লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক বৈঠকে বাংলাদেশের স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে : দুদু

স্টাফ রিপোর্টার: লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে এক উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেছে এবং বাংলাদেশের স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জনতার অধিকার পার্টির উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেছেন, লন্ডনের এই বৈঠক বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা ছিল। এবং এই বৈঠক স্বর্ণ অক্ষরে লেখা থাকবে। এই মিটিং বাংলাদেশের স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে উৎসাহিত করেছে, আনন্দিত করেছে যে আগামীতে গণতন্ত্র সঠিক পথে এগিয়ে যাবে। দুদু বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেই গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পাবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া। গত ১৫ বছর দেশের জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থী ও পছন্দের মার্কায় ভোট দিতে পারেনি। ভারতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ নির্বাচনকে আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বৈধতা দিয়েছে। সেই পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মুখোশধারী গণতন্ত্রের দাবিদার। সেই দেশ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক শক্তি। সেই দেশ সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় ৬ বছর কারাগারে ছিলেন। এই গণঅভ্যুত্থান না হলে ওনাকে জীবিত ফেরত পেতাম কি না জানি না। মহান আল্লাহ তাআলা তাকে হেফাজত করেছেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের একটি শুভ সূচনা। কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের যেসব গণতান্ত্রিক দল আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, প্রতিটি দলই নির্বাচন চায়। কেউ আগে চায়, কেউ পরে চায়। কিন্তু নির্বাচন চায় নাÑএমন দল বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আমরা উত্তেজিত হচ্ছি। আলাদা পার্টি, আলাদা রাজনীতিÑভিন্নতা তো থাকতেই পারে। বাংলাদেশে মধ্যমপন্থী, উত্তর-দক্ষিণ, ইসলামপন্থীÑসব ধরনের দল আছে। কিন্তু গণতন্ত্রের প্রশ্নে সবাই একমত। নির্বাচনের প্রশ্নে সবাই একমত। সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।
গণতন্ত্রের জন্য যারা শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে-তাদেরকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে না, মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য গত ১৫ থেকে ১৬ বছর বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলোর নেতা-কর্মীরা শহীদ হয়েছে, গুম হয়েছে, জেল খেটেছে। শুধু বিএনপি-ই প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মী খুন-গুমের শিকার হয়েছে। গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অনেক শহীদ হয়েছে, এখনো অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি। তাদেরকে এত সহজেই ভুলে গেলে চলবে না। তাদের চাহিদা কী, আকাক্সক্ষা কী-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। সেই জায়গায় তাদেরকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, কারী তাহের, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে. এম. রকিবুল ইসলাম রিপনসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More