চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে দোয়া ন্যায় বিচার সামাজিক মূল্যবোধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়

স্টাফ রিপোর্টার: সারা দেশে গতকাল ‘জুলাই শহিদ দিবস’ উপলক্ষ্যে শোক দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসটিতে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোসহ সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। জুলাই শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রার্থনার। এর আগে সরকার প্রতিবছর ১৬ জুলাইকে ‘জুলাই শহিদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। গত বছর গণ আন্দোলন চলাকালে রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের নিহত হওয়ার দিনটিকে এই দিবস ঘোষণা করা হয়। পরে গত মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে শোক পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়। ইনসাফ,ন্যায় বিচার, সামাজিক মুল্যবোধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, জুলাই পরবর্তীতে আমরা যারা রাজপথের ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে কাজ করেছিলাম তাদের কে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে শহিদদের আতœত্যাগকে সঠিক ভাবে মূল্যায়ন করে নিজেদের মধ্যে বজ্রকঠিন ঐক্যগড়ে তুলতে হবে। নিজেদের অনৈক্যের সুযোগে যেন পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পূর্ণবাসনের রাস্তা তৈরি হবে। কারণ পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের একাংশ পালিয়ে পাশের দেশে আশ্রয় নিয়েছে, সময় সুযোগ পেলেই তারা দেশে ফিরে আসতে পারে। দেশকে ফের অস্থিতিশীল করে তুলবে।
চুয়াডাঙ্গায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে আলোচনাসভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমির অ্যাড. রুহুল আমিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শামিম রেজা ডালিম, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম বলেন, যারা আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ফিলিংস, যারা আন্দোলনে অংশ নেয়নি তাদের ফিলিংস ভিন্ন হবে এটা স্বাভাবিক। যে সত্যকে যে ফিলিংসকে বুকে ধারন করে, এরকম মৃত্যু নিশ্চিত যেনেও যারা এ রাস্তায় বের হয়ে এ আন্দোলনকে এই পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলো সত্যিই তারা বীর বীরপুরুষ। এতে অস্বীকার করার উপায় নেই। তাদের এ স্বপ্নটা যাতে আমরা যারা এখনও সুস্থ আছি, ভালো আছি, বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছি। তাদের এই স্বপ্ন পূরণে যাতে আমরা কখনও কার্পন না করি এবং সেখানে যাতে আমরা বিপুল অনুপ্রেরণায় যাতে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অগ্রগামি হয়। আমি এ প্রত্যাশাই রাখি। সবাই শহিদদের জন্য দোয়া করবেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করবেন। তাদের স্বপ্ন সুন্দর বাংলাদেশ যেন প্রতিষ্টিত হয়।
জেলা জামায়াতের আমির অ্যাড. রুহুল আমিন বলেন, যেদেশে গুণীজনের কদর হয় না, সেদেশে আর গুণিজন তৈরি হবে না। যে দেশে আন্দোলনকারীর কদর হবে না, সেদেশে আন্দোলন আর ভবিষ্যতে হবে না। সুতরাং ভবিষ্যতের দারটা আমরা খুলে রাখতে চাই। আমরা সবাই সবাই জায়গার থেকে মর্জদা দিতে চাই, পেতে চাই। চুয়াডাঙ্গায় জুলাই শুরু হওয়ার আগে ২০১৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ফ্যাসিস্ট সরকারের পেটোয়া বাহিনীদারা দর্শনায় একটি ছাত্র শহীদ রফিকুল ইসলামকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছিলো। এখন আমরা দুইজনকে পেয়েছি চুয়াডাঙ্গা জেলায়। যারা ঢাকাতে শাহাদত বরণ করেছিলো। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী প্রত্যেকটি শহিদের পরিবারে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। ক্ষুদ্র প্রয়াস নিয়ে বাংলাদেশে যতগুলো শহিদ হয়েছে সবার পরিবারে ২ লাখ টাকা দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করেছিলো। যারা আহত হয়েছিলো তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
এছাড়াও আন্দোলনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা করে বক্তব্য দেন জুলাই যোদ্ধা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক আসলাম হোসেন অর্ক, সাবেক সদস্য সচিব সাফফাতুল ইসলাম, সিরাজুম মুনিরা, খুশবু, মাহফুজ হোসেন, সলিমিন হোসেন সোহাগ, শহিদ মাসুদ রানা মুকুলের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা, শহিদ শাহারিয়ার শুভর বাবা আবু সাইদ প্রমুখ। সিরাজুম মুনিরা বলেন, নারী শক্তির জাগরণে আমরা কিন্তু সেদিন একটি বড় মেয়েদের দল নিয়ে সম্মুখ সারিতে ফ্যাসিস্ট দোষদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমাদেরকে কোর্ট চত্বর থেকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে একটি মানবিক গুণাবলীর বিকাশ হওয়া উচিত। সেইদিন আমরা সেই সহমর্মি হাতগুলো পায়নি। যার কারণে আমরা মেয়েরা আন্দোলনরত অবস্থায় সন্ত্রাসী বাহিনীর ক্ষোভের মুখে পড়ে যায়। পরে তারা খুব বাজেভাবে মেয়েদের শরীরে আঘাত হানে। প্রথম আঘাত হানে খুশবুর ওপর। সবার কাছে মানবিক আবেদন, আপনারা যে যেখানে আছেন ভয়েসটা বেইস করবেন ন্যায়ের পক্ষে।
আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, “জুলাই শহিদ দিবস শুধু একটি শোক নয়, এটি হচ্ছে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং সাম্যের জন্য শহিদদের আত্মত্যাগ স্মরণ করার দিন। এই দিবস নতুন প্রজন্মকে দেশের জন্য আত্মত্যাগের মূল্য ও মানবিক রাষ্ট্র নির্মাণের অঙ্গীকার শেখায়।” এ সময় কনফারেন্স রুমে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
