসিদেরকে শক্তিশালী করার জন্য আইন-কানুন করতে হবে। কারণ, তারাই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে। তারা যাতে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে পারে সেজন্য সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।

গাইবান্ধার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈঠকে অনেকে গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেছে, আবার অনেকে বলেছে ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য ছিল-অনিয়মের কারণে যে কেন্দ্রগুলো ওনাদের দৃষ্টিতে বন্ধ করা হয়েছিল, সেগুলো ঠিক আছে। কিন্তু যেগুলো ওনাদের নলেজের বাইরে ছিল কিন্তু অনুমানের উপর ভিত্তি করে বন্ধ করা হয়েছে সেটি ঠিক হয়নি। এটা তো ভোটারদের সঙ্গে অবিচার করা হলো।

সংসদ নির্বাচনে ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো অযৌক্তিক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এটা সম্ভব না। কিছু সিলেকটিভ আসনে সিসি ক্যামেরা বসানো যেতে পারে। গাইবান্ধা একটি আসনে বলে বসানো সম্ভব হয়েছে, কিন্তু ৩০০ আসনে বসানো সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না।

নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, মাঠ প্রশাসনে যারা কাজ করে তারা নির্বাচন কমিশনের লোক। তারা নির্বাচন কমিশনের হয়ে কাজ করে। তাদেরকে প্রটেকশন দেয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তিনি মনে করেন, ঢালাওভাবে ডিসি-এসপিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া ঠিক না। নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে যে অর্থ দেয়া হয় সেটি পর্যাপ্ত না। লোকাল এলাকার সমস্যাগুলো ইসি বসে থেকে বুঝতে পারার কথা না। ডিসি-এসপিদেরকে দাওয়াত করে এনে এভাবে ঢালাও অভিযোগ করা ঠিক না।

নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, আমরা আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া প্রসঙ্গে পরামর্শ দিয়েছি। নির্বাচনে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব ব্যবহারের কথা বলেছি। আর ইভিএম অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। এনআইডি নির্বাচন কমিশনের কাছেই থাকা ঠিক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের সেটআপ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এনআইডি নির্বাচন কমিশনের কাছেই থাকা উচিত। এজন্য বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে সরকারকে জানাতে হবে।

বৈঠক শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি, ওনারা বলেছেন- এটা সঠিক হয়েছে। আইনগতভাবে ও সাংবিধানিকভাবে ঠিক হয়েছে। ওনারা আমাদের মুরব্বিজন, গুরুজন হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন-সততার সঙ্গে, সাহসিকতার সঙ্গে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে। সিইসি বলেন, আজ আমাদের পক্ষ থেকে আমরা কোনো বক্তব্যই দেইনি, তাদেরকে শুনেছি। সার্বিক কথা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More