লাইফ সাপোর্টে গণতন্ত্র নির্বাচন আইসিইউতে : ইসি মাহবুব

স্টাফ রিপোর্টার: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া আক্ষরিক অর্থে নির্বাচন নয় বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দিয়ে আগের মতো উন্মুক্ত রাখার মতো দিয়েছেন এ কমিশনার। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য পৃথক একটি স্থানীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ গঠন করা যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। রোববার নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব তালুকদার এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন এখন আইসিইউতে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে গণতন্ত্র এখন লাইফ সাপোর্টে।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। গতকাল মাহবুব তালুকদার ব্রিফিংয়ের পরদিনই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন হচ্ছে। গতকাল ইসির ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তাকে সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেন সিইসি।
নির্বাচনে হতাহতের বিষয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে রক্তাক্ত নির্বাচন বললে অত্যুক্তি হবে না। ভোটের সময় ও তার আগে-পরে এ পর্যন্ত ৩৯ জন নিহত হন। জীবনের চেয়ে নির্বাচন বড় নয়-এই বার্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছুতে সম্ভবত ব্যর্থ হয়েছি। তিনি বলেন, গত ১১ নভেম্বর ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৮০ জন চেয়ারম্যান পদে আসীন হন। একে আক্ষরিক অর্থে নির্বাচন বলা যায় না। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, সেখানে নির্বাচন নেই। ইউপি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে না হয়ে আগের মতো সবার জন্য উন্মুক্ত হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বে আদর্শ নির্বাচনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কুমিল্লার লাকসাম ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা। আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পাওয়ায় লাকসাম উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেন। অন্যদিকে রাউজান উপজেলায় ১৪ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ১২৬ জন পুরুষ ও ৪২ জন সংরক্ষিত আসনের সদস্য সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হয়েছেন। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো উপজেলায় চেয়ারম্যান ও সদস্যের ১৮২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন না হয়ে ‘নির্বাচিত’ হন। নির্বাচনে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী বা প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নির্বাচন ছিল খুবই শান্তিপূর্ণ। সারা দেশে যদি সন্ত্রাসমুক্ত এ ধরনের নির্বাচন করা যায়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের বদলে একজন সচিবের অধীনে একটি সচিবালয় থাকলেই যথেষ্ট।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More