জাতির পিতার খুনিদের পাশে যারা ছিল তারাও দোষী: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার খুনিদের পাশে যারা ছিল, যারা হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে, সবাই সমানভাবে দোষী। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় একথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ঘটনা (জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা) যারা ঘটিয়েছে, পাশে যারা ছিল, আর যারা এভাবে ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে, সবাই কিন্তু সমানভাবে দোষী। ‘আমি আরও অনেক ঘটনা জানি। কিন্তু আমি শুধু আগে হত্যার বিচার করাটা খুবই জরুরি ছিল, সেটা করেছি। ধীরে ধীরে একদিন কারা জড়িত সেটাও বের হবে এবং সেদিনও খুব বেশি দূরে না।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তার দুই মেয়ে শেখ হসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। দুই যুগ পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার শুরু হয়। সেই বিচারের রায় এবং দ-িত অধিকাংশের দ- কার্যকর হলেও হত্যার পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল বলে বরাবরই বলা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটনে মহামারী শেষেই একটি কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই ৭২ সাল থেকেই কিন্তু ষড়যন্ত্র শুরু। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি হলো, জাসদ সৃষ্টি হলো, যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর, যারা বড় বড় নেতা ছিল, তারা তো পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে অনেকেই চলে গেছে। যারা এদেশে ছিল তারা কোথায় গেল? তারা যেন হঠাৎ উধাও হয়ে গেল? তারা সব গিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির সাথে মিশে গেল। ‘আর আমাদের দেশের সেই সময়ের পত্র-পত্রিকা যদি পড়েন আপনারা বেশিক্ষণ খোঁজার দরকার নেই। তখনকার বক্তব্য সেগুলো একটু খুঁজে বের করেন। অনেক খবর আপনাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।’ স্বাধীনতার এক বছর না যেতেই বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা শুরু এই ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। ‘কারা লিখেছিল? কাদের খুশি করতে? কারা এই হত্যাকা-ের জন্য একটা অবস্থা তৈরি করছিল?’ জাতির পিতার খুনি আব্দুর রশীদ ও সৈয়দ ফারুক রহমানের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘তাদের একটা চেষ্টা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার। সেইভাবে অনেক অপপ্রচার চালিয়েও তাকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরাতে পারেনি। সরাতে পারেনি বলেই তারা এই হত্যাকা-টা ঘটিয়েছে।’ জাতির পিতার খুনিদের বিচার ও পলাতকদের অবস্থান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও যারা কয়েকজন পলাতক, তার মধ্যে ডালিম পাকিস্তানেই আছে তখন থেকে। রশীদ পাকিস্তান এবং লিবিয়া এই দুই জায়গায় থাকে। মাঝে মাঝে ডালিম কেনিয়াতেও যায় বা অন্যান্য দেশে যায়। সে পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়েই চলে। আর রাশেদ, নূর, একজন কানাডায়, আরেকজন আমেরিকায় আছে। মোসলেহউদ্দিন তার খোঁজ মাঝে মাঝে পাওয়া যায়, মাঝে মাঝে পাওয়া যায় না।’
আজীবন সংগ্রামী বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র গঠনে যখন আত্মনিয়োগ করেছিলেন, তখনই ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হয় বলে জানান শেখ হাসিনা।
‘যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে; খুবই স্বাভাবিক স্বাধীনতাবিরোধী দেশের ভেতরে ও বাইরে বা যাদেরকে আমরা যুদ্ধে পরাজিত করেছি এবং তাদের দোসর, তারা এটা মেনে নিতে পারেনি। সেখানেই তারা প্রতিশোধটা নিতে চেয়েছিল। সেই প্রতিশোধ এই পনেরই অগাস্ট।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More