রাজধানী ছেড়ে আসা মানুষের ভিড় দৌলতদিয়ায় : পণ্যবাহী গাড়ির লাইন

স্টাফ রিপোর্টার: কঠোর লকডাউন ঘোষণার খবরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী মানুষের ছুটে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষজন প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফেরিতে গাদাগাদি করে নদী পাড়ি দিচ্ছে। করোনা ঝুঁকি নিয়েই বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রখর রৌদ্রের মধ্যে গন্তব্যে ছুটছে। দূরপাল্লার পরিবহন না চলায় নদী পাড়ি দিয়ে মানুষ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা, মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এদিকে লকডাউন ঘোষণার কারণে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্যবাহী গাড়ির চাপও বেড়েছে। অন্যান্য দিন সময় অল্পসংখ্যক ফেরি দিয়েই ঘাটে আটকে থাকা যানবাহন পারাপার স্বাভাবিকভাবেই করা হয়েছে। তবে রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত গাড়ি আসতে থাকায় পণ্যবাহী গাড়ির দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অপেক্ষা করে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যানবাহনের সঙ্গে মানুষে ঠাসাঠাসি। বিপরীত দিকে রাজধানীগামী ফেরিতেও যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীরাও ছুটছে। ফেরিঘাটে ব্যক্তিগত গাড়ির সঙ্গে পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে অল্প সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ফেরিতে ওঠার সুযোগ পেলেও পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। লাইনে দীর্ঘক্ষণ থাকতে গিয়ে অনেক চালক, সহকারী গাড়িতেই ক্লান্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ছেন।
পণ্যবাহী গাড়িচালক রমজান মাতবর বলেন, রোববার বিকেলে রওনা করে সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ পৌঁছুলে পুলিশ আটকে দেয়। সারা রাত গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে রাখার পর সোমবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাটের জন্য ছেড়ে দেয়। এখানে এসেও দীর্ঘ সময় নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে চিৎিসক দেখিয়ে ঝিনাইদহ বাড়ি ফিরছিলেন এক দম্পতি। ফেরিতে নদী পাড়ি দিয়ে আসার পর আলাপকালে ওই গৃহবধূ বলেন, ‘গত শনিবার ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাসে পাটুরিয়ায় আসছি। দুই সিটে একজন বসার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। অথচ ভাড়া দিতে হয়েছে দ্বিগুণ।’
সাভার নবীনগর থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত ৯০ টাকার ভাড়া ২৫০ টাকা দিয়ে দিতে হয়েছে রাকিব মাতবরকে। লকডাউনের কথা শুনে তিনি বাধ্য হয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলার বাড়িতে ফিরছিলেন। কিন্তু সারা রাস্তায় যেভাবে ভিড় সামলে এলেন, তাতে মনে হয়ে করোনা নিয়ে আসতে হয়েছে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মাহাদুজ্জামান জ্যোতি বলেন, করোনার কারণে কলেজ বন্ধ। কিন্তু কোচিং খোলা থাকায় ঢাকায় ছিলেন। এখন লকডাউনের কারণে তাও বন্ধ হওয়ায় মাগুরার বাড়িতে ফিরছেন। ফেরির ভেতর কী অবস্থা জানতে চাইলে বলেন, ‘মানুষের ভিড়ের কারণে ফেরির ছাদে উঠেছিলাম। কিন্তু সেখানেও ভিড়ের কারণে পা ফেলানোর জায়গা নেই।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ফিরোজ শেখ বলেন, লকডাউন ঘোষণায় মানুষজন ঈদের মতো নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন। অন্যান্য দিন সকালে যানবাহনের চাপ তেমন না থাকায় ফেরিও কম চলেছে। অথচ রোববার দিবাগত রাত থেকে যানবাহনের চাপও অনেক বেড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত যানবাহনের চাপ না কমায় সব কটি ফেরি চালু রয়েছে। এরপর সকালে একটি বড় ও আরেকটি ছোট ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটিতে বসে পড়ায় বাড়তি চাপ সামাল দিতে হচ্ছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More