শহীদের পরিবারের সদস্যরা বলেন, আমার স্বামী টাকা পাওয়ার জন্য জীবন দেয়নি। দেশের উন্নয়নের জন্য শহিদ হয়েছে। তবে আমরা এক বছরেও এর মর্যাদা সম্মান পায়নি। কবরের নামফলক পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাইফুল্লাহ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার শাহাবুদ্দিন আহমেদ, জেলা মৎস্য অফিসার আবুল কালাম আজাদ, জেলা তথ্য অফিসার শিল্পী ম-ল, আমার বাংলাদেশ পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সভা শেষে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি মাওলানা রুহুল আমিন।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে জুলাই আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে সকল শহিদদের স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার ভি.জে স্কুল রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তৌফিক এলাহী। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাহাজান খান। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা ছাত্রদের সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবীব মামুন। জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ এর পরিচালনায় স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম, আশিপুল হক, হুমায়ূন কবির আকাশ,মীর শুভ জামান, সাহাবুদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন,সাইমুজ্জামান মিশা, রোকন জোয়ার্দ্দার,আশরাফুল আলম দোদুল, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী খান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক স্বাধীন শেখ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইমরান হোসেন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক সাইমুম আহমেদ শান্ত, সহ-প্রাচার সম্পাদক পারভেজ আহমেদ, সহ যোগাযোগ সম্পাদক নাজমুল হুসাইন, সদস্য রাহাত উল হক, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফয়সাল ইকবাল, আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল ইমরান রাসেল, দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব এম ডি কে সুলতান, দর্শনা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরাফাত হোসেন, দর্শনা থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন, দর্শনা কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব পলাশ আহমেদ, জীবননগর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিন্নুর রহমান, আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশিকুর রহমান ও দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান। স্মরণ সভায় ছাত্রদলের জেলা ও ইউনিটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেলা ছাত্রদলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মো. আবু সুফিয়ান।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় জুলাই শহিদ দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জুলাই শহিদ দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে উপজেলা পরিষদের হলরুমে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদী ইসলামের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশীষ কুমার বসু, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার এসএম মাহমুদুল হক, উপজেলা প্রকৌশলী তাওহীদ আহমেদ, পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) আজগার আলী। উপজেলা ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর জামাল হোসেনের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দিন, সরকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম আওয়াল, আইসিটি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন, সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নবাব আলী, উপজেলা জামায়াতের আমির প্রভাষক শফিউল আলম বকুল, সেক্রেটারি মামুন রেজা, জুলাই যোদ্ধা শহিদ সৈয়দ মাসুদ রানা, সহধর্মিনী সৈয়দা জান্নাতুল ফেরদৌস, জুলাই বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আরাফাত রহমান, মাহফুজ হোসেন, সহিফুজ্জামান, কামরুল হাসান কাজল, সলিহিন হোসেন সোহান, আমির হামজা প্রমুখ। আলোচনা শেষে জুলাই আন্দোলনের সকল শহিদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মাসুদ কামাল প্রমুখ।
অপরদিকে, আলমডাঙ্গায় শহিদ আবু সাঈদ দিবস উপলক্ষ্যে জুলাই বিপ্লবের সকল শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার আলমডাঙ্গা পৌর জান্নাতুল বাকী জামে মসজিদ এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে আলমডাঙ্গা বাংলাদেশ পার্টি(এবি পার্টি) আলমডাঙ্গার নেতাকর্মীদের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন আলমডাঙ্গা পৌর জান্নাতুল বাকী জামে মসজিদ এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের ঈমাম ও শিক্ষক মাওলানা ওমর ফারুক। আলোচনা সভায় আবু সাঈদ দিবসে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় নেতা রাকিব মাহমুদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আমার বাংলাদেশ (এবি পার্টি)’র নেতৃবৃন্দের মধ্যে মুসাব ইবনে শাফায়েত, আরিফুল ইসলাম তুহিন, শাহাদাত ইসলাম সাম্য, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় নেতা সাদী হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য সাবেক সদস্য সচিব আরাফাত রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুজ্জামান মেরাজ, পার্থিব হাসান, সাব্বির রহমান প্রমুখ।