র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের বিস্ময়ে বিস্মিত যুক্তরাষ্ট্র

স্টাফ রিপোর্টার: মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর অনেক বার শুনেছি যে, বাংলাদেশ এতে কত অবাক হয়েছে। সম্ভবত আমরাও বিস্মিত তাদের বিস্ময় দেখে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কিন দূতাবাসের নতুন অনুষ্ঠান অ্যামটকের উদ্বোধনী পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে এমন বিস্ময়ের কথা জানান পিটার হাস। সাক্ষাৎকারভিত্তিক এ অনুষ্ঠানে পিটার হাসকে প্রশ্ন করেন দূতাবাসের মুখপাত্র কার্লা টমাস। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন, বাণিজ্য ও দু’দেশের মানুষের মধ্যকার সম্পর্কসহ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করেন উপস্থাপক থমাস। তিনি জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন এবং এ নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা। জবাবে পিটার হাস বলেন, বিষয়টির বেশ কয়েকটি দিক আছে। আমার মনে হয় মানুষ র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। চলমান অন্যান্য সহযোগিতার বিষয়গুলো ভুলে যাচ্ছে। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর অনেক বার শুনেছি, বাংলাদেশ এতে কত অবাক হয়েছে এবং সম্ভবত আমরাও প্রায় বিস্মিত তাদের বিস্ময় দেখে। কারণ ২০১৮ সালেই আমরা র‌্যাবকে প্রশিক্ষণ দেয়া বন্ধ করেছিলাম। কারণ মানবাধিকার নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ছিল। রাষ্ট্রদূত বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা আমাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমরা বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও এটি তুলে ধরেছি। ফলে নিষেধাজ্ঞাটা বিস্ময় হিসেবে এলেও, আমাদের যে উদ্বেগ ছিল সেটি নিয়ে বিস্ময় থাকার কথা নয়। পিটার হাস বলেন, আমরা পারস্পরিক সহযোগিতাও করি। আমরা এরই মধ্যে সেনাবাহিনী নিয়ে কিছু কথা বলেছি। আমরা কিন্তু সব ধরনের বিষয়ে সহযোগিতা করি। আইন প্রয়োগ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে। এসব বিষয়ে আমাদের খুব গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে। আমরা বিচারবিভাগ ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেই। আর পুলিশের জন্য আমাদের অনেক প্রশিক্ষণ রয়েছে। আমরা যে এত প্রশিক্ষণ ও অংশীদারিত্ব করছি ভবিষ্যতে তা চালিয়ে নিতে ও আরও গভীর করতে আমরা খুবই আগ্রহী।

র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না জানিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে, এতে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা। আমি শুধু তাদেরকে বলি, এমন হতে হবে তা আমি মনে করি না। আবারও বলছি, অনেক বিস্তৃত ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে আমরা পরস্পরকে সহযোগিতা করি। এটি তাদের মধ্যে একটি।

তিনি বলেন, আমাদের এই সম্পর্কে অন্য দ্বন্দ্বও রয়েছে। এত গভীর ও বিস্তৃত সম্পর্কের মধ্যে এটি থাকাই স্বাভাবিক। যেমনটি আমাদের মধ্যে আছে। কিন্তু আমি উভয়কে যা করতে দেখতে চাই তা হলো, র‌্যাবসহ অন্য প্রতিটি বিষয়ে একসঙ্গে বসা ও কথা বলা। দু’দেশের অংশীদারিত্ব বিষয়ে হাস বলেন, অংশীদারিত্বের বিষয়টিকে বাংলাদেশ যত দ্রুত এগিয়ে নেবে। আমরাও ঠিক ততটা দ্রুত এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পছন্দ নেই। আমাদের কোনো ভোট নেই। আমরা কোনো দল বা প্ল্যাটফর্ম বা কোনো কিছুরই পক্ষ নেই না। সেটি আমাদের ভূমিকা নয়। তবে আমরা যা দেখতে চাই তা মনে হয় বাংলাদেশের সব মানুষই দেখতে চায়। তা হলো, আন্তর্জাতিক মানদ- মেনে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি নির্বাচন। যেখানে বাংলাদেশের মানুষ তাদের পরবর্তী নেতাদের বেছে নিতে পারবে একটি অবাধ, প্রতিযোগিতামূলক, সহিংসতাহীন প্রক্রিয়ায় ও যা দমন-পীড়ন মুক্ত থাকবে। আমরা এ জিনিসটিই বেশি করে দেখতে চাই।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More