ভোট নিয়ে অ্যাকশনে নির্বাচন কমিশন, মেহেরপুরসহ তিন জেলার ডিসিকে চিঠি

 

স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লা সিটি, পৌরসভা ও শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ঘিরে দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচন মাঠ। নতুন নির্বাচন কমিশন ভোট নিয়ে অ্যাকশনে রয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনে একাধিক এমপিকে সতর্ক করা হয়েছে। ভোটের বিষয়ে অভিযোগ পেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি। এছাড়া নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে চলতি মাসে তিন দফা সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ৯ জুন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং ১২ জুন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপের বসার তারিখ ঠিক করা হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লা সিটি নির্বাচন শেষে ১৭ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার গতকাল বলেন, ৯ জুন পর্যবেক্ষক সংস্থা, ১২ জুন সাবেক সিইসি-নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং ১৭ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে আমরা ডাকবো। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত মার্চ থেকে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করছে। ইতোমধ্যে শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট নাগরিক, পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।

ভোট নিয়ে অ্যাকশনে ইসি : ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলার বারাদি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থককে মাথায় আঘাত করে জখম, নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের প্রার্থীকে নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কর্তৃক ইভিএমের ভোট সম্পর্কে ফেসবুকে অপপ্রচারের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে তিন জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক চিঠিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। আগামী ১৫ জুন এসব এলাকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসককে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সদর উপজেলার বারাদি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের পাশে নৌকা প্রতীকের পোস্টার লাগালে আনারস প্রতীকের সমর্থকরা নৌকা প্রতীকের সমর্থকের মাথায় আঘাত করে জখম করে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক যাচাই করে প্রকৃত ঘটনা, দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন পাঠাতে সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নরসিংদীর ডিসিকে পাঠানো নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, মনোহরদী উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আনারস সমর্থনকারী লোকজনের বাড়িতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে ও প্রচারণায় যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। এতে সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কে ভুগছেন এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। পাশাপাশি সব প্রার্থী যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণপূর্বক নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও নির্দেশনা দিয়েছেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরী ঘোষণা দেন, ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে বাটন টিপতে না পারলে টিপে দেয়ার জন্য নিজের লোক রাখবেন। একই সঙ্গে ইভিএম না থাকলে রাতেই সব ভোট নিয়ে ফেলতেন এমন বক্তব্য বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানা যায়। বিষয়টি তদন্তপূর্বক যাচাই করে প্রকৃত ঘটনা, দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠানোর জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More