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জুলাই শহিদ দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে দামুড়হুদায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার তোফাজ্জেল হক, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপি সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির নায়েব আলী, দর্শনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সুমন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর হাসান অনিক, দামুড়হুদা উপজেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক সোহান। দামুড়হুদা উপজেলা সমবায় অফিসার হারুন অর রশিদের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আল সাবাহ, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নিলিমা আক্তার হ্যাপী, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কমকর্তা হোসনে জাহান ববি, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন, উপজেলা বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মন্টু মিয়া, উপজেলা জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী আবেদ উদ দৌলা টিটন, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মিরাজুল ইসলাম মিরাজ সহ সরকারি বিভিন্ন দফতর প্রধান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, দামুড়হুদা, দর্শনা থানা পুলিশের প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি প্রমুখ। দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দামুড়হুদা উপজেলা মডেল মসজিদের ইমাম মুফতি মামুনুর রশীদ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম নজরুল কবির, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল হক, জেলা তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা বিএনপির সদস্য আনসারুল হক ও রোমানা আহমেদ, জেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি কাজী রুহুল আমিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আশিক রাব্বি এবং এনসিপির সদস্য হাসনাদ দেওয়ান সৈকত প্রমুখ। পরে, জুলাই-আগস্ট মাসে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান।
এদিকে, মেহেরপুর জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম আকরামসহ সকল শহিদদের স্মরণে এক স্বরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে মেহেরপুর শহরে জেলা বিএনপির কার্যালয় এই স্বরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর জেলা ছাত্রদলের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিপ্লব। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জুয়েল রানা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর পৌর ছাত্রদলের সংগ্রামী সদস্য সচিব জারজীস ইউসুফ রমিক এবং সঞ্চালনায় ছিলেন মেহেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের বিপ্লবী আহ্বায়ক ফাহিম আহনাফ লিংকন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গাংনী পৌর ছাত্রদলের সংগ্রামী সদস্য সচিব শিশির আহম্মেদ শাকিল, গাংনী ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ রকি, বারাদী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজিজুল হক, বামুন্দী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রেজানুর রহমান রাজন, মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রিজভী আহম্মেদ শুভ এবং জেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ। সভায় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে ঝিনাইদহে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় শহিদ পরিবারের সদস্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল। সময় জেলা পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ, শহিদ রাকিবের বাবা লুৎফর রহমান, মা হাফেজা খাতুন, শহিদ সাব্বিরের বাবা আমোদ আলী, ছাত্র প্রতিনিধি সাইদুর রহমান, আবু হুরায়রাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্র নাথ রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাস, জেলা সিভির সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টী চন্দ্র রায়, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক তহুরা খাতুন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ, রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে জুলাই শহিদরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। দেশের গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছিলো জুলাই গণ-অভ্যুত্থান। জুলাই যোদ্ধারা জাতির নতুন অনুপ্রেরণা। তাদের আদর্শ অনুসরণ করেই একটি মানবিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। আলোচনা সভা শেষে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে স্মরণ সভা করেছে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদ ও শহিদ পরিবারের স্বীকৃতি, আহতদের পুনর্বাসন, জাতীয় ঐক্য ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজনদের স্বীকৃতির দাবিতে এ স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সমিনুজ্জামান সমিন স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মানিকের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এমএ মজিদ। স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান পাপ্পু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইমরান হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম মিলু, শাহরিয়ার রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান শাহেদ, মামুনুর রহমান মামুন, হৃদয় হোসেন, মেহেদী হাসান লাবিব প্রমুখ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More