স্টাফ রিপোর্টার:১৯৭১ সালের ‘গুড্ডি’ সিনেমার সেটে প্রথম পরিচয়, পরে প্রেম এবং শেষে সাতপাকে বাঁধা পড়েন বলিউড শাহেনশাহ অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ও অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। এর মধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবন ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে। তবে অমিতাভের জীবনে জয়াই প্রথম প্রেম ছিল না। ঘটনা মোড় নেয় প্রথম সিনেমা ‘সাত হিন্দুস্তানি’ শুটিংয়ের পর। এ সিনেমাটি ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায়। অমিতাভ বচ্চন অভিনেত্রী জয়াকে বিয়ে করেন ১৯৭৩ সালে। মাঝখানে অভিনেতার জীবনে আসে এক অপরূপ মায়া।
সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেল মেরি সখীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তারকাদের জীবনীকার হানিফ জাভেরি জানিয়েছেন, মুম্বাইয়ে পা রাখার আগেই কলকাতায় কর্মজীবন শুরু করেন অমিতাভ। সেখানে অভিনেতার জীবনে এসেছিলেন এক তরুণী— তার নাম মায়া। কিন্তু ‘সাত হিন্দুস্তানি’ সিনেমা মুক্তির আগেই তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, তখন অমিতাভ বচ্চন কলকাতায় কাজ করতেন। মাসে আয় হতো ২৫০-৩০০ রুপি। সেই সময় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে কর্মরত ছিলেন মায়া। অমিতাভ তাকে ভীষণ ভালোবাসতেন, আর মায়াও তাকে ভালোবাসতেন।
হানিফ জাভেরি বলেন, পরে সিনেমায় চান্স পাওয়ার আসায় মুম্বাই গিয়ে তিনি প্রথমে উঠেছিলেন জুহুর এক বাংলোয়। এটি ছিল মা তেজি বচ্চনের এক বন্ধুর বাড়ি। সেখানে মায়া প্রায়ই যেতেন। কিন্তু একই বাড়িতে মায়ের সেই বন্ধু থাকায় সম্পর্ক ফাঁস হয়ে যাবে ভেবে অমিতাভ ভয় পেতে শুরু করেন। এবং পরে তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে দেন।
এ জীবনীকার বলেন, মুম্বাইতে গিয়ে এ সময় অমিতাভ কাজ করছিলেন তার প্রথম সিনেমা ‘সাত হিন্দুস্তানি’-তে, যেখানে সহশিল্পী ছিলেন কৌতুক অভিনেতা মাহম্মুদের ভাই আনোয়ার আলি। নিজের দুশ্চিন্তার কথা আনোয়ারকে জানালে, তিনি বিষয়টি বুঝে অমিতাভকে থাকার জায়গা দেন। এটি ছিল মাহম্মুদের দেওয়া একটি অ্যাপার্টমেন্ট, যেখানে কিছু দিন ছিলেন অমিতাভ।
হানিফ জাভেরি বলেন, মায়া ও অমিতাভ কিছু দিন সেখানে একসঙ্গে ছিলেন। এমনকি বিয়েও হতে পারত। কিন্তু তখন অমিতাভের ক্যারিয়ার স্থিতিশীল ছিল না। তিনি খুব লাজুক মানুষ ছিলেন, আর মায়া ছিলেন খানিকটা ধূর্ত। কে পাশে বসে আছেন, তা তোয়াক্কা না করেই তিনি অমিতাভের সঙ্গে কথা বলতেন, মাঝে মধ্যে বকাঝকাও করতেন। আনোয়ার আলি ও অমিতাভের বন্ধুরা বিষয়টি ভালোভাবে নিতেন না, আর অমিতাভও এতে অস্বস্তি বোধ করতেন।
হানিফ জাভেরি আরও বলেন, গোয়ার শুটিংয়ে থাকাবস্থায় আনোয়ার অমিতাভকে বলেন মায়ার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দিতে। তার মনে হয়েছিল, মায়া বচ্চন পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে না। আর সিনেমায় এগোতে চাইলে সমস্যা বাড়তে পারে। অমিতাভও মনে করলেন কিছু একটা ঠিক নেই। শেষ পর্যন্ত তিনি ধীরে ধীরে দূরে সরে যান এবং বিচ্ছেদ হয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.