চুয়াডাঙ্গায় পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলকসভা জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম কুরবানির পশুর হাটে জালনোট শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার: ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন যাতে শান্তিপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে সকলকে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। এটা কর্তব্যেরই অংশ। কোরবানির পশু জবাইয়ের পর যাবতীয় বর্জ্য দ্রুত অপসারণ করতে হবে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ওয়ার্ড ও মহল্লা ভিত্তিক নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই করতে হবে। নিজ নিজ দায়িত্বে পরিবেশ পরিষ্কার করতে হবে। হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। পশুহাটগুলোতে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা ও জাল টাকা কারবারিসহ অজ্ঞানপাটির অপতৎপরতা রোধে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হয়। আসন্ন ঈদুল আযহা উদযাপনের প্রস্তুতিমূলক সভার সভাপতি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম উপরোক্ত আহ্বান জানান। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমানের উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গত সভার কার্যবিবরণীর অংশ বিশেষ তুলে ধরেন। তারই আলোকে এবারও পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপনে প্রস্তুতি নেয়া হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন হাদি জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাইফুল্লাহ, জীবননগর নির্বাহী অফিসার মো. আল-আমীন, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিথি মিত্র, কৃত্রিম প্রজজনের উপ পরিচালক ডা. শামিমুজ্জামান, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মাসুদুর রহামান সরকার, জেলা সঞ্চয় অফিসার নজরুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অ.দা.) মাকসুরা জান্নাত, চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারি পরিচালক এস এম জাকির হোসেন, শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা ফেরদৌস, জেলা তথ্য কর্মকর্তা শিল্পী মন্ডল, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার সাহা, টিটিসির অধ্যক্ষ মো. মুছাবেরুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সরকারি সকল দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সকল পশুহাটে পশুর সুস্থতা যাচাই করতে হবে। দেশের বাহির হতে অবৈধভাবে গবাদি পশু আসা বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সকল পশুহাটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা। সকল পশুহাটে কুরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ে হাসিলের হার নির্ধারণ করা। নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানির পশু জবাই নিশ্চিত করারজন্যসকলপৌরসভা/উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ হতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ এবং দ্রুততম সময়ে বর্জ্য অপসারণ করা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদের সহায়তায় ইমামদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কুরবানির উপকারিতা ও প্রয়োজনীয় তার বিষয়ে জনসচেতনতা মূলকপ্রচারণা করা। যথাযথ ভাবে পশু কুরবানি, চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ। কুরবানির পশুর হাটে জালনোট সনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণকরার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সংশ্লিষ্ট ঈদগাহ মসজিদ কমিটি আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঈদ জামাতের সময় নির্ধারণ/পরিবর্তন করতে পারবে। ঈদের জামাত যথাসম্ভব বড় করা এবং ক্ষুদ্র জামাতগুলোকে একসাথে করে বড় জামাতে পরিণত করার এবং বৃষ্টি হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঈদগাহ কমিটিকে অনুরোধ করা। জেলার কর্মসূচির সাথে মিল রেখে স্ব-স্ব উপজেলার কর্মসূচি গ্রহণসহ ঈদের জামাতের সময়সূচি নির্ধারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে অনুরোধ জানানো হয়। কারাবন্দীরা যেন কারাগারের অভ্যন্তরে জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেল সুপারকে অনুরোধ করা হয়। জেলা শহরের ঈদের জামাতের সময়সূচি ও পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উদযাপনের জন্য গৃহীত কর্মসূচি ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থাকরার জন্য জেলা তথ্য অফিসারকে অনুরোধ করা হয়। পৌর ঈদগাহ ময়দান, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান (চাঁদমারীমাঠ) সহ সকল ঈদগাহ ময়দানে সংশ্লিষ্ট ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি মাইক সরবরাহ করবেন মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চলাচল বিঘœ ঘটিয়ে তোরণ নির্মাণ না করা এবং প্রধান সড়কের দুই পাশে যানবাহন এলামেলোভাবে পার্কিং না করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো হয়। পবিত্র ঈদ-উল-আযহার নামাজের স্থানগুলোসহ শহরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করার জন্য পুলিশ সুপারকে অনুরোধ জানানো হয়। ঈদের আগের রাতে ও ঈদের ছুটিতে বিনোদনের নামে নাচ-গান, মাইকিং, উচ্ছৃঙ্খলতা, পটকা, আতসবাজি, রাস্তায় বিশৃঙ্খলভাবে মটর সাইকেল চালানো, গেট নির্মাণ করে টাকা বাচাঁদা আদায় বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারকে এবং এ সংক্রান্ত নির্দেশনা গুলো ব্যাপক ভাবে প্রচারের জন্য জেলা তথ্য অফিসারকে অনুরোধ করা হয়। ঈদের পূর্বরাতে ঈদের জামাতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটির পক্ষে মাইকিং করা যাবে, অন্য কোন বিষয়ে মাইক ব্যবহার করা যাবে না মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে যানবাহনে যাতে অতিরিক্ত ভাড়া বা যাত্রী নিতে না পারে সে দিকে বিশেষ নজর দেয়ার জন্য পুলিশ সুপার ও বিআরটিএর সহকারী পরিচালককে অনুরোধ জানানো হয়। পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে কেন্দ্র করে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহারযোগ্য লবণের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা। কুরবানির বর্জ্য অপসারণে পবিত্র পদ-উল- আযহার পূর্বে পৌরসভার অর্ন্তগত ট্রেনসমূহ পরিষ্কার করাসহ কুরবানি পরবর্তী বর্জ্য দ্রুত অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চুমাডাঙ্গা পৌরসভাকে অনুরোধ জানানো হয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.