চুয়াডাঙ্গার মেয়ে চুমকির সাম্প্রতিক ভাবনা

মঞ্চে অভিনয় করেছেন ‘নিত্যপুরাণ’ আর ‘সীতার অগ্নিপরীক্ষা’ নাটকে। টেলিভিশনে ‘গহরগাছি’ নাটকে অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন নাজনীন হাসান চুমকি। এ সময়ের মধ্যে অভিনয় করেছেন, নাটক লিখেছেন, পাশাপাশি পরিচালনাও করেছেন। ১৮ শতকের ইতিহাস নিয়ে ‘জিন্দাবাহার’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করার পর ঢাকার প্রতি তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। তখন সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রী লুৎফা, কন্যা উম্মে জোহরা, খালা ঘসেটি বেগম, মাতা আমেনা বেগম সশস্ত্র প্রহরী নিয়ে চাঁদপুর হয়ে ঢাকায় আসেন। ঢাকার জিঞ্জিরায় আসার পর শুরু হয় তাদের নির্মম জীবনযাত্রা। কারণ ইংরেজরা ততদিনে মুর্শিদাবাদ জয় করে ঢাকা দখলের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে নবাব পরিবারকে ঘিরে প্রতিনিয়ত জন্ম নিতে থাকে নানা ঘটনা। ইতিহাসনির্ভর এই নাটকের কাহিনি লিখেছেন মামুনুর রশীদ। বিটিভির জন্য নাটকটি পরিচালনা করছেন ফজলে আজিম জুয়েল। এতে চুয়াডাঙ্গার মেয়ে নাজনীন হাসান চমুকিকে দেখা যাবে ঘসেটি বেগমের ভূমিকায়। তিনি বললেন, এই চরিত্রে কাজ ভীষণ চ্যালেঞ্জের। নাটকে দেখানো হয়েছে, ঘসেটি বেগম কেন এত সমালোচিত, কেন লোভী ও আসক্ত।
নাজনীন নাহার চুমকি এখন টিভি নাটকের চেয়ে মঞ্চেই বেশি ব্যস্ত। ঢাকা থিয়েটার ও দেশ নাটক মঞ্চে আনছে নতুন নাটক ‘পেন্ডুলাম’। মাসুম রেজার রচনায় এটি নির্দেশনা দিচ্ছেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। নগর প্রেক্ষাপটের এই নাটকটি একজন সাধারণ মানুষের বদলে যাওয়ার গল্প। এতে দুটি নারী চরিত্রে অভিনয় করছি আমি। এই নাটকে আরও অভিনয় করছেন আফজাল হোসেন। ক’দিন আগে ঢাকার একটি পত্রিকার তরফে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতকার নেয়া হয়। জানতে চাওয়া হয় ‘দাহকাল’ ছবির কাজ কি শেষ হয়েছে? ২০১৮ সালের শেষে এর কাজ শুরু হয়। অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ করেছি। ধ্রুব হাসানের পরিচালনার এ ছবির কাজ এখন বন্ধ রয়েছে।
অভিনয়ের প্রতি এতটা নিবেদিত থাকার পরও চলচ্চিত্রে আপনাকে কম দেখা যায় …
তিনি বললেন, মনের মতো চরিত্র না পাওয়ায় চলচ্চিত্রে খুব বেশি কাজ করিনি। গল্প বা চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় অনেক ছবি ফিরিয়ে দিয়েছি। দেখা গেছে, বেশিরভাগ নির্মাতা ভাইবোন, বন্ধু-বান্ধবীর মতো চরিত্র ছবিতে রাখছেন, যারা ছবিতে মোটেও গুরুত্ব¡পূর্ণ নয়। অভিনয়েরও তেমন সুযোগ নেই। যে জন্য আমারও কাজ করা হয়ে ওঠেনি।
অনেক দিন ধরে পরিচালনায় নেই। কারণ কী?
নিজের প্রয়োজনমতো শিল্পী যেমন পাচ্ছি না, তেমনি পর্যাপ্ত বাজেটও পাচ্ছি না। টাকা না থাকলে চরিত্রের প্রয়োজনে যাকে দরকার, তাকে নেয়া সম্ভব নয়। অন্যদের দিয়ে হয়তো করা যাবে, কিন্তু সেটা সময়সাপেক্ষ। কী হলে একজন নির্মাতা নাটক নির্মাণ করতে পারবেন। কার কাছে যাবেন তিনি। এজেন্সির কাছে, চ্যানেলের কাছে, না নিজের যোগ্যতায়। কোথায় যাওয়া উচিত। এটা চিন্তা করে এখনও কুলিয়ে উঠতে পারি না। তবে পরিচালনা করব না, তা কিন্তু নয়। যদি কোনো চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রযোজক আমাকে যোগ্য মনে করে কাজ দেন, তাহলে করব। ধরনা দিয়ে নাটক করা মোটেও সম্ভব নয়।
পরিচালনার ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছিলেন কেন?
আমি থিয়েটারের সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করতাম। সেটা কেবল অভিনয় নয়, কস্টিউম বা সেটের কাজ অথবা যে কোনো কিছু। থিয়েটার জায়গায়টা এমন যে, এখানে মনের মিল না থাকলে একসঙ্গে কাজ করা যায় না। যাদের সঙ্গে কাজ করতাম, তাদের সবার সাথে মনের মিল ছিল। সেজন্য কখনোই ভাবতে হয়নি, আমাকে টিভিতে কাজ করতে হবে। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে আমাকে টিভি আর সিনেমায় কাজ করতে হয়েছে। এগুলোর কোনোটাই পরিকল্পনা করে করা হয়নি। একটা কাজই পরিকল্পনা করে করেছিলাম, তা হলো পরিচালনা। আমার জানা ছিল, মিডিয়ায় কাজের ক্ষেত্রে একটা সময় আমাকে থামতে হবে। সেটা আমার বয়সের কারণে। তখন কী করব? বসে তো থাকব না। সেই চিন্তা করেই ডিরেকশনে এসেছিলাম। কর্মক্ষেত্রে মানুষের যেমন পদোন্নতি হয়, তেমনি এটাকেও আমি এক রকম পদোন্নতি হিসেবে দেখি। কারণ বয়স বাড়লে আমাকে চিন্তা করে তো কেউ নাটক লিখবে না। আমিও সব চরিত্রে অভিনয়ের যোগ্য নই। তাই আমি পরিচালনাকে অন্য পেশা হিসেবে নিয়েছি